যেভাবে অনশন করবেন এরশাদ

S M Ashraful Azom
10 ইনস্টলমেন্ট পদ্ধতি
জাতির জন্য প্রয়োজন আজ আমরণ অনশন। যা পালন করা হবে দিনে চারটি ইনস্টলমেন্টে। ব্রেকফাস্ট থেকে লাঞ্চ, লাঞ্চ থেকে ডিনার, ডিনার থেকে ব্রেকফাস্ট। এভাবে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরণ অনশন চলতেই থাকবে। রাজি থাকলে লাঙলে চাপুন। দাবিটা যেন কী ছিল?
দ্বিধা পদ্ধতি
সকালে নাশতার পর এরশাদ বলবেন, ‘আমি আমরণ অনশনে গেলাম।’ দুপুরে বলবেন, ‘নাহ্, অনশনে কাজ হবে না!’
অতঃপর দুপুরে পেটপুরে খেয়ে, কুলকুচি করতে করতে বলবেন, ‘আমরণ অনশন ছাড়া আমি এ জাতিকে রক্ষার আর কোনো উপায় দেখছি না।’
ভুলে যাওয়া পদ্ধতি
সকালে সংবাদ সম্মেলন করে ঘোষণা দেওয়া হবে, ‘অনশন! অনশন! অনশন! আজ থেকে শুরু হচ্ছে টিভি চ্যানেলব্যাপী বিশাল আমরণ অনশন!’ এ পদ্ধতিতে খিদে পেলেই বলতে হবে, ‘অনশন? এ রকম সহিংস ও সন্ত্রাস সৃষ্টিকারী আন্দোলনের কথা আমরা বলতেই পারি না! এসব মিডিয়ার সৃষ্টি ছাড়া আর কিছু নয়।’
সেমিনার পদ্ধতি
আমরণ অনশনের ঘোষণা দেওয়া কোনো বিষয় নয়। কিন্তু করে দেখানো অতি কঠিন। সে ক্ষেত্রে পেটের ভেতরে যখন ছুঁচো দৌড়াতে শুরু করবে, তখন ‘আমরণ অনশন’ লেখা ব্যানারটির ঠিক নিচেই লিখে দিতে হবে, ‘সেমিনারের বিষয়: আমরণ অনশন, জাতিকে কোন পথে নিয়ে যাচ্ছে? গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় অামরণ অনশন কি কোনো মানবিক সমাধান হতে পারে?’ অতঃপর সবার সামনে এক বোতল পানি আর এক প্যাকেট সুস্বাদু খাবার সরবরাহপূর্বক অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্ব শুরু করা যেতে পারে।
অসুস্থ পদ্ধতি
প্রথমে আমরণ অনশনের ডাক দিতে হবে। তারপর হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে ‘পেটব্যথায় মরে যাচ্ছি’ বলে। সবশেষে অনশন চালিয়ে যাওয়ার জন্য জাতির প্রতি আহ্বান জানিয়ে কর্তব্য পালন অব্যাহত রাখতে হবে। তবে, ডাক্তার পথ্য হিসেবে কিছু খেতে দিলে খেলেও আমরণ অনশন ভাঙবেন না বলেই তাঁর পক্ষের বিশেষজ্ঞ আইনজীবীরা মত দিতে পারেন।
উদ্ভট ব্যাখ্যা পদ্ধতি
অনশন মানেই যে না খেয়ে থাকা নয়, প্রথমে এ ব্যাপারটি খোলাসা করাই এ পদ্ধতির প্রথম চ্যালেঞ্জ। দ্বিতীয় চ্যালেঞ্জটি হলো, অনশন করব বললেই যে করতে হবে, এমন কোনো কথা যে নেই, সেটা ক্যালকুলাস দিয়ে প্রমাণ করা। সব শেষ চ্যালেঞ্জ হতে পারে, ‘অনশন করব, এটা আমি কখনোই বলিনি, এটা আপনারা ভুল শুনেছেন।’
ট্যাগস

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top