
বিশ্ব শিক্ষক দিবস পৃথিবীর সমস্ত মানুষকেই কোন না কোন পর্যায়ে শিক্ষকের নিকট হতে শিক্ষা নিতে হয়। এটি প্রাতিষ্ঠানিক অপ্রাতিষ্ঠানিক দু ভাবেই হতে পারে সে হিসাবে সবাই শিক্ষক সবাই শিক্ষার্থী।
পৃথিবীর সকল উন্নত, অনুন্নত রাষ্ট্রেই শিক্ষাখাতকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব প্রদান করা হয়। এর কারণ বহুবিদ একটি কারণই যথেষ্ঠ হবে সেটি হলো আজকের শিক্ষার্থী আগামী দিনের একজন শিক্ষক, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, এমপি, মন্ত্রী,প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি ইত্যাদি হয়ে দেশের সেবা করবে। তাই শিক্ষার্থীদের সর্বোচ্চ নার্সিং নিশ্চিত করা হয় উন্নত রাষ্ট্রে।
তাদের শিখানো হয় বিজ্ঞান, মানবিকতা,নৈতিকতা ইত্যাদি। পূর্বের চাকুরী সূত্রে জাপান যাওয়ার সুযোগ হয়েছিল সে হিসাবে কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ভিজিট করেছিলাম এবং জানা, বুঝার চেষ্টা করেছিলাম তাদের শিক্ষা কাযক্রম ও শিক্ষা ব্যবস্থা পদ্ধতি কেমন। একজন কলিগকে; জিজ্ঞাসা করেছিলাম তুমি পিএইচডি করবে কবে? উত্তর ছিল এখানে সেটি দরকার নেই এমনকি মাস্ট্রার্সও সে করবে না বলে জানায়, যে কিনা লন্ডন মেট্রােপলিটন ইউনিভাসিটি হতে স্নাতক সম্পন্ন করেছে। গ্রাজুয়েশন ই সেখানে সর্বোচ্চ ধরা হয় চাকুরী ক্ষেত্রে। যারা গবেষণা করবে তাদের জন্য পিএইচডি এমফিল ইত্যাদি। শুধু শুধু সার্টিফিকেট অর্জন সেখানে বড় বিষয় মনে করা হয় না। জীবনমুখী শিক্ষা সেখানে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এখানে জানিয়ে রাখি জাপানে কোন প্রকার অপরাধ নেই, অপরাধ প্রবণতাও নেই। কেন নেই সেই প্রশ্নে উত্তর রয়েছে তাদের শিক্ষা ব্যবস্থার উপর।
তাদের বিদ্যালয়গুলি একেকটি রাষ্ট্রীয়, সমাজ, চরিত্র গঠনের মূল পাঠাগার হিসাবে গড়ে তুলা হয়েছে। গনিত, ভাষা, নৈতিকতা, মানবিকতা, সামাজিকতা, ন্যায়-অন্যায়, পরিচ্ছন্নতা ইত্যাদি শিক্ষা দেওয়া হয় নিবিরভাবে। একজন শিক্ষাথী প্রবেশ করেন তার জুতা বদলিয়ে ক্লাশরুমে ক্লাশে অংশ নেয়।
আরো জানা যায়, দিনের শুরুতে প্রধান শিক্ষক সবার আগে স্কুলে আসেন। তিনি স্কুল গেটে দাঁড়িয়ে সব ছাত্র-ছাত্রীকে অভ্যর্থনা জানান। শিক্ষার্থীরা স্কুলে ঢুকে বিভিন্ন কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেন। ক্লাস শুরু হওয়ার আগ পর্যন্ত কেউ খেলাধুলা, কেউ বিভিন্ন প্রোগ্রামিং কার্যক্রম, কেউ হ্যান্ড ক্রাফটে কাজ করে।বিদ্যালয় হতে দুপুরের খাবার সরবরাহ করা হয়।
মনোবিজ্ঞানী, দন্ত চিকিৎসক দিয়ে শিক্ষাথীদের দাঁত এর চিকিৎসা এবং মানসিক অবস্থা উন্নয়নে মনোবিজ্ঞানীরা অবদান রাখেন। একজন পুষ্ঠিবিদ পর্যাপ্ত ক্যালরি মান নিশ্চিত করেন।
এই ভাবেই গড়ে উঠা একজন শিক্ষাথী দেশের প্রতি, মানুষের প্রতি, নিজের কর্মের প্রতি পাংচুয়াল থাকবে, ডেডিকেটেড থাকবে এটাই স্বাভাবিক। তারা একেকটি প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম তৈরি করছে এভাবে বিপুল পরিমান অর্থ লগ্নি করে।
যা হোক বিশ্ব শিক্ষক দিবসে এসব নিয়ে আলোচনা গুরত্ব পাচ্ছে কেন! যারা এই প্রজন্ম তৈরিতে সবচেয়ে বেশি অবদান রাখছে সেই শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ, গবেষণা, ব্যবহারিক জ্ঞান, সাইকোলজিক্যাল মেধাবৃদ্ধি প্রভৃতি সম্পন্ন করে তাদের মর্যাদা সর্বোচ্চ এবং সেটি রাষ্ট্রীয়ভাবে সবার আগে নিশ্চিত করা হয়েছে।
শিক্ষা জাতীর মেরুদন্ড আমরা ছোট হতে শুনে আসছি তাহলে মেরুদন্ড গঠন করে দিবে কে নিশ্চয় শিক্ষক, কাকে দিবে রাষ্ট্রকে দিবে দিচ্ছে,তাহলে শিক্ষকের মেরুদন্ড শক্ত, কর্মক্ষম রাখতে হবে। একটি শিক্ষিত সরকার রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব থাকলে তবে এটির গুরুত্ব বোঝতে পারবে।
জাতীয়করণ করেই জাপান সহ উন্নত রাষ্ট্রের শিক্ষা ব্যবস্থার সকল ইতিবাচক দিক গ্রহণ করে সমন্বিত শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। বঙ্গবন্ধু সেই চিন্তা থেকেই জাতীয়করণ উদে্যাগ নিয়েছিলেন। তার অবশিষ্ট কিছু সমাপ্ত করেছেন তারই কন্যা শেখ হাসিনা ।। প্রধানমন্ত্রীর একটি কথা এখানে স্মরণ করতে চাই শিক্ষকদের দাবি দাওয়ার জন্য কোন প্রকার মিটিং মিছিল করতে হবে না, আমি সেটা দেখবো।স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদসহ সমগ্র শিক্ষক সমাজ দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে একটি মানবিক, নৈতিকতাবোধ সম্পন্ন, জ্ঞানী, বিজ্ঞান মনষ্ক প্রজন্ম তৈরিতে শিক্ষা ব্যবস্থায় জাতীয়করণসহ উন্নত বৈপ্লবিক পরবির্তনের পদক্ষেপ শেখ হাসিনার মাধ্যমেই সম্ভব।
শামীম তালুকদার,
শিক্ষক
-সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন

খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।