প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, স্বাধীনতা থেকে শুরু করে দেশের প্রতিটি বড় অর্জন ও অগ্রযাত্রা সবই এনে দিয়েছে গণমানুষের দল আওয়ামী লীগ। জন্মলগ্ন থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত নানা ঘাত-প্রতিঘাত মোকাবেলা করে উজানে নাও (নৌকা) ঠেলেই আওয়ামী লীগ দেশকে অভীষ্ট লক্ষ্যে নিয়ে যাচ্ছে। গতকাল জাতীয় সংসদে অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশনের শুরুতে আওয়ামী লীগের ৬৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে পয়েন্ট অব অর্ডারে এই আলোচনার সূচনা করেন দলের
সিনিয়র নেতা বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। এরপর শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু বক্তব্য রাখেন। প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনাতেও সরকারি দলের সাংসদরা আওয়ামী লীগের জন্মদিন নিয়ে কথা বলেন।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশনের শুরুতে আওয়ামী লীগের ৬৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে পয়েন্ট অব অর্ডারে এই আলোচনার সূচনা করেন দলের
সিনিয়র নেতা বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। এরপর শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু বক্তব্য রাখেন। প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনাতেও সরকারি দলের সাংসদরা আওয়ামী লীগের জন্মদিন নিয়ে কথা বলেন।
দলের জন্মদিনে দেশবাসীকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও আওয়ামী লীগ ওতপ্রোতভাবে জড়িত। আওয়ামী লীগের ইতিহাসই হচ্ছে বাঙালি জাতির জন্য ত্যাগ-তিতিক্ষার ইতিহাস। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে অর্থনীতি, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়াসহ সব ক্ষেত্রেই দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, আপন মহিমায় উদ্ভাসিত হচ্ছে বিশ্বজুড়ে। অতীতে বহুবার আওয়ামী লীগকে ধ্বংস ও নিশ্চিহ্ন করার অনেক ষড়যন্ত্র ও চেষ্টা হয়েছে, কিন্তু কেউই সফল হয়নি। আগামীতেও কেউ সফল হবে না। কারণ আওয়ামী লীগের সবচেয়ে বড় শক্তিই হচ্ছে জনগণ। দেশের জন্য অনেক ত্যাগের কারণেই জনগণের আস্থা-বিশ্বাস অর্জন করেছে আওয়ামী লীগ। আর দলটি তৃণমূল থেকে আদর্শ নিয়ে গড়ে উঠেছে। আদর্শ নিয়ে গড়ে ওঠা আওয়ামী লীগকে শেষ করা অত সহজ নয়, নিশ্চিহ্ন করা যায় না-তা গত ৬৬ বছরে প্রমাণ হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর ’৭৫-পরবর্তী সরকারগুলো আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করতে নানা অপপ্রচার ও বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে। কিন্তু দেশের মানুষ বিভ্রান্ত হয়নি, সব সময়ই আওয়ামী লীগের পাশে থেকেছে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের নীতি-আদর্শই হচ্ছে জনগণের কল্যাণ, উন্নতি ও তাদের উন্নত জীবনদান। এ লক্ষ্য নিয়েই আওয়ামী লীগ কাজ করে যাচ্ছে। স্বাধীনতার পর বিশ্বের যারা দেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে ঠাট্টা করেছিল, আজ তারাই স্বীকার করে বলছে, বাংলাদেশ উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে এগিয়ে যাচ্ছে। বঙ্গবন্ধুর আদর্শে গড়ে ওঠা বাংলাদেশ কোনোদিন পিছিয়ে যাবে না। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবেই।
দেশবাসীর সহযোগিতা কামনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটু সময় দিন আমরা দেশকে অভীষ্ট লক্ষ্যে নিয়ে যাব। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশকে শান্তিপূর্ণ, ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত, উন্নত-সমৃদ্ধ করে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তুলবই। প্রধানমন্ত্রী প্রশ্ন রেখে বলেন, ’৭৫-পরবর্তী দীর্ঘ ২১ বছর দেশের মানুষ কী পেয়েছে? খাদ্যঘাটতি, বিদ্যুত্সঙ্কট, দুর্নীতি, সন্ত্রাস, সার ও বিদ্যুত্ চাইতে গিয়ে মানুষকে গুলি খেয়ে মরতে হয়েছে। আর আওয়ামী লীগ চিরদিন ত্যাগ করে দেশের জন্য বড় বড় অর্জন এনে দিয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা সব দিক থেকে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। দারিদ্র্যের হার কমিয়ে এনেছি। প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সদ্ভাব বজায় রেখেই সব সমস্যার সমাধান করছি। সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনে বাংলাদেশ বলিষ্ঠ ভূমিকা রেখে চলেছে। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশ হবে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ-এ লক্ষ্য নিয়েই কাজ করে যাচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শে গড়া বাংলাদেশ কোনোদিন পিছিয়ে থাকতে পারে না, থাকবেও না। বাংলাদেশ যে পারবে ও পারে তা প্রতিটি ক্ষেত্রেই প্রমাণ দিচ্ছে। এ প্রসঙ্গে ভারতের সঙ্গে ওয়ানডেতে বাংলাদেশের সিরিজ জয়ের প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, বাংলাদেশ হচ্ছে রয়েল বেঙ্গল টাইগারদের দেশ। ক্রিকেটেও তার প্রমাণ দিয়েছি। বিশ্বচ্যাম্পিয়নকে আমরা পরাজিত করেছি। বাঙালি জাতি বরাবরই প্রমাণ দিয়েছে যে, তাদের একটু সুযোগ দিলে তারা যেকোনো অসাধ্য সাধন করতে পারে। বাংলাদেশকে অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছে দিতে আমরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে বিশ্বের বুকে উন্নত-সমৃদ্ধিশালী দেশ হিসেবে আমরা বাংলাদেশকে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তুলবই।