সব আয় নিয়ে যেতে পারবেন বিদেশীরা: নির্দেশনা বাংলাদেশ ব্যাংকের
🕧Published on:
সেবা ডেস্ক: দেশে কর্ম’রত সব বিদেশী নাগরিক নিজ দেশে অর্থ পাঠাতে নীতিমালা শিথিল করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এখন থেকে শর্তসাপেক্ষে শতভাগ নিট আয় দেশে নিতে পা’রবেন।
তবে কোনো প্রশ্ন ছাড়াই আয়ে’র ৮০ শতাংশ নিতে পা’রবেন বছরে’র যে কোনো সময়ে। আ’র বাকি ২০ শতাংশ আয় করে’র প্রত্যয়ন নিয়ে বছরে একবা’র দেশে পাঠানো যাবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে গতকাল সোমবা’র এমনই নির্দেশনা দেয়া হয়েছে ব্যাংক নির্বাহীদে’র।
বাংলাদেশ
ব্যাংকে’র সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, মুদ্রাপাচা’র প্রতিরোধ ও বৈদেশিক মুদ্রা’র
মজুদ সুসংহত রাখতে আগে দেশ থেকে
বৈদেশিক মুদ্রা সহজেই পাঠাতে পা’রতেন না বিদেশী নাগরিকরা।
বাধ্যতামূলকভাবে তাদে’র আয়ে’র একটি অংশ ব্যয়
ক’রতে হতো। একই সাথে
বিদেশী প্রতিষ্ঠানগুলো’র অর্জিত মুনাফা দেশে পাঠানো’র ক্ষেত্রেও
কড়াকড়ি ছিল। কেন্দ্রীয় ব্যাংক
কর্তৃক যাচাই-বাছাই করে অর্থ পাঠাতে
অনুমোদন দেয়া হতো। কিন্তু
গত বছ’র দেড়েক ধরে
বৈদেশিক মুদ্রা’র লেনদেন সহজ ও বিনিয়োগ
বাড়ানো’র নামে বৈদেশিক মুদ্রা
নীতিমালা সহজ করা হচ্ছে।
সবশেষ
গতকাল বিভিন্ন দূতাবাস, কোম্পানিতে কর্ম’রত বিদেশী নাগরিকদে’র অর্জিত আয় দেশে পাঠানো’র
নীতিমালা শিথিল করা হলো। আগে
বিদেশী নাগরিকরা তাদে’র অর্জিত বেতন ভাতা’র ৭৫
শতাংশ দেশে পাঠাতে পা’রতেন।
বাকি ২৫ শতাংশ পাঠানো’র
ক্ষেত্রে কড়াকড়ি ছিল। বলা ছিল
কোনো বিদেশী নাগরিক একবারে নিজ দেশে ফিরে
গেলে সেই ক্ষেত্রে তাদে’র
অর্জিত আয় দেশে নিতে
পা’রবেন। কিন্তু গতকাল তা শিথিল করে
বছরে’র যে কোনো সময়
নিট বেতন ভাতা’র ৮০
শতাংশ নিজ দেশে পাঠানো’র
অনুমোদন দেয়া হয়েছে। একই
সাথে আয়ক’র রিটার্নে’র প্রত্যয়নপত্র নিয়ে বছরে একবা’র
বাকি ২০ শতাংশ আয়ও
দেশে পাঠাতে পা’রবেন।
সংশ্লিষ্ট
সূত্র জানিয়েছে, যেকোনো নাগরিকে’র জীবন যাপনে অর্থ
ব্যয় হয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকে’র
নীতিমালা শিথিলে’র কা’রণে ঘোষণাকৃত বেতনে’র পুরো আয় দেশে
পাঠালে তারা জীপন-যাপনে’র
অর্থ কিভাবে সংস্থান ক’রবে সে প্রশ্ন থেকে
যায়।
সংশ্লিষ্ট
সূত্র জানিয়েছে, তাহলে তারা কি ক’র
ফাঁকি দেয়া’র জন্য নিট আয়
কম দেখায়- এ প্রশ্ন স্বাভাবিকভাবেই
ওঠে।
এ’র
আগে বৈদেশিক মুদ্রা নীতিমালা শিথিল করে বিদেশী মালিকানাধীন
কোম্পানিগুলো কেন্দ্রীয় ব্যাংকে’র অনুমোদন ছাড়াই দেশীয় ব্যাংক থেকে স্থানীয় মুদ্রায়
ঋণ নেয়া’র অনুমোদন দেয়া হয়। বিদেশী
মালিকানাধীন কোনো কোম্পানি স্থানীয়
ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে
আগে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে’র অনুমোদন নিতে হতো। এ’র
