নন্দীগ্রামে জলাশয়ে বিরল প্রজাতির ভয়ংকর মাছ ‘সাকার’

S M Ashraful Azom
0
নন্দীগ্রামে জলাশয়ে বিরল প্রজাতির ভয়ংকর মাছ ‘সাকার’



 : বগুড়ার নন্দীগ্রামে জলাশয়ে দেখা মিলল ভয়ংকর মাছ ‘সাকার মাউথ ক্যাটফিশ’। শনিবার দিবাগত রাতে উপজেলার কৈগাড়ী-রিধইল গ্রামের মধ্যস্থ সাঁকোর জলাশয়ে মাছ ধরার সময় জালে আটকা পড়ে ‘সাকার’। কৈগাড়ী গ্রামের কলেজছাত্র নুরনবী এ বিরল প্রজাতির মাছটি ধরেছেন। 


গেল কয়েকদিনের বৃষ্টির পানির ¯্রােতে মাছটি ভেসে জলাশয়ে এসেছে বলে স্থানীয়দের ধারণা। 


৮ থেকে ৯ ইঞ্চি লম্বা এই মাছের পুরো শরীরে মাথা থেকে লেজ পর্যন্ত সারি সারি কাঁটা, মুখও ভিন্ন আকৃতির। বাদামি রং এবং ছোট-কালো রঙের বিন্দু বিন্দু ছাপ রয়েছে। সাকার মাছের পিঠের ওপরে বড় ধারালো পাখনা আছে। দুই পাশেও রয়েছে একই রকমের দুটি পাখনা। এর দাঁতও বেশ ধারালো। সাধারণত জলাশয়ের আগাছা, জলজ পোকামাকড় ও ছোট মাছ এদের প্রধান খাবার। কলেজছাত্র নুরনবী জানায়, জলাশয়ে মাছ ধরার সময় মাছটি জালে আটকা পড়ে। দেখে প্রথমে ভয় লেগেছিলো। কারণ, এর আগে এ ধরনের মাছ সে কখনো দেখেনি এবং মাছের নামটিও জানা ছিল না। 

এ বিষয়ে মন্তব্য নিতে নন্দীগ্রাম সিনিয়র উপজেলা মৎস্য অফিসার মো. ফেরদৌস আলীর মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি কল রিসিভ করেননি। তবে সিংড়া উপজেলার এক মৎস্য কর্মকর্তা জানান, এটি নিষিদ্ধ এবং রাক্ষস প্রজাতির মাছ। এটি পুকুরে এবং জলাশয়ে ছড়িয়ে পড়লে দেশীয় প্রজাতির মাছচাষ হুমকির মুখে পড়বে। সাকার মাউথ ক্যাটফিশ নামে পরিচিত হলেও এর বৈজ্ঞানিক নাম হাইপোসটোমাস প্লিকোসপোমাস। 

প্রাপ্ততথ্যে জানা গেছে, সাকার মাছের জন্ম-অবস্থান দক্ষিণ আফ্রিকায়। ভয়ংকর এ মাছ আশির দশকে বাংলাদেশে নিয়ে আসা হয়। অ্যাকুরিয়ামে লালনপালনের জন্য মূলত এ মাছ নিয়ে আসা হয়। পরে অ্যাকুরিয়াম ছাড়িয়ে দেশের প্রায় সব মুক্তজলাশয়ে ছড়িয়ে পড়ে মাছটি। শখের সাকার মাছ এখন সব জলাশয়ে বিষ ছড়াচ্ছে। পুকুর, নদ-নদী, খাল-বিলে এ মাছ ছড়িয়ে পড়েছে। এ মাছটি একবার কোনো জলাশয়ে ঢুকে পড়লে এর বিস্তার রোধ করা খুব কঠিন। চাষের পুকুরে এই মাছ ঢুকে পড়লে অন্য মাছের সঙ্গে খাবার ও বাসস্থান নিয়ে প্রতিযোগিতা শুরু করে। এতে করে বাইরে থেকে পর্যাপ্ত খাবার প্রদান করলেও মাছের কাঙ্খিত উৎপাদন পাওয়া যায় না। নিষিদ্ধ এ মাছ সব ধরনের মাছের খাদ্য, রেণু ও ডিম খায়। এছাড়া জলাশয়ের নিচে থাকা পচনশীল খাদ্য খাওয়াসহ এর শরীরে থাকা ভয়ানক কাঁটা দিয়ে অন্যসব মাছকে আঘাত করে। একেকটি মাছ ১০ থেকে ১২ বছর বাঁচে। ১৫ সেন্টিমিটার হলেই ডিম দিতে থাকে। ৩০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত বড় হয়। লবণাক্ত কিংবা মারাত্মক দূষিত কালচে পানিতে-এরা বাঁচতে পারে। 


শেয়ার করুন

সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন

ট্যাগস

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ

খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top