“পচা” গম নিয়ে খাদ্যমন্ত্রীর চ্যালেঞ্জ

S M Ashraful Azom
ব্রাজিল থেকে আমদানি করা ~পচা” গম নিয়ে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়েছেন খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম। তিনি বলেছেন, যে কেউ আসুক, পারলে এই গমকে পচা প্রমাণ করুক, তাকে চ্যালেঞ্জ দেয়া হলো। তবে চ্যালেঞ্জে গম পচা প্রমাণিত হলে তিনি পদত্যাগ করবেন কিনা এ ব্যাপারে তিনি মুখ খুলেননি।


আজ রবিবার দুপুরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে খাদ্যমন্ত্রী এ চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেন।


কামরুল দাবি করেন, ব্রাজিল থেকে আমদানি করা গম পচা নয়, এ গম খাদ্যের উপযোগী। যারা এই গমকে পচা বলছে তাদের প্রতি চ্যালেঞ্জ রইল। তারা পারলে যেকোনো প্রতিষ্ঠানে পরীক্ষা করে তা পচা প্রমাণিত করুক।


তবে খাদ্যমন্ত্রী জানান, ব্রাজিল থেকে আমদানি করা গমে কিছু সমস্যা পাওয়া যাওয়ায় দুই লাখ টন গম ফেরত দেয়া হয়েছে। আগামীতে ব্রাজিল থেকে আর গম আমদানি করা হবে না বলেও জানান মন্ত্রী।


খাদ্যমন্ত্রী বলেন, চার মাস আগে যে সব প্যারামিটারের (মানদণ্ড) ভিত্তিতে ব্রাজিলের গম আমরা যেভাবে রিসিভ করেছিলাম, পরীক্ষা করে দেখা গেছে এখনও তেমন আছে। এ গম সম্পূর্ণ খাওয়ার উপযোগী। খাদ্য অধিদপ্তর ও সায়েন্স ল্যাবরেটরির (বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ) পরীক্ষায় এটা স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে। গমের মান নিয়ে আমি স্যাটিসফাইড (সন্তুষ্ট)।’এরপরও যদি টিআইবি (ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ), সুজন (সুশাসনের জন্য নাগরিক), পত্র-পত্রিকার সংবাদিক রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ কারো যদি সন্দেহ থেকে থাকে আমি তাদের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিচ্ছি। তারা আমাদের যেকোনো গোডাউন থেকে গম সংগ্রহ করে যেকোনো জায়গায় পরীক্ষা করতে পারে। আমি এজন্য তাদের সহযোগিতাও করবো।


খাদ্য একটি সংবেদনশীল বিষয় উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘সবার কাছে সনির্বন্ধ অনুরোধ জানাই, এটাকে নিয়ে কেউ রাজনীতি ও মিথ্যাচার করবেন না।


ব্রাজিল থেকে “পঁচা ও খাওয়া অনুপযোগী”  গম আমদানি করা হয়েছে বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে কিছুদিন ধরে সংবাদ প্রকাশিত হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন মহলে ব্যাপক সমালোচনা হচ্ছে।


সমালোচনার মধ্যে গমের নমুনা খাদ্য অধিদপ্তরে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। সেই পরীক্ষার রিপোর্ট পাওয়ার পর গত ২৪ জুন একটি বিবৃতি দেয় খাদ্য মন্ত্রণালয়।


এতে জানানো হয়, ব্রাজিল থেকে আসা গম চুক্তি অনুযায়ী পাওয়া গেছে। বিভিন্ন জেলা থেকে নেওয়া নমুনা পরীক্ষা করে পঁচা কিংবা মানুষের খাওয়ার অনুপযোগী কোনো গম পাওয়া যায়নি।


একই সঙ্গে বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদের খাদ্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ইনস্টিটিউটে পরীক্ষার জন্য নমুনা দেওয়া হয়। সেই পরীক্ষার প্রতিবেদন পাওয়ার পর রবিবার সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন খাদ্যমন্ত্রী।


তিনি বলেন, ‘আমার এ রিপোর্টে আপনাদের যদি সন্দেহ থাকে আরো যদি পাণ্ডিত্য ফলানোর কিছু থেকে থাকে যে এটা করতে হবে। তবে আপনারা তা স্ব-উদ্যোগে করতে পারেন। আমি আপনাদের সহযোগিতা করবো।’


খাদ্যমন্ত্রী বলেন, অযথা এ বিষয়টি নিয়ে মিথ্যাচার করবেন না। দয়া করে মানুষকে বিভ্রান্ত করবেন না। একটা সরকারের ভাবমূর্তি, আমার ভারমূর্তি, মন্ত্রণালয়ের ভারমূর্তি নষ্ট করবেন না। দয়া করে মিথ্যাচার থেকে বিরত থাকুন। এখনও যদি কেউ আবার মিথ্যাচারে লিপ্ত হয়, তবে তা হবে জঘন্য অপরাধ।


তিনি বলেন, পরীক্ষার বিষয়ে আমরা অবশ্যই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়কে জানাবো। এটা তো প্রধানমন্ত্রীর ভাবমূর্তিও ক্ষুণ্ন করা।


পত্রিকায় প্রকাশিত গমের ছবির সঙ্গে খাদ্য অধিদপ্তরের গোডাউনে থাকা গমের কোনো মিল নেই বলে দাবি করে মন্ত্রী বলেন, চলতি বছর ৩৪ লাখ টন গম আমদানি হয়েছে। তার মধ্যে ব্রাজিলের কিছু গম থাকতে পারে।


এদিকে, খাদ্য মন্ত্রণালয় থেকে বিকালে আবারও বিবৃতি দেওয়া হয়েছে। রবিবার দুপুরে সাংবাদিকদের সঙ্গে বলা কথাই বিবৃতিতে তুলে ধরা হয়েছে।

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top