শিব্বির আহমেদ রানা, বাঁশখালি প্রতিনিধি: সাধারণ জনগনের মতো স্বাভাবিক জীবনে ফেরার প্রত্যয়ে সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্য খ্যাত বাঁশখালী, মহেশখালী, কুতুবদিয়া সহ বৃহত্তর চট্টগ্রামের জলদস্যু ও অস্ত্র কারিগরদের ৩৪ জন অস্ত্রসহ আত্মসমর্পণ করেছেন।
আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বাঁশখালী উপজেলার বাঁশখালী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিকভাবে ১১ বাহিনীর ৩৪ জন আত্মসমর্পণ করেন। এসময় তারা দেশী-বিদেশীয় ৯০টি অস্ত্র সহ ২হাজার ৫৬ রাউন্ড গুলি/কার্তুজ জমা দেন।
আত্মসমর্পণ ও পুনঃবাসন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মো. আসাদুজ্জামান খান কামাল।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি, সংসদ সদস্য শামসুল হক টুকু, চট্টগ্রাম-১৬ বাঁশখালীর সাংসদ আলহাজ্ব মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী এম'পি, সংসদ সদস্য মু. মোসলেম উদ্দিন, কক্সবাজার-২ আসনের সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ্ রফিক, সংসদ সদস্য মু. জাফর আলম, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দিন, বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক ড. বেনজীর আহমেদ। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন পিএসসি ও র্যাব-৭ এর অধিনায়ক লে. কর্ণেল মু. মশিউর রহমান জুয়েল।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিক বিল্লাহ জানান, বঙ্গোপসাগর ভিত্তিক জলদস্যুতা দমন এবং দুর্ধর্ষ জলদস্যুদের আত্মসমর্পণ করাতে দীর্ঘদিন ধরে মাঠে কাজ করে যাচ্ছিল র্যাব। এরই ধারাবাহিকতায় আজ ৩৪ জলদস্যু অস্ত্রসহ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে আত্মসমর্পণ করেন। এ সময় তারা দস্যুতা ছেড়ে স্বাভাবিক জীবন যাপনের প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। অনুষ্ঠানে আত্মসমর্পণকারীদের স্বজন ও পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে এসময় জলদস্যুরা দেশী-বিদেশীয় ৯০টি অস্ত্র সহ ২হাজার ৫৬ রাউন্ড গুলি/কার্তুজ প্রদান করেন। অনুষ্ঠানে বাইশ্যা ডাকাত বাহিনীর ৩জন, খলিল বাহীনির ২জন, রমিজ বাহিনীর ১ জন, বাদশা বাহিনীর ৩ জন, জিয়া বাহিনীর ২জন, কালাবদা বাহিনীর ৪জন, ফুতুক বাহীনীর ৩জন, বাদল বাহিনীর ১জন, দিদার বাহিনীর ১ জন, কাদের বাহিনীর ১ জন, নাছির বাহিনীর ৩জন, অন্যন্য ১০ জন সহ ৩৪ জন আত্মসমর্পন করেন।
আত্মসমর্পণকারী জলদস্যুরা হলেন- মহেশখালীর বাইশ্যা বাহিনী ও ফুতুক বাহিনীর মো. আব্দুল হাকিম ওরফে বাইশ্যা ডাকাত (৫২), মো. আহামদ উল্লাহ (৪২), মো. আব্দুল গফুর ওরফে গফুর (৪৭), মো. দিদারুল ইসলাম ওরফে পুতিক্যা (৩২), মো. জসিম উদ্দিন (২৬), মো. মিজানুর রহমান (২৩), মো. আবু বক্কর সিদ্দিক ওরফে বাইশ্যা (২৯), মো. বেলাল মিয়া (৩০), মো. আব্দুল হাকিম ওরফে বাক্কু (৩৫), মো. রশিদ মিয়া (৩৬)।
কুতুবদিয়ার খলিল বাহিনীর সদস্য, আব্দুর রহিম (৬৪), মো. মাহমুদ আলী ওরফে ভেট্টা, মো. ওবায়দুল্লাহ (৩৬), মো. ইসমাইল (২৪), সাহাবুদ্দিন ওরফে টুন্নু (৩২), এবং বাঁশখালীর রমিজ বাহিনীর মো. ইউনুস (৫৬), মো. তৌহিদ ইসলাম (৩৪), মো. ফেরদৌস (৫২), মো. রেজাউল করিম (৪০)।
এ ছাড়া পেকুয়ার বাদশা বাহিনীর মো. নিজাম উদ্দিন ভাণ্ডারী, মো. ইউনুস (৫১), মো. কামাল উদ্দিন (৪৭), মো. আব্দু শুক্কুর (২৮), মো. ইউনুচ (৪২), জিয়া বাহিনী ও নাছির বাহিনীর সাহাদাত হোসেন (দোয়েল) (৪১), মো. পারভেজ (৩৩), মো. নাছির (৫১), আমির হোসেন (৪৮), মো. সাকের (৪০)।
এ ছাড়া আত্মসমর্পণ করেছেন চকরিয়ার কালাবদা বাহিনীর মো. সেলিম বাদশা (৩৪), মো. আব্দুল গফুর ওরফে গফুর, মো. আবু বক্কর সিদ্দিক (৩১), মো. মামুন মিয়া (২৭) ও মো. মন্জুর আলম (৪২)।
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।