লিয়াকত হোসাইন লায়ন,জামালপুর প্রতিনিধি: জামালপুরের ইসলামপুর ইটভাটার কালো ধোঁয়া,মাটি ও বালুর গাড়ী চলাচলে ধুলোবালিতে জন জীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। অন্যদিকে ইট তৈরিতে ফসলি জমির উপরিভাগের মাটি কেঁটে নেওয়ায় জমিগুলো ক্ষতির মুখে পড়ছে।
অভিযোগে জানাগেছে,উপজেলার গঙ্গাপাড়া গ্রামে জনবসতিতে মিলি ব্রিকস, পাথর্শী ইউনিয়নের মোজাআটা,মুকশিমলা,বানিয়াবাড়ী, রৌহারকান্দা গ্রামের ফসলী ধানী জমিতে,পৌরসভা ভবন সংলগ্ন গুরুস্থান মোড়ে ব্রিকস ,দক্ষিন দরিয়াবাদ গ্রাম সংলগ্ন হাতিজা গ্রাম ও দক্ষিন দরিয়াবাদ বুরুঙ্গীবীল এলাকায় ইটভাটায় দীর্ঘদিন ধরে পাকা চিমনি নির্মান করে ইট উৎপাদন করছে।
ইট উৎপাদনে ফসলি জমির মাটির উপরিভাগ কেঁটে নেওয়া অব্যহত থাকলে জমিগুলো বন্ধা জমিতে পরিনত হওয়া সহ বর্ষা মৌসুমে পানি প্রবাহিত হওয়ার পাশাপাশি কৃত্রিম জলাবদ্ধতায় পরিনত হবে। এই জমিগুলো চলতি রবি মৌসুমে সরিষা চাষ না করায় তা পরিত্যাক্ত অবস্থায় পরে রয়েছে। সেই সাথে ভাটাগুলো গাছ ও কাঠ পুড়িয়ে পরিবেশের ক্ষতি সাধন করলেও সংশ্লিষ্ট বিভাগ নীরব রয়েছে।
প্রজাতন্ত আইন ১৯৫০ এর অধীনে ১৯৯০সনের ইস্যুকৃত সার্কুলারে বলা আছে,কৃষি জমিতে ইটভাটা স্থাপন করা যাবেনা। সেই সাথে জন বসতির তিন কিলোমিটার মধ্যে ইটভাটা স্থাপন করা সুস্পষ্ট নির্দেশ রয়েছে। এ ছাড়াও আবাসিক, সংরক্ষিত বা বাণিজ্যেক এলাকা; সিটি কর্পোরেশন,পৌরসভা বা উপজেলা সদর, সরকারি বা ব্যক্তি মালিকানাধীন বন, অভয়ারণ্য,বাগান বা জলাভূমি;কৃষি জমি; প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা, ডিগ্রেডেড এয়ার শেড, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর কর্তৃক নির্মিত উপজেলা বা ইউনিয়ন বা গ্রামীণ সড়ক হইতে কমপক্ষে ১/২ (অর্ধ) কিলোমিটার দূরত্বের মধ্যেকোন ব্যক্তি কোন ইটভাটা স্থাপন করিতে পারিবেন না। কিন্তু উপজেলার ইটভাটা গুলোর অধিকাংশ মালিক এই আইন অমান্য করে ভাটা স্থাপন করেছে।
ইটভাটা নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৩-এর নীতিমালা লঙ্ঘন করে ইট ভাটাগুলো নির্মান করায় একদিকে যেমন আবাদি জমির পরিমান কমে যাচ্ছে, তেমনি কাঠ পোড়ানো ও চিমনি ব্যবহারের ফলে এলাকার পরিবেশ প্রতিবেশীদের উপর বীরূপ প্রভাব পড়ছে। ইটভাটা নির্মানের ফলে ফসলি জমিগুলো নষ্ট হচ্ছে। ইটভাটার কালো ধোঁয়ায় পরিবেশ দুষনসহ আশপাশের বনজ ও ফলজ গাছ উজার হচ্ছে। দিনদিন ফসলি জমির মাটিঁ কাঁটার এই প্রবনতা বেড়েই চলেছে। ফলে পরিবেশ বিপর্যয়ের পাশাপাশি ফসলি জমির উর্বরা শক্তিও আশঙ্কা জনক ভাবে হ্রাস পাচ্ছে। এ ছাড়াও ফসলি জমির উপরিস্তর কেটে নেওয়ার ফলে ফসলের প্রধান খাদ্য নাইট্রোজেন,পটাশ,জিংক,সালফার ক্যালসিয়াম সহ অর্গানিক বা জৈব উৎপাদনের জন্য অপূরনীয় ক্ষতি হচ্ছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ,ভাটার কালোধোয়া ও ভাটার গাড়ী গুলো প্রতিনিয়ত মাটি ও বালু নিয়ে চলাচলে সড়কগুলোতে চলাচলে অনুপযোগী সহ দূর্ঘটনার আতঙ্কে চলাচল করতে হচ্ছে। খোলামেলা ভাবে মাটি ও বালির গাড়ীগুলো যাতায়াতে ধুলো বালুর বীরূপ প্রভাবে মানুষের বিভিন্ন রোগব্যাধী সহ অনেকের চোখের সমস্যা দেখা দিয়েছে। ফসলি জমির মাঠে ইটভাটার ফলে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়। ইটভাটার বীরুপ প্রভাবে ধানক্ষতে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ এম আবু তাহের জানান, খোলামেলা ভাবে মাটি ও বালুর গাড়ি চলাচলে ধুলোবালিতে মানুষের ডায়রিয়া,শ্বাসকষ্ট,এলার্জি সহ দিনদিন নানান রোগব্যাধি বৃদ্ধি পাবে।
ইটভাটার কালোধুয়া পরিবেশ ও ফসলের ব্যপক ক্ষতি ও ভাটার গাড়ী চলাচলের ফলে ধুলাবালী সহ দূর্ঘটনার আতঙ্ক সমস্যা সমাধানে সচেতন মহল প্রশাসনকে দ্রæত ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানিয়েছেন।
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।