[৩৮৩] রৌমারীতে ছয় বছরেও শেষ হয়নি ৩ কি:মি রাস্তা মেরামতের কাজ

S M Ashraful Azom
0

 : ঠিকাদারের গাফলতি ও স্থানীয় প্রশাসনের উদাসীনতার কারনে রৌমারী উপজেলায় ৩ কিলোমিটার রাস্তা ৬ বছরেও মেরামতের কাজ সম্পন্ন হয়নি। আরো কত বছর লাগবে মেরামতের কাজ শেষ করতে তারও কোন নিশ্চয়তা নেই। ফলে বিজিবি’র টহলসহ ৬টি গ্রামের মানুষের যাতায়াতে চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। 

রৌমারীতে ছয় বছরেও শেষ হয়নি ৩ কিমি রাস্তা মেরামতের কাজ



এ নিয়ে উপজেলা সমন্বয় সভায় রাস্তাটির কাজ দ্রæত সম্পন্ন করার জন্য  প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন এমপি উপজেলা প্রকৌশলীকে কঠোর নির্দেশনা দিলেও মানা হয়নি তার কথা। এতে সরকারের ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন করা হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেছেন সচেতন মহল। 

উপজেলা প্রকৌশলী অফিস সুত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালের শেষের দিকে উপজেলার চর নতুনবন্দর স্থলবন্দর তুরা রাস্তা হতে সীমান্ত এলাকা দিয়ে খাটিয়ামারী কাদেরের বাড়ি পর্যন্ত প্রায় ৩ কিলোমিটার রাস্তা মাটি ভরাট ও পাঁকা করনের জন্য ২ কোটি ৩৯ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। যা টেন্ডারের মাধ্যমে কুড়িগ্রামের মেসার্স ছাকিব ট্রেডার্স উক্ত কাজটি পায়। মেসার্স ছাকিব ট্রেডার্স’র মালিক প্রথম শ্রেণীর ঠিকাদার প্রোঃ মো.আহসানুল লিটন ওই রাস্তার পাশে জিঞ্জিরাম নদীর কিনারে প্রায় ১’শ গজ দৈর্ঘ্য গাইড ওয়ালও নির্মাণ করেন। পরবর্তীতে তিনি রাস্তার কাজ না করেই পালিয়ে যান। ২০১৯ সালে ওই রাস্তাটি মেরামতের জন্য কুড়িগ্রামের মোক্তার হোসেন নামের অপর এক ভায়া ঠিকাদারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। তিনিও সামান্য মাটির কাজ শুরু করেই বরাদ্দকৃত বিল উত্তোলনের জন্য মরিয়া হয়ে উঠেন। বিষয়টি এলাকাবাসি তৎকালিন উপজেলা নির্বাহী অফিসার দ্বীপঙ্কর রায়কে জানানো হলে তিনি বিল উত্তোলন বন্ধ করলে এ ঠিকাদার কাজ না করে চলে যান। বছর খানেক পর স্থানীয় সাইদুর রহমান নামের এক ব্যক্তি ভায়া ঠিকাদার হিসেবে মুল ঠিকাদারের সাথে কথা বলে ওই রাস্তাটির কাজ আবারো শুরু করেন ২০২০ সালে। রাস্তাটির তিন স্থানে গাইড ওয়াল দেওয়ার কথা থাকলেও ড্রামশিড ও বাশেঁর খুটি দিয়ে গাইডওয়াল দেওয়া হয়েছে। যা কোন সময়ে রাস্তা ভেঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এনিয়ে এলাকায় হাস্যকারের সৃষ্টি হয়েছে। অপর দিকে তিনি গাইডওয়াল ছাড়াই ৩ কিলোমিটার রাস্তা ধরেই নি¤œমানের ইটের খোয়া ফেলেন এবং খাটিয়ামারী কাদেরের বাড়ি হতে ঈদগা মাঠ পর্যন্ত প্রায় ১ কিলোমিটার রাস্তার পাঁকা করনের কাজ শেষ করেন। রাস্তার বাকি কাজ প্রায় ৪ মাস থেকে বন্ধ রয়েছে। শনিবার (১০ জুন) সরেজমিনে গিয়ে এসব চিত্র ও তথ্য পাওয়া যায়। 

সীমান্ত এলাকার গুরত্বপূর্ণ ওই রাস্তাটির মেরামতের কাজ শেষ না করায় বাংলা বাজার ও মোল্লার চর বিজিবি ক্যাম্পের সদস্যরা তাদের টহলে চরম দূর্ভোগে পড়েছেন। অপর দিকে চান্দারচর, নওদাপাড়া, ব্যাপারীপাড়া, বোল্লাপাড়া ও খাটিয়ামারীসহ ৬টি গ্রামের প্রায় ৫ হাজার মানুষের যাতায়াতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। 

উপজেলার সদর ইউনিয়নের নওদাপাড়া গ্রামের মাওলানা নুরল ইসলাম জানান, রাস্তাটির কাজ অসমাপ্ত রাখায় যানবাহন ও পথচারিদের যাতায়াতে খুব কষ্ট হচ্ছে। অতিরিক্ত গাড়ি ভাড়া দিয়ে কৃষকের কষ্টারজিত ফসল হাটে নিয়ে যেতে হচ্ছে। খাটিয়ামারী গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল হাকিম বলেন, রাস্তাটি মেরামতের জন্য ঠিকাদারের একের পর এক ভায়া ঠিকাদারকে দায়িত্ব দিলেও কাজটি হচ্ছে না। রাস্তাটির কাজ দ্রæত সম্পন্ন করার জন্য প্রশাসনের কাছে সুদৃষ্টি কামনা করছি। 

চান্দারচর গ্রামের গোলাম রব্বানী বলেন, সরকার বরাদ্দ দিয়েছেন। কিন্তু স্থানীয় প্রশাসনের উদাসীনতার কারনে কাজটি হচ্ছে না। আমরা আশা করি রাস্তার কাজটি যেন তাড়াতাড়ি করা হয়।

রাস্তার কাজ বন্ধ থাকায় মুল ঠিকাদার ও ভায়া ঠিকাদার কাউকে পাওয়া যায়নি। 

এব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী মামনুর রশিদ বলেন, আমি কয়েক দিন হলো যোগদান করেছি। এবিষয় কিছু জানিনা। তবে জেনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবিএম সারোয়ার রাব্বী বলেন, বিষয়টি জেনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

 

 


শেয়ার করুন

সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন

ট্যাগস

Post a Comment

0Comments

খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।

Post a Comment (0)

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top