সাপ্তাহিক তওফিকে প্রকাশিত ম্যাট্রিক পরীক্ষার্থীদের অনুরোধ

Seba Hot News : সেবা হট নিউজ
0

শাহ্ মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান: পাবলিক পরীক্ষা ব্যবস্থা এদেশে চালু হয়েছিল ব্রিটিশদের উদ্যোগে। কয়েক বছর ব্যতীত ব্রিটিশ শাসনামলে প্রবর্তিত রীতি অনুসারে ১০ বছরের স্কুল পাঠক্রম শেষ করার পর মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষা (এন্ট্রান্স বা প্রবেশিকা পরীক্ষা) বা অধুনা এস.এস.সি নামে প্রথম পাবলিক পরীক্ষার মুখোমুখি হতে হতো এদেশের শিক্ষার্থীদের। 

সাপ্তাহিক তওফিকে প্রকাশিত ম্যাট্রিক পরীক্ষার্থীদের অনুরোধ


শুরুতে লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের মাধ্যমে এই পরীক্ষা পরিচালিত হতো। ১৮৫৭ সালে কলকাতা, মাদ্রাজ (চেন্নাই) এবং বোম্বেতে (মুম্বাই) বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর থেকে প্রবেশিকা পরীক্ষা যা ১৯০৯ সাল পর্যন্ত ছিল। পরে এই পরীক্ষা (পরবর্তী সময়ে ম্যাট্রিক পরীক্ষা নামে অভিহিত) পরিচালনার দায়িত্ব এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর অর্পিত হয়। তখন এই পরীক্ষার নাম ম্যাট্রিক করা হয় যা ১৯৬১ সাল পর্যন্ত ছিল। তওফিকে প্রকাশিত তদানীন্তন ম্যাট্রিক পরীক্ষার্থী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে একটি অনুরোধ।

কম্পিউটারে কম্পোজকৃত এ লেখার পাঠোদ্ধার নিম্নরূপ :

ম্যাটিক পরীক্ষার্থী ছাত্রদের প্রতি অনুরোধ। 

আমাদের আরজ: 

আমাদের পরম সৌভাগ্য যে বর্ত্তমানে জামালপুরে কয়েকজন ন্যায় নিষ্ট কর্ত্তব্য পরায়ণ অফিসারের সমাবেশ সাধিত হইয়াছে এবং প্রত্যেকেই যৎপরোনাস্তি তীক্ষ্ণ পর্যাবেক্ষণ দ্বারা স্ব স্ব বিভাগকে ক্রটী শূন্য করিবার কাজে আত্মনিয়োগ করিয়াছেন। 

বিগত ১৩ই মার্চ্চ তারিখে পুলিস কো-অপারেসন বার্ষিকীতে তাঁহারা তাঁহাদের যে মনোভাব ব্যক্ত করিয়াছেন এজন্য বাস্তবিকই আমরা গর্ব্ববোধ করিতেছি। 

গত ২০ বৎসর অর্থাৎ একটা জেনারেসন যাবত আমাদের মধ্যে যে কয়জন লোক উচ্চ শিক্ষিত হইয়াছেন তাঁহাদের শতকরা ৯৯ জনই চাকুরীতে নিয়োজিত কাজেই স্বাভাবিক ভাবেই দেশের মঙ্গলজনক সংগঠন কার্য্যে তাঁহাদেরকেই আদর্শ সৃষ্টির ব্যবস্থাও করিতে হইবে। তাঁহারা নিজেদের কর্ত্তব্য পালনে আজ ব্রতী ইহা অত্যন্ত আশা ও আনন্দের কথা। 

