আসন্ন চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি থেকে
বাংলাদেশকে বাদ দিতে নতুন ষড়যন্ত্র শুরু করেছে পাকিস্তান ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলার জন্য শর্ত ইতোমধ্যেই পূরণ করেছে বাংলাদেশ।
ভারতের
বিপক্ষে সদ্য শেষ হওয়া ওয়ানডে সিরিজ জয় করেই ২০১৭ সালে ইংল্যান্ডে
অনুষ্ঠেয় চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলা নিশ্চিত করে টাইগাররা। তবে সেই
নিশ্চয়তায় ষড়যন্ত্র শুরু করেছে পাকিস্তান-ওয়েস্ট ইন্ডিজ। পার্শ্ব চরিত্রের
ভূমিকায় আছে জিম্বাবুয়ে।
র্যাংকিংয়ে
বাংলাদেশের নীচে চলে যাওয়ায়, ত্রিদেশীয় সিরিজ খেলতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে
পাকিস্তান ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ। আর তা আয়োজন করতে চায় জিম্বাবুয়ে। এ ত্রিদেশী
সিরিজের বেড়াজালে বাংলাদেশকে পেছনে ফেলে র্যাংকিং-এ উপরে উঠে চ্যাম্পিয়ন্স
ট্রফির টিকিট পেতে আচমকা রহস্যময় ষড়যন্ত্রের ফাঁদ পাতচ্ছে
পাকিস্তান-ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
ইন্টারন্যাশনাল
ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) নিয়ম অনুযায়ী চলতি বছর ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত
ওয়ানডে র্যাংকিংয়ের শীর্ষ আটটি দল ইংল্যান্ডে ২০১৭ চ্যাম্পিয়ন ট্রফিতে
খেলার সুযোগ পাবে। সেই মোতাবেক র্যাংকিংয়ে নিজের অবস্থান নিয়ে চিন্তায় পড়ে
বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
কারণ র্যাংকিংয়ের সাত থেকে নয় নম্বর জায়গায় ছিলো এই তিনদলই।
আট
নম্বরের মধ্যে থাকতে হলে অক্টোবর পর্যন্ত আন্তার্জাতিক অঙ্গনে নিজ নিজ
খেলায় জিতে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে নিজেদের জায়গাটা পাকাপোক্ত করার শর্তে পড়ে
যায় বাংলাদেশ-পাকিস্তান-ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ছয় নম্বরে থাকা ইংল্যান্ডের অবস্থা
ভালো থাকায়, এই শর্ত নিয়ে মাথা ঘামানোর দরকার নেই তাদের।
তাই
শর্তকে মাথায় রেখে, বিশ্বকাপের পরই দেশের মাটিতে ওয়ানডে সিরিজে
পাকিস্তানকে ৩-০ ব্যবধানে হারানোর লজ্জা দেয় বাংলাদেশ। ফলে বাংলাদেশের
সামনে সমীকরণ দাঁড়ায়, অক্টোবরের আগে ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে
পরবর্তী দু’টি সিরিজের ৬ ম্যাচ থেকে দু’টি জয় তুলে নিতে পারলেই
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে হেসেখেলেই অংশ নিতে পারবে। সেই কাজটা ভারতের বিপক্ষে
সিরিজের প্রথম দু’ম্যাচ জিতেই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি নিশ্চিত করে ফেলে
টাইগাররা। ফলে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে পাকিস্তান বা ওয়েস্ট ইন্ডিজের যেকোন
একটি দল খেলতে পারবে না তাও নিশ্চিত হয়ে যায়।
কারণ
অক্টোবরের আগে শ্রীলংকার সাথে পাকিস্তানের ওয়ানডে সিরিজ রয়েছে। আর ওয়েস্ট
ইন্ডিজের কোন খেলাই নেই। তাই শ্রীলংকার বিপক্ষে পাকিস্তান ৪-১ বা ৩-২
ব্যবধানে জিতলেই ওয়েস্ট ইন্ডিজকে টপকে র্যাংকিং-এ অস্টমস্থানে উঠে যাবে।
