রফিকুল আলম,ধুনট (বগুড়া): চরম অব্যবস্থাপনা ও অনিয়মের মধ্য দিয়ে চলছে বগুড়ার ধুনট উপজেলার ভান্ডারবাড়ি ইউনিয়ন উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের চিকিৎসাসেবা কার্যক্রম। এই উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রে দায়িত্বপ্রাপ্ত সেবাদানকারীরা উপস্থিতির কোন নিয়ম মানছেন না। এখানকার সেবাদানকারীদের বিরুদ্ধে পালা করে দায়িত্ব পালনের অভিযোগও রয়েছে। এতে কাঙ্খিত চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন ভাঙন জনপদের বাস্তুহারা পরিবারের মানুষ।
স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এ উপজেলার যমুনা নদীর ভাঙন জনপদে অবস্থিত ভান্ডারবাড়ি ইউনিয়ন উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রেটি। এখানে চিকিৎসাসেবা নিতে আসা বেশীর ভাগ মানুষ যমুনা নদীর ভাঙনে নিঃস্ব বাস্তুহারা ও চরের অবহেলীত পরিবারের। এই স্বাস্থ্য কেন্দ্রে প্রতি কর্মদিবসে একজন মেডিকেল অফিসার, একজন উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার, একজন ফার্মাসিষ্ট ও একজন অফিস সহায়ক (এমএলএসএস) দায়িত্ব পালন করার কথা।
কিন্ত দীর্ঘদিন ধরে এই স্বাস্থ্য কেন্দ্রে প্রত্যেক কার্যদিবসে পালাক্রমে একজন করে দায়িত্ব পালন করেন। স্বাস্থ্য কেন্দ্রে সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত খোলা রেখে রোগীদের সেবা দেয়ার কথা। কিন্তু বাস্তব চিত্র তার ঠিক উল্টো। বিকেল ৩টার পরিবর্তে অফিস বন্ধ হয়ে যায় বেলা ১২টায়। আবার সকাল ৯টায় অফিস না খুলে খোলা হয়ে থাকে ১০-১১টায়। এমন চিত্র প্রতিদিনের।
মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে সরেজমিন ভান্ডারভাড়ি ইউনিয়ন উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, নজরুল ইসলাম নামে এক ফার্মাসিষ্ট একাই রোগী দেখা, ঔষধ বিতরণ সহ সব কাজ করছেন। তাকে সহযোগীতা করছেন স্বাস্থ্য কেন্দ্রের জন্য ভাড়া করে রাখা জরিনা খাতুন নামে এক আয়া। ওই দিন দুপুর ১২টা পর্যন্ত মেডিকেল অফিসার, উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার ও অফিস সহায়ক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে উপস্থিত হননি।
স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুর রাজ্জাক, রফিকুল ইসলাম, জাহাঙ্গীর আলম, দুলাল মিয়া, তাহেরা খাতুন, লাভলী খাতুন ও সাহেরা খাতুন সহ অনেকে অভিযোগ করে বলেন, এখানকার দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা দীর্ঘদিন ধরে পালা করে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া সময় মত অফিসে আসেন না। অফিসে আসলেও হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর দিয়ে চলে যান। ফলে ভাঙন জনপদের বাস্তুহারা মানুষেরা চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
ভান্ডারবাড়ি উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রে উপস্থিত ফার্মাসিষ্ট নজরুল ইসলাম বলেন, আগে কিছু দিন পালা করে দায়িত্ব পালন করা হয়েছে। এখন সবাই নিয়মিত ভাবেই দায়িত্ব পালন করি। তবে মঙ্গলবার অন্যরা কেন অফিসে আসেননি তা জানা নেই।
উপজেলার ভান্ডারবাড়ি উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের চিকিৎসক জাহাঙ্গীর আলম মুঠোফোনে জানান, সপ্তাহে তিন দিন এই স্বাস্থ্য কেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করেন। সেই অনুযায়ী মঙ্গলবার তার ছুটি। তবে তিনি সোমবারে দায়িত্ব পালনের কথা দাবি করলেও হাজিরা খাতায় তার স্বাক্ষর নেই।
ধুনট উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ হাসানুল হছিব বলেন, ওই স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি উপজেলা সদর থেকে অনেক দুরে অবস্থিত। তাই সব সময় খোঁজখবর নেওয়া সম্ভব হয়না। তবে দায়িত্ব পালনে অনিয়মের প্রমান পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।