এই প্রসঙ্গে আমরা একটি আরজ করি যে জামালপুরের দুর্গাবাড়ী হলটীকে টাউন হল রূপে ব্যবহার উপযোগী করিয়া তথায় প্রতি মাসের শেষ রবিবার দিবস সন্ধ্যায় ৯০ মিনিট কাল স্থায়ী সরকারী বেসরকারী নরনারী সমাবেশে একটা সভানুষ্ঠান ব্যবস্থা প্রবত্তিত হোক। উক্ত সভায় ৫ জন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের এবং ২ জন মহিলা এবং সভাপতি সাহেব বক্তৃতা করিবেন। করোনেসন রিডিং ক্লাবে সাপ্তাহিক শুক্রবার দিন সন্ধ্যায় ৯০ মিনিট কাল খেলাধূলা বন্ধ রাখিয়া টাউন ক্লাবের বক্তৃতার বিষয়বস্তুর উপর বিতর্কমূলক আলোচনা হওয়ার ব্যবস্থা কার্য্যকারী করা হোক। 


সাপ্তাহিক তওফিকে প্রকাশিত ম্যাট্রিক পরীক্ষার্থীদের অনুরোধ
সাপ্তাহিক তওফিকে প্রকাশিত ম্যাট্রিক পরীক্ষার্থীদের অনুরোধ

সাপ্তাহিক তওফিকে বক্তৃতার বিষয়বস্তু ও বক্তাগণের নাম পূর্ব্বাহ্ণে প্রকাশ করা হইবে। 

আমাদের ধারনা এই ব্যবস্থায় অতী অল্প সময়ের মধ্যে আমাদের জীবন ধারার এক অপূর্ব্ব পরিবর্তন সাধিত হইবে। এবং চরিত্র গঠন দুর্নীতি দূরীকরণ, কর্ত্তব্য বোধ জাগরণ, সর্ব্বোপরি দেশ প্রেমিক কর্ম্মি সংগঠন কাধ্যে দ্রুত সাফল্য লাভ করিব। সঙ্গে স্থানীয় অভাব অভিযোগ দূরীভূত ও নানাপ্রকার জনহিতকর কার্য্যও স্বুচারুরূপে চলিবে খলিয়া আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস। আমরা এই বিষয়টার প্রতি স্থানীয় এস, ডি, ও, এস-ডি-এম, এস-ডি-পি-ও, এস-ডি-ও, (সি-এন্ড-বি) এস-ডি-ও, ইরিগেসন) এস-ডি ও, (রেলওয়ে) প্রিন্সিপাল, এ. এম, কলেজ, হেড মাষ্টার স্থানীয় হাই স্কুল, প্রেসিডেন্ট প্লীতার বার, প্রেসিডেন্ট মোক্তার বার, চেম্বার্স অব কমার্স, চেয়ারম্যান মিউনিসিপালিটী, প্রেসিডেন্ট যুক্তফ্রন্ট, প্রেসিডেন্ট মুসলীম লীগ প্রভৃতি সকল দায়ীত্বশীল ব্যক্তিগণের। তীক্ষ্ণ দৃষ্টি এদিকে আকর্ষণ করিতেছি। অনুগ্রহ করিয়া তাঁহারা বিষয়টা চিন্তা করিয়া দেখিবেন। 

একটু কাজ করবে ভাই? 

ম্যাটিক পরীক্ষা দিয়ে বাড়ী ফিরেছ। পরীক্ষার ফল বের হতে এখনও অনেক দিন বাকী। দীর্ঘ সময়টী কি শুধু শুধু কাউয়ে দিবে? দুদিন পরে তোমরাই পাকিস্তান পরিচালনা করবে। তোমরা কেউ হবে লাট, কেউ মন্ত্রী সেনাপতি, জজ, ম্যাজিস্ট্রেট, ইঞ্জিনিয়ার, উকিল, ব্যারিষ্টায় এমন কত শত কিছু। 

তোমারই ছোট ভাই বোনদের প্রাথমিক শিক্ষার স্থান ঐ প্রাইমারী স্কুল গুলি। ওখানে কিছু হচ্ছে না বলে খু-উব কিন্তু কথা হচ্ছে। কোথাও কাগজে কলমে স্কুল আছে আসলে কিছু নাই। কোথাও বা স্কুল আছে মাষ্টার নাই। মাষ্টার আছে ছাত্র নাই। কোথাও বা ছাত্র আছে বেঞ্চই নেই। এমনি আরো কত রকম কিছু। 

