নন্দীগ্রামে বিএনপির এমপির বিরুদ্ধে আ.লীগ নেতাকে হত্যার ষড়যন্ত্র
🕧Published on:
নন্দীগ্রাম (বগুড়া) প্রতিনিধি : বগুড়ার নন্দীগ্রামে উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের সদস্য আনোয়ার হোসেন রানা এলএলবিকে হত্যা ষড়যন্ত্রের অভিযোগ এনে বিএনপির এমপি মোশারফ হোসেন, উপজেলা চেয়ারম্যান রেজাউল আশরাফ জিন্নাহ ও বিএনপি নেতা হাসানাতসহ ৭জনের বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।
আওয়ামী লীগ নেতা আনোয়ার হোসেন রানা দাবি করেছেন, তাকে হত্যার ষড়যন্ত্র করেছে এমপি, উপজেলা চেয়ারম্যান ও তার পরিবারের কতিপয় ব্যক্তিসহ একটি সংঘবদ্ধ চক্র। তিনি বগুড়া সদর থানায় জিডি করেছেন। ইতিপুর্বে ৩০ লাখ টাকা দিয়ে খুনি ভাড়া করা হয়েছিল। জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়তে প্রয়োজনে জীবন দিতেও রাজী আছি। তবুও কোনো বেঈমানের সঙ্গে আপস করবো না।
পৃথক অভিযোগে এই আওয়ামী লীগ নেতার দাবি, গত ৮ জানুয়ারী উপজেলায় দলীয় কার্যক্রম শেষে বগুড়া ফেরার পথে রাত সাড়ে ১১টার দিকে কয়েকটি নম্বরবিহীন মোটরসাইকেলে অচেনা ৮/৯জন মুখোশপরা অস্ত্রধারী যুবকেরা আওয়ামী লীগ নেতা এলএলবি রানার প্রাইভেট জিপ ধাওয়া করে। উপজেলা সদর থেকে শাজাহানপুর উপজেলার ওমরদিঘী বাজার পর্যন্ত বগুড়া-নাটোর মহাসড়কে জিপগাড়ী থামানোর চেষ্টা করে। এসব ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রফিকুল ইসলাম রফিক। এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যম সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ও ইউটিউবে ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। ঘটনা জানার পর নেতাকর্মীরা ক্ষোভে ফুসছেন।
উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রফিকুল ইসলাম রফিক বলেন, দলীয় কার্যক্রম শেষে ফেরার পথে মোটরসাইকেলে কালো জ্যাকেট এবং মুখোশপরা অচেনা যুবকরা আমাদের জিপগাড়ী থামানোর চেষ্টা করে। এই ঘটনা পরিকল্পিত, তাদের অসৎ উদ্দেশ্য ছিল।
এদিকে অভিযোগে বলা হয়, এলএলবি রানা ও তার স্ত্রী, সন্তানকে প্রাণে মেরে ফেলা এবং আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করার জন্য স্থানীয় এমপি মোশারফ হোসেন, নন্দীগ্রাম উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রেজাউল আশরাফ জিন্নাহ, সাবেক জামায়াত নেতা বর্তমান বিএনপি নেতা নাশকতা মামলার আসামী প্রফেসর হাসানাত আলী, বিএনপি-জামায়াতের অর্থের যোগানদাতা ফেরদৌস আলম ফটু, মোফাজ্জল হোসেন রঞ্জু ওরফে ধলা মিয়া, আবুল হোসেন খোকন ওরফে ব্যাঙ্গা খোকন ও শাফিউল আলামীন সুমন ওরফে ভোটা পরস্পর যোগসাজস করে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। উল্লেখিত ব্যক্তিরা আনোয়ার হোসেন রানা এলএলবির বাসস্থান, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ পরিবারের সদস্যদের প্রাণনাশের জন্য নানা ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে। এলএলবি রানার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়েরসহ প্রাণে মেরে ফেলার ষড়যন্ত্র করছে। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, সাধারন ডায়েরি করার পর ১১-০৮-২০২১ তারিখে বগুড়া শহরের কাটনার পাড়ার সরিফ বিড়ি ফ্যাক্টরীর স্বত্বাধিকারী মৃত আলহাজ সেখ সরিফ উদ্দিনের স্ত্রী দেলওয়ারা বেগম রংপুর মহানগরের হাজীরহাট থানায় জামাই আনোয়ার হোসেন রানা ও তার স্ত্রী দেলওয়ারা বেগমের কন্যা আকিলা সরিফা সুলতানা খানমসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে নয় কোটি সাইত্রিশ লাখ পয়ষট্টি হাজার টাকার তামাক পাতা আত্মসাতের অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করে। মামলা দায়েরের পর ডিবির ইন্সপেক্টর মোতালেব হোসেন গোপনে ও প্রকাশ্যে দীর্ঘ তদন্ত শেষে আরপিএমপি গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি) স্মারক নং-১০, ০৫-০১-২০২২ তারিখের আদেশমূলে সকল আসামীকে মামলার দায় হতে অব্যাহতি দানের আবেদন করে মামলায় আরপিএমপি, হাজীরহাট থানার চুড়ান্ত রিপোর্ট তথ্যগত ভুল নং-০১, তারিখ ০৫-০১-২০২২ ধারা ৪০৭/৪০৮/৪২০/৫০৬/১১৪ পেনাল কোড বিজ্ঞ আদালতে দাখিল করে।
আওয়ামী লীগ নেতা রানার অভিযোগ ভিত্তিহীন দাবি করে বগুড়া-৪ আসনের বিএনপির সংসদ সদস্য আলহাজ¦ মোশারফ হোসেন বলেন, শ^াশুড়ির মামলা থেকে রক্ষার জন্য এসব অপপ্রচার করছে। তার শ^াশুড়ি তো আমার কেউ না। রানা আওয়ামী লীগ করে, আমি বিএনপির লোক। তার সঙ্গে আমার পারিবারিক বা রাজনৈতিক সম্পর্ক নেই। জানিনা কেন আমাকে নিয়ে তার এতো মাথা ব্যথা।
অন্যদিকে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রেজাউল আশরাফ জিন্নাহ বলেন, আমাকে বিতর্কিত করে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হওয়ার জন্য আনোয়ার হোসেন রানা মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করে নিজেকে সাধু প্রমাণ করতে চায়। আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ করছে, সবই বানোয়াট।
0comments
মন্তব্য করুন
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।