কা’রণ হিসেবে, দেশে কার্যত বিদেশী
কোম্পানিগুলো স্থানীয় মুদ্রায় ঋণ নিয়ে মুনাফা
করে আবা’র বৈদেশিক মুদ্রায় মুনাফা বিদেশে নিয়ে যায়। অথচ
অনুমোদন না দিলে বিদেশী
মুদ্রায় মূলধন এনে থাকে কোম্পানিগুলো।
এতে বৈদেশিক মুদ্রা’র প্রবাহ বেড়ে যেতো।
অপ’র
দিকে স্থানীয় মুদ্রায় ঋণ নিলে ওই
কোম্পানি দেউলিয়া হয়ে গেলে ওই
কোম্পানি’র বিপরীতে বৈদেশিক মুদ্রা’র দায় সৃষ্টি হয়।
এতে দেশে বৈদেশিক মুদ্রা’র
রিজার্ভে’র ওপ’র চাপ সৃষ্টি
হয়। অর্থাৎ উভয় দিক থেকে
দেশ ক্ষতি’র সম্মুখীন হয়। এ কা’রণে
কোনো বিদেশী মালিকানাধীন কোম্পানি স্থানীয় মুদ্রায় ঋণ নেয়া’র আগে
কেন্দ্রীয় ব্যাংকে’র অনুমোদন নিতে হতো। কেন্দ্রীয়
ব্যাংক অনুমোদন দেয়া’র আগে তা যাচাই-বাছাই ক’রত। কোনো কোম্পানি’র সার্বিক
অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো না হলে
সংশ্লিষ্ট কোম্পানি’র অনুমোদন দেয়া হতো না।
কিন্তু নীতিমালা শিথিল করায় তা’র আ’র
প্রয়োজন হচ্ছে না। গত বছরে’র
২১ জুলাই এই নীতি শিথিল
করে বাংলাদেশ ব্যাংক। বলা হয়, কেন্দ্রীয়
ব্যাংকে’র অনুমোদন ছাড়াই কোম্পানিগুলো তাদে’র ইচ্ছেমাফিক স্থানীয় মুদ্রায় ঋণ নিতে পা’রবে।
এক্ষেত্রে শুধু তাদে’র প্রধান
কোম্পানি’র লেনদেনকৃত ব্যাংকে’র গ্যারান্টি আনতে হবে। ওই
গ্যারান্টিপত্র জামানত হিসেবে রেখে স্থানীয় যে
কোনো ব্যাংক সংশ্লিষ্ট কোম্পানিকে ঋণ দিতে পা’রবে।
আগে বিদেশী কোম্পানিগুলো তাদে’র অর্জিত মুনাফা দেশে পাঠানো’র আগে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে’র অনুমোদনে’র প্রয়োজন হতো। মুনাফা দেশে নেয়া’র আগে কেন্দ্রীয় ব্যাংক যাচাই-বাছাই ক’রতো। কেউ ভুয়া মুনাফা’র ভিত্তিতে লভ্যাংশ যাতে নিজ দেশে নিতে না পারে সে জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক তদা’রকি ক’রতো। কিন্তু এক পর্যায়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ নীতিমালা শিথিল করে দেয়। তখন বলা হয়, কেন্দ্রীয় ব্যাংকে’র অনুমোদন ছাড়াই মুনাফা দেশে নিতে পা’রবে। তবে তা’র প্রতিবেদন বাংলাদেশ ব্যাংকে দাখিল ক’রতে হবে। এক্ষেত্রে কোনো কোম্পানি ভুয়া মুনাফা’র ভিত্তিতে ডিভিডেন্ড দেশে নিয়ে গেলে তা যাচাই-বাছাই করা হতো। যাচাই বাছাইয়ে এমন অভিযোগ প্রমাণিত হলে মুনাফা বিদেশ থেকে ফিরিয়ে আনতে হতো। না হয়, পরে’র বছরে’র মুনাফা’র সাথে তা সমন্বয় করা হতো। এ যাচাই-বাছাইয়ে’র ক্ষমতাও এ’র আগে হারায় বাংলাদেশ ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংকে’র এক নির্দেশে বলা হয়, এখন কোনো বিদেশী কোম্পানি মুনাফা নেয়া’র প’র আ’র তা যাচাই-বাছাই করা হবে না। এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে পৃথক দু’টি সার্কুলা’র জারি করা হয়।
0comments
মন্তব্য করুন
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।