গভর্ণমেন্ট এতো ইনস্পেক্টার তে তদারক করতে এখন পাচ্ছেন প্রেসিডেন্ট সাহের : সময়ই পান যা। মেম্বর সাহেবরাই বা দেখেন কখন। ‘বুঝেছ ভাই, সাধারণ সবাই তো খেত খামারের কাজ, খাওয়া পড়ার চিন্তা নিয়ে ব্যস্ত। 

আগেকার দিনের মত মাষ্টার সাহেবদের উপরই ভার ছেড়ে দেওয়া যেতো যদি মাষ্টারদের মাইনে ছাত্রদের পাশ ফেলের উপর বেশি কমি নির্ভর করতো। মানে ম্যাটিক পরীক্ষার মত প্রতি বৎসর যদি খুব ঠিক মত পরীক্ষা নেয়া হতো। উপরওয়ালারা নাকি ভাল ভাল কি সব মতলব করতেছেন তা, তারা করুন। 

তোমরা তোমাদের এই অবসর সময় টার একটু চেষ্টা করলে ঢের কাজ কিন্তু করতে পার। তোমরা মাষ্টারের খোজ নিতে পার কি অসুবিধা তা শুনতে পার। তোমার বাবাকে, চাচাকে বলে প্রতিকার করতে পার। মেম্বর সাহেবকে বলতে পার। প্রেসিডেন্ট সাহেবকে নিয়ে দেখাতে পার। মানে কয়দিনের মধ্যেই সব একদম ঠিক করে দিতে পার। কেমন? পার না? আরো পারো তুমি কোন কোন স্কুলে কি ব্যবস্থা করলে। সেখানে কি ছিলনা তুমি কি করে দিলে। এসব সুন্দর করে লিখে তোমার দেশের এই তওফিক কাগজে ছাপতে পাঠাতে পার। আমরা খুব খুসী হয়ে ছাপাবো। এই তওফিক অনেক জায়গায় যায়। অনেক বড় বড় অফিসায়ে পড়েন। তারা জানতে পারবেন কোথায় কি গলদ ছিল আয় তুমি কি ভাবে তা দূর করলে। 

আচ্ছা এটা খুব বড় সৎকাজ না সৎকাজ করতে গেলে কিন্তু ভাই সুখ সৎ নিয়তে আর খুব শান্ত ভাবে কাজ করতে হয় তা ত জানোহ-না? এটা কিন্তু খুব সত্য কথা। ঠাণ্ডা মাথায় শুদ্ধ শান্ত ভাবে, মিষ্টি মুখে কাজ যারা করতে পারে তাদের কাজই কাজ হয়। আর যারা তা পারে না তারা কাজ করতে যেয়ে মুখের কড়া কথায় মানুষকে বিরক্ত করে। কড়া মেজাজ দেখায়ে অপরের সাথে ঝগড়া করে। সব কাজত মাটী করেই তাথ উপর নুতন হাঙ্গামা সৃষ্টি করে বসে। এর চেয়ে কাজ না করা কি ভাল নয় 

তোমরা কখনো কিন্তু গোলমাল কিংবা কাউকে বিরক্ত করতে পারবে না অথচ কাজ করা চাই। এরই নাম বাহাদুরী। জামালপুরের এইরূপ কতিপয় কৃতি সন্তানের ছবি ব্লক এবারকার তওফিকে দেওয়া হলো। এবং ধারাবাহিক তাবে প্রত্যেকের জীবনী ও বিস্তারিত লেখার ব্যবস্থা হলো। 

আমাদের এই অনুরোধ তোমরা কে কি ক.জ করলে তা জানবার জন্য উদগ্রীব হয়ে রইলেম। 

তোমাদের-

তওফিক ভাই,




সূত্র: /সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশ্যে আপোষহীন

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ

খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top