সেবা ডেস্ক: জিয়াউ’র ‘রহমানে’র আমলে (১৯৭৫-৮১) দেশে ২৬টি’র মতো সামরিক অভু্যত্থান ঘটেছিল বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী’র তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়।
মঙ্গলবা’র
রাতে নিজে’র ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক
স্ট্যাটাসে তিনি বলেন, এ’র
মধ্যে সবচেয়ে বড় ঘটনাটি ঘটেছিল
১৯৭৭ সালে’র ২ অক্টোব’র। এই
অভু্যত্থানটি সম্পর্কে সবচেয়ে বেশি তথ্য জানা
যায়। বাকিগুলো ধোঁয়াশা’র আড়ালে।
তা’র
দেওয়া সেই ফেসবুক পোস্টটি
নিচে হুবহু তুলে ধরা হলো-জিয়াউ’র ‘রহমানে’র আমলে (১৯৭৫-৮১) দেশে
২৬টি’র মতো সামরিক অভু্যত্থান
ঘটেছিল বলে বিভিন্ন ভাষ্যে
জানা যায়। কেউ কেউ
বলেন সংখ্যাটি ২১।
এ’র
মধ্যে সবচেয়ে বড় ঘটনাটি ঘটেছিল
১৯৭৭ সালে’র ২ অক্টোব’র। এই
অভু্যত্থানটি সম্পর্কে সবচেয়ে বেশি তথ্য জানা
যায়। বাকিগুলো ধোঁয়াশা’র আড়ালে।
১৯৭৭
সালে’র অক্টোবরে’র অভু্যত্থানে ঘটনাস্থলেই নিহত হয়েছিলেন শতাধিক
সেনা অফিসা’র। অনেকে নিহত হয়েছিলেন অভু্যত্থান
দমাতে গিয়ে। আবা’র বিচারে’র নামে মেরে ফেলা
হয় কয়েক শ সেনাকে।
সব মিলিয়ে
মোট
সংখ্যাটি আড়াই হাজারে’র মতো
হতে পারে।
তাদে’র
মধ্যে ১ হাজা’র ৩০০
জনে’র বেশি সেনাকে ফাঁসি
ও ফায়ারিং স্কোয়াডে’র মাধ্যমে হত্যা করা হয়। বাকিদে’র
মৃতু্য’র কোনো দালিলিক প্রমাণ
নেই। সেই সময় থেকে
আজও তারা পরিবারে’র কাছে
নিখোঁজ।
জিয়াউ’র
‘রহমানে’র আমলে সামরিক বাহিনীতে
অভু্যত্থানচেষ্টা’র ঘটনা ও মৃতে’র
সংখ্যা মেলানো খুবই কঠিন। এ
নিয়ে খুব বেশি গবেষণা
হয়নি।
প্রায়
৪৫ বছরে’র মাথায় এসে গত ১৬
সেপ্টেম্ব’র জাতীয় সংসদে’র চতুর্দশ অধিবেশনে’র সমাপনী ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জিয়া’র
আমলে নিহতদে’র তালিকা করা’র নির্দেশ দেন।
তবে
প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, এ
‘রকম একটি পূর্ণাঙ্গ তালিকা
তৈরি করা কতটা কঠিন?
এটি আদৌ কি সম্ভব?
