শফিকুল ইসলাম: কুড়িগ্রাম জেলা সদর হতে বিচ্ছিন্ন একমাত্র রৌমারী উপজেলা স্বাস্খ্যকেন্দ্রটি। চিকিৎসক সংকটের কারণে প্রায় ৩ লাখ মানুষ সুচিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। চিকিৎসক ছাড়াও অন্যান্য পদে জনবল না থাকায় খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলছে এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি। স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি ৩১ শর্যা থেকে ৫০ শর্য্য়া উন্নতি হলেও চিকিৎসক না থাকায় কাঙ্খিতসেবা থেকে বঞ্চিত এলাকার মানুষ।
চিকিৎসকসহ অন্যান্য পদের জনবল সংকটের বিষয়ে উপজেলা সমন্বয় সভায় বিস্তর আলোচনায় আসলেও কোন পরিবর্তন দেখা যায়নি। ফলে চিকিৎসা না পেয়ে প্রতিদিন অনেক রোগী ফিরে যাচ্ছে। অপর দিকে ঔষুধ সংকটতো রয়েছে অনেক আগে থেকেই। এসব সংকট নিরসেন উদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন সুধিজন।
স্বাস্থ্যকের্ন্দের সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২৫টি পদের বিপরীতে এখানে চিকিৎসক রয়েছেন মাত্র ৪ জন। ক্লিনার পদ রয়েছে ৫টি, শুন্য রয়েছে ২টি, নৈশ্য প্রহরী নেই, আয়া নেই, অফিস সহকারি-সহায়ক নেই। তা ছাড়া হাসপাতালে চক্ষু, কার্ডিওলজি, অর্থোপেডিকসহ কয়েকটি বিভাগে কোনো কনসালট্যান্ট নেই। শুধুমাত্র উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, মেডিকেল অফিসার রয়েছেন দুইজন। কর্মকর্তা বেশি সময়ে অফিসের কাজে জেলার বাহিরে থাকেন। একজন জুরুরী বিভাগে দায়িত্ব পালন করেন। অপর দুইজন আউটডোরে চিকিৎসা দেন। প্রতিদিন প্রায় দুইশতাধিক রোগী চিকিৎসা নিতে আসেন এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। দীর্ঘ সময়ে লম্বা লাইনে দাড়িয়ে থাকেন অসুস্থ্যরোগীরা। এতে হয়রানির শিকারও হন তারা। স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বলছেন, চিকিৎসক সংকটের বিষয়ে উদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষের নিকট প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে।
অপর দিকে রৌমারী স্বাস্থ্যকেন্দ্রে জেলা শহর থেকে কোন চিকিৎসক যোগদান করলেও কয়েকদিনের মধ্যে ওই চিকিৎসক অন্যত্রে বদলী হওয়ার জন্য তদবিরে ব্যস্ত থাকেন। এখানে কোন চিকিৎসক থাকতে চান না। তবে মজার বিষয় হচ্ছে এখান থেকে কোন চিকিৎসক বদলী হয়ে গেলে প্রতি শুক্রবার আবার তারাই অতিথি ডাক্তার হয়ে রৌমারীর বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টারে বসেন এবং চিকিৎসকের ভিজিট ছাড়াও রোগীর বিভিন্ন পরীক্ষার নাম করে প্রতারণার মাধ্যমে মোটা অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নেন। গত বৃহস্পতিবার এক মতবিনিময় সভায় এসব সমস্যার কথা উঠে আসে। এর আগে স্থানীয় সংসদ সদস্য এ্যাড.বিপ্লব হাসান পলাশ হাসপাতালে এক মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন। সভায় হাসপাতালের সামগ্রিক স্বাস্থ্যসেবা, মায়েদের জন্য ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার সচল রাখা, ওষুধের প্রাপ্যতা নিশ্চিত করা, প্রতিদিনের ওষুধের তালিকা হালনাগাদকরণ, দালালের উপদ্রব নিরসনে আলোচনা করেন।
আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আলী রাজীব মো: নাছের বলেন, চিকিৎসক সংকটের কারনে রোগীদের চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হচ্ছে। রোগীদের সেবার মান উন্নতি করতে জরুরী ভিত্তিতে বিভিন্ন শুন্যপদে চিকিৎসকের প্রয়োজন।
রৌমারী উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প কর্মকর্তা ডা. আসাদুজ্জামান বলেন, জনবল সংকটের মধ্যেও মানুষ যাতে স্বাস্থ্যসেবা প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত না হয় তার জন্য প্রাণান্তকর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। দালালের উপদ্রব বন্ধ হয়েছে। তিনি আরো বলেন, স্বাস্থ্যকেন্দ্রে দীর্ঘদিন ধরে রেডিওলজি বিভাগে কোনো জনবল নেই। ফলে এক্স-রে, আল্ট্রাসনোগ্রামের মতো সেবা দেওয়া যাচ্ছে না। আউটডোরে ওষুধের তালিকার বিষয়ে তিনি বলেন, নতুন ওষুধ যুক্ত হলে বা ওষুধ পরিবর্তন হলে তালিকা হালনাগাদ করা হয়।
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।