বকশীগঞ্জ প্রতিনিধি : স্বাধীনতার ৪৯ বছরেও মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পাননি জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলার মীর জামাল বকশী। মুক্তিযুদ্ধের সময় দুই বার মর্টার শেলের আঘাত পেয়েও কোন রকমে বেঁচে যাওয়া মীর জামাল বকশী আজও মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পান নি। তবে আশায় বুক বেঁধে আছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা তার কর্মকান্ডের স্বীকৃতি সরূপ তাকে মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি প্রদান করবেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ভাষণের পর বকশীগঞ্জ সদর ইউনিয়নের (বর্তমানে পৌরএলাকা) চরকাউরিয়া সীমারপাড় এলাকার কালু বকশীর ছেলে জালাল উদ্দিন মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। জালাল উদ্দিনের সাথে তার বাবার পালিত পুত্র আজিজুল হকও মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। মহান মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহাসিক ১১ নম্বর সেক্টর ধানুুয়া কামালপুরের অধীনে যুদ্ধে অংশ নেন তারা। স্বাধীনতার টানে দেশকে শত্রæ মুক্ত করতে প্রাণ বাজি রেখে যখন যুদ্ধ করছিলেন তখন খবর পেয়ে পাক হানাদার বাহিনীর সদস্যরা জালাল উদ্দিনের বাড়ি ঘরে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয় ।
জালাল উদ্দিনের ছোটভাই মীর জামাল বকশী ১৯৭১ সালের ঘটনার স্মৃতিচারণ করে জানান, আমাদের বাড়ি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়ার পর প্রাণে বেঁচে গিয়ে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের মহেন্দ্রগঞ্জ ও অন্যান্য এলাকায় আশ্রয়ন গ্রহণ করি। সেখানে আমার বড় ভাই মুক্তিযোদ্ধা জালাল উদ্দিনের সাথে পরামর্শ করে মুক্তিযোদ্ধাদের সার্বিক সহযোগিতা করতে থাকি। নিজের জীবন বাজি রেখে মুক্তিযোদ্ধা শিবির গুলোতে খাদ্য পৌঁছে দেওয়া, পাক বাহিনীর অবস্থান ও তাদের কর্মকান্ড সম্পর্কে গোপনে মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে খবর পৌঁছে দিয়েছি।
পাক বাহিনীর সদস্যরা মীর জামাল বকশীর গুপ্তচর বৃত্তির খবর জেনে পাক সেনারা দূর থেকে তার উপর মর্টার শেল নিক্ষেপ করেন। প্রথম বার কিছু না হলেও দ্বিতীয়বার মর্টার শেলের আঘাতে আহত হন এবং শ্রবণ শক্তি হারিয়ে ফেলেন।
মীর জামাল বকশী আরো জানান তার দেওয়া তথ্যে অসংখ্যবার পাকিস্তানি বাহিনীর উপর অপারেশন চালান যুদ্ধে অংশ নেওয়া মুক্তিযোদ্ধারা।
দেশ প্রেমিক এই অকুতোভয় সৈনিক মীর জামাল বকশী মুক্তিযুদ্ধের সময় জীবন বাজি রেখে মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতা করলেও স্বাধীনতার ৪৯ বছরেও তিনি মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পান নি।
জানতে চাইলে বকশীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সাইদুর রহমান লাল বলেন, আমার বাবাও একজন মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। আমি আমার পরিবারের কাছে শুনেছি মীর জামাল বকশী মুক্তিযুদ্ধের সময় কিশোর যোদ্ধা হিসেবে মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতা করেছেন। তাদের ঘর বাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়ার পরও তিনি মুক্তিযোদ্ধার স্বীকতি না পাওয়া খুবই দুঃখজনক।
মীর জামাল বকশী ও তার পরিবারের দাবি মৃত্যুর আগে হলেও যেন সরকার তাকে মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি প্রদান করেন। তাহলেই তিনি মরেও শান্তি পাবেন। এ ব্যাপারে তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা , মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।


খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।