সেই
সময়ে’র বেশি’র ভাগ প্রত্যক্ষদর্শী জীবিত
নেই। আবা’র অনেক দালিলিক প্রমাণ
নষ্ট করা’রও অভিযোগ আছে। এ বিষয়ে
গবেষণা প্রায় হয়নি বললেই চলে।
পুড়িয়ে
ফেলা হয়েছে নথি
এ বিষয়ে দীর্ঘ অনুসন্ধান করেছেন সাংবাদিক ও গবেষক জায়েদুল
আহসান পিন্টু। তিনি বলেন, এটা
খুব কঠিন কাজ। তবে
অসম্ভব নয়। হয়তো এখনো
ব্যক্তিগতভাবে কিছু দালিলিক প্রমাণ
পাওয়া যাবে। কিছু ঘটনা’র সাক্ষী
ও স্বজন এখনো বেঁচে আছেন।
দ্রম্নত কাজ শুরু ক’রলে
হয়তো এখনো সত্যে’র খুব
কাছাকাছি যাওয়া সম্ভব। তবে দেরি ক’রলে
বা আ’রও ১০ বছ’র
প’র ক’রলে কিছুই মিলবে না।
জায়েদুল
আহসান বলেন, কাজ ক’রতে গিয়ে
দেখেছি, ওই ৫ বছরে
কমপক্ষে ১৯টি অভু্যত্থানে’র ঘটনা
ঘটেছিল। তবে নিহতে’র সংখ্যা
কা’রও কাছে এককভাবে নেই।
হয়তো বিচ্ছিন্নভাবে আছে।
জায়েদুল
আহসান বলেন, যত দ্রম্নত সম্ভব
একটি তথ্যানুসন্ধানী কমিশন গঠন করা দ’রকা’র।
যে কমিশন ওই সময়কালে’র হত্যা,
হত্যাকান্ড, নির্বিচা’র হত্যা, বিনা বিচারে হত্যা
এবং বিচারে’র নামে প্রহসনে’র ট্রাইবু্যনালে
হত্যা বা ফাঁসি- এসব
কিছু’র তথ্য সংগ্রহ ক’রবে।
তথ্য সংগ্রহে’র উপায় হলো দলিল-দস্তাবেজ বা মৌখিক সাক্ষ্য
গ্রহণ।
তিনি
বলেন, দলিল-দস্তাবেজ দুই
সামরিক স’রকারে’র আমলেই (জিয়া ও এ’রশাদ)
নষ্ট করে ফেলা হয়েছে
বা পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে। তবে
এখনো ব্যক্তিগত পর্যায়ে কা’রও কা’রও কাছে থাকতে পারে।
সেগুলো আহ্বান করা ও সেই
সময়ে’র মানুষে’র সাক্ষ্য গ্রহণ করা যেতে পারে।
তিনি
বলেন, এই তথ্যানুন্ধানী কমিটিকে
উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ক’রতে হবে, যাতে তথ্য
চেয়ে তারা যে কাউকে
তলব ক’রতে বা সমন জারি
ক’রতে পারে। তিনি যদি প্রধানমন্ত্রী
বা সেনাপ্রধানও হন, তবু কমিশনে
এসে তথ্য দিতে বাধ্য
থাকেন।
জায়েদুল
আহসানে’র মতে, এই কমিশন
দুভাবে গঠিত হতে পারে।
সুপ্রিম কোর্টে’র আপিল বিভাগে’র একজন
বিচা’রপতি বা সাবেক প্রধান
বিচা’রপতি হতে পারেন এটি’র
প্রধান। তা’র সঙ্গে সাবেক
পুলিশ কর্মকর্তা, আইনজীবী, সাংবাদিক ও গবেষক থাকতে
পারেন।
আবা’র
সংসদীয় কমিটিও হতে পারে। সেটা
সংসদ ঠিক ক’রবে। সেখানে
সংসদ সদস্য, মন্ত্রী থাকতে পারেন। সেটা সর্বদলীয় হতে
পারে। আবা’র দুইটি কমিটি একসঙ্গেও হতে পারে। তারা
আলাদাভাবে কাজ করে একসঙ্গে
বসতে পারে।
তবে
লেখক ও গবেষক মহিউদ্দিন
আহমদ মনে করেন, স’রকা’র
চাইলে এ ‘রকম একটি
পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরি করা কঠিন
হবে না।
তিনি
বলেন, স’রকা’র তালিকা ক’রতে চাইলে এটা করা কোনো
ঘটনাই না। এটা খুবই
সহজ। কা’রণ এ’র প্রতিটি ঘটনা’রই
রেকর্ড আছে। স’রকা’র চাইলে
সব তথ্যই স’রকা’র পাবে। কা’রণ ওই সময়ে’র অনেকেই
তো এখনো বেঁচে আছেন।
আপনা’র-আমা’র কাছে হয়তো কঠিন।
আমরা অ্যাক্সেস পাব না। যাদে’র
ফাঁসি দিয়েছে, তাদে’র রেকর্ড তো জেলখানাতেই আছে।
লেখক ও সাংবাদিক আনোয়া’র কবি’র বলেন, জিয়া’র আমলে সশস্ত্র বাহিনীতে চলা হত্যা, গণহত্যা, গণফাঁসি নিয়ে তথ্যানুসন্ধানী কমিশন গঠনে’র জন্য অনেক দিন ধরেই কথা হচ্ছে। ৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় যাওয়া’র প’র প্রথম এই কমিশন গঠনে’র দাবি ওঠে জাতীয় সংসদে। এ’রপ’র নানা সময়ে আমা’র বই ধরে সংসদে বিভিন্ন সংসদ সদস্য দাবি তুলেছেন। কিন্তু কমিশন গঠন হয় না, তথ্যে’র সন্ধানও হয় না। প্রাণ হারানো সেনা’র তালিকাও হয় না।

খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।