ফলে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলবে পাকিস্তান, বাদ পড়বে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
আর
যদি শ্রীলংকার কাছে ৩-২ ব্যবধানেও হারে পাকিস্তান। তাতেও চ্যাম্পিয়ন্স
ট্রফিতে পাকিস্তানের খেলার সম্ভাবনাটা কঠিনই হবে। সেক্ষেত্রে ওয়েস্ট
ইন্ডিজের সাথে ভগ্নাংশের কঠিন এক হিসাবের মারপ্যাচে পড়তে হবে পাকিস্তানকে।
মারপ্যাচে পড়বে ওয়েস্ট ইন্ডিজকেও।
তাই
এতসব মারপ্যাচের হিসাবে জড়াতে চাইছে না পাকিস্তান-ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
বাংলাদেশকে সড়ানোর জন্য রহস্যময় ষড়যন্ত্রের নকশা আঁকতে যাচ্ছে তারা। আগস্টে
পাকিস্তান দলের জিম্বাবুয়ে সফর রয়েছে। কিন্তু এবার আফ্রিকার দেশটিতে
ত্রিদেশীয় সিরিজ খেলার আগ্রহ প্রকাশ করেছে দু’দলই।
এই
নিয়ে জিম্বাবুয়ের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ‘পাকিস্তানের তো এখানে তিন
ম্যাচের সিরিজ খেলার কথা ছিলো। তবে দ্বি-পাক্ষিক সিরিজ নয়- পাকিস্তানের
সাথে আলাপ-আলোচনা করে ত্রিদেশীয় সিরিজ খেলতে আমরা ওয়েস্ট ইন্ডিজকে আমন্ত্রণ
জানিয়েছি। তবে এখনো কিছুই চূড়ান্ত হয়নি।’
তাই এখন অনেক বড় প্রশ্ন হচ্ছে, ‘হঠাৎ করে কেন এই ত্রিদেশীয় সিরিজের পরিকল্পনা?’
অনেক
হিসাব-নিকাশের পর অনেক বড় প্রশ্নের উত্তরটা এভাবেই দেয়া যায়- যদি দক্ষিণ
আফ্রিকার কাছে আসন্ন ওয়ানডে সিরিজে বাংলাদেশ ৩-০ ব্যবধানে হেরে যায়।
আর
পাকিস্তান যদি শ্রীলংকার বিপক্ষে ৪-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতে, সেক্ষেত্রে
পাকিস্তানের রেটিং হবে ৯১.৭। বাংলাদেশের হবে ৮৯.৯ রেটিং। ওয়েস্ট ইন্ডিজের
থাকবে ৮৮.৪ রেটিং। তাহলে, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলবে পাকিস্তান ও
বাংলাদেশ। কিন্তু চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি থেকে বাংলাদেশকে বাদ দেয়ার জন্য
রহস্যময় ষড়যন্ত্রের নকশা আঁকছে পাকিস্তান ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
ত্রিদেশীয়
সিরিজে খেলে নিজেদের রেটিংয়ের উন্নতি করে বাংলাদেশকে পেছনে ফেলে
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলার স্বপ্ন দেখছে পাকিস্তান ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ। কারণ
অনেক ‘যদি’র উপর নির্ভর করতে চাইছে না তারা। শেষ মুর্হূতে সিরিজ আয়োজন করে
নিজেদের মত লক্ষ্য পূরণ করতে হিংস্র হয়ে উঠেছে পাকিস্তান ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
তবে
এমন ষড়যন্ত্র করে কোন লাভ হবে না পাকিস্তান ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের, যদি দক্ষিণ
আফ্রিকার বিপক্ষে অন্তত একটি ওয়ানডে জিততে পারে বাংলাদেশ।
একটি
ওয়ানডে জিতলেই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি নিশ্চিত হবে টাইগারদের। হয়তো এবারও
পারবে বাংলাদেশ। ষড়যন্ত্রের দাঁত ভাঙ্গা জবাবটা ২২ গজেই দিতে পারবে
মাশরাফিবাহিনী। কারণ, বাংলাদেশকে নিয়ে অনেক ষড়যন্ত্রের জবাবটা তো ওই ২২ গজে
অতীতে বহুবার দিয়েছেও বাংলার টাইগাররা।