
শফিকুল ইসলাম: কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলায় গোখাদ্যের চরম সংকট দেখা দেওয়ায় একশ আঁটি খড়ের দাম দুই হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। এতে চরম বিপাকে পড়েছেন গরুর খামারিরা। প্রতিদিন একটি গরু ১২ থেকে ১৫টি খড়ের আঁটি খেয়ে থাকে। তাই প্রতিদিন একটি গরুর জন্য ৩’ শ টাকার মতো খরচ হয়। এতো বেশি দামে খড় কিনে খাওয়ানোর মতো সম্ভব নয়। খামারিদের লাভ তো দুরের কথা লোকসানের ঘানি টানতে হচ্ছে তাদের।
২০২০ সালের জুন ও জুলাই মাসের টানা ভারী বর্ষনের কারনে গরু, মহিষ চড়ানো ভ‚মি বিস্তীর্ন মাঠ দীর্ঘদিন জলমগ্ন হয়ে থাকে। দফায় দফায় ভয়াবহ বন্যায় রৌমারী উপজেলার প্রায় সব বাড়িতে পানি উঠায় এবং দীর্ঘদিন পানি থাকায় ও সংরক্ষিত ধানের খড় বন্যার পানিতে নষ্ট হওয়ায় এ সংকট দেখা দিয়েছে।
বন্যায় খতিগ্রস্ত এসব এলাকার গবাদী পশুকে মাঠে ঘাস খাওয়াতে না পেরে সংরক্ষিত থাকা কিছু খড় খাওয়ানো শেষে বিপাকে পড়েছেন এ উপজেলার সব কৃষক। শনিবার (৩ অক্টোবর) সকালের দিকে উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারে গিয়ে দেখা যায় খড়ের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে।
উপজেলার জন্তিরকান্দা গ্রামের আব্দুল বাতেন, চর গয়টাপাড়ার গ্রামের ইসলাম উদ্দিন, বাগুয়ারচর গ্রামের ফয়সাল মিয়া রৌমারী হাট বাজারে গরুর জন্য খড় কিনতে আসলে কথা হয় তাদের সাথে।
ফয়সাল মিয়া বলেন, আমি ৬-৭ টা গরু নিয়া বিপদে আছি। গরুরে খাওয়ানের জন্য অনেক খেড় শুখাইয়া রাখ ছিলাম। কিন্তু কয় দিন পরপর বানের পানি আইসা খেড়ের পালা তলাইয়া যায়। মেলা দিন ধইরা পানি থাকায় বেশির ভাগ খেড় পইচা গেছে। যে কয়ডা খেড় আছিল তার খাওয়াইয়া শেষ করছি অহন আরও একটা খেড়ও নাই। একটা ছাগল হাটে বেইচা সাড়ে তিন হাজার টাকা লইয়া বাজারে আইলাম ভাবছিলাম ৪’শ আডি খেড় কিনুম, অহন দেহি ২’শ আডি খেড় কিনতে চার হাজার টাকা লাগে। কি করুম আপাতত দেড়শ আডি খেড় কিনলাম।
চর গয়টাপাড়ার গ্রামের ইসলাম উদ্দিনের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, মাঠে গরু চড়ানোর মতো জাগা নাই সব ধান লাগাইয়াছে কোন হানে খালি জাগা নাই। গরু ঘর থাইকা বাইর করা যায়না কি করুম অহন। গরু হাটে নিয়া গেছিলাম দাম কয় খুব কম, বেছতে পারিনাই বাড়িতে ঘুড়াইয়া নিয়া গেছি।
খড় ব্যবসায়ী নজর আলী জানান, আমরা খড়ের আটি গুলো যাত্রাবাড়ি, দিনাজপুর ও রংপুরসহ বিভিন্ন জেলা থেকে চড়া দামে কিনে আনতে হয়। পরিবহন ও শ্রমিক খরচসহ সামান্য লাভে খড়ের আটি এলাকায় বিক্রি করছি।
উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. এটিএম হাবিবুর রহমান এর সাথে কথা বললে তিনি বলেন উপজেলায় কয়েক দফায় ভয়াবহ বন্যায় কৃষকের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়েছে। পানি কমে গিয়েছিল। কিন্তু আবারও ভারি বর্ষনের কারনে উপজেলার সকল নদ নদী গুলো ভরে গেছে এখনো বেশিরভাগ নিম্নাঞ্চলে পানি রয়েছে। যে কারনে গোখাদ্যের সংকট দেখা দিয়েছে।
-সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন

খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।