ফাঁকা হচ্ছে ঢাকা

S M Ashraful Azom
ফাঁকা হয়ে আসছে যানজট আর ব্যস্ততার নগরী ঢাকা। ধীরে ধীরে বদলে যাচ্ছে তার চিরচেনা রূপ। পরিবার-পরিজনের সঙ্গে ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করতে নাড়ির টানে ছুটছেন রাজধানীর লাখ লাখ মানুষ। বুধবার একটানা বৃষ্টি নগরজীবনে দুর্ভোগ বয়ে আনলেও ঘরমুখো মানুষের বেলায় তা বাধা হতে পারেনি। বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করেও এদিন গন্তব্যে ছুটেছেন অগণিত মানুষ। বৃহস্পতিবার শেষ কর্মদিবস হলেও বুধবার লাইলাতুল কদরের ছুটি থাকায় একদিন হাতে রেখেই বাড়ির দিকে ছুটেছেন ঘরমুখো মানুষেরা। ঢাকার কর্মব্যস্ত মানুষ বুধবার সকাল থেকেই নাড়ির টানে বাসে, ট্রেনে, লঞ্চে যে যার মতো করে ছুটছেন নিজ ঠিকানায়। সিট সংকুলান না হওয়ায় অনেককেই বাস, ট্রেন ও লঞ্চের ছাদে বাড়ি ফিরতে হয়েছে। বৃহস্পতিবার ঢাকার পথে পথে যাত্রীদের চাপ ছিল উল্লেখ করার মতো। পথে যানজট-জলজটসহ নানা ঝক্কি-ঝামেলা থাকলেও ঘরমুখো যাত্রীদের মধ্যে আনন্দের যেন কমতি নেই। লঞ্চ, বাস এবং ট্রেনে বাড়ি যেতে নগরীর প্রতিটি টার্মিনালেই এখন যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড়। নানা বিড়ম্বনার মধ্যেই যেন আলাদা আনন্দ খুঁজে পাচ্ছেন যাত্রীরা। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে শনি অথবা রবিবার পবিত্র ঈদুল ফিতর অনুষ্ঠিত হবে। শুক্রবারের মধ্যে ঢাকার রাস্তাঘাট আরও ফাঁকা হয়ে যাবে। শুধুমাত্র দুই ঈদেই রাজধানী ফাঁকা হয়ে যায়। তখন চিরচেনা এ নগরীকে চেনা মুশকিল। এ সময়ে যারা ঢাকা থাকেন তারাই দেখেন ঢাকার ফাঁকা ও অচেনা চেহারা। নগরীর বিভিন্ন টার্মিনাল ঘুরে দেখা গেছে— রাজধানী থেকে বাইরের দিকে যেসব পরিবহন যাচ্ছে সেগুলোতে তিল ধারণের যেন ঠাঁই নেই। লাখো মানুষের মিছিল এখন ছুটে চলছে। নাড়ির টানে প্রিয় মানুষের সান্নিধ্য পেতে। একে তো টিকেট বিড়ম্বনা তার ওপর টার্মিনালে টানা হেঁচড়া। এরপরেও ক্রমেই দীর্ঘতর হচ্ছে ঘরমুখো উৎসবমুখর জনস্রোত। সকাল থেকে মধ্যরাত অবধি নগরীর মহাখালী, সায়েদাবাদ, গাবতলী, সদরঘাট এবং কমলাপুরের দিকে ছুটছেন যাত্রীরা। বাস টার্মিনালগুলোতে দেখা গেছে বাসে যারা সিট পাচ্ছেন না তারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাচ্ছেন ছাদে করে কিংবা ইঞ্জিন কভারে অতিরিক্ত যাত্রী হয়ে। রাতে অনেক নিম্ন আয়ের মানুষ যাচ্ছেন ট্রাকে বা কাভার্ড ভ্যানে। রাজধানী বেশি ফাঁকা হবে এক দুদিনের মধ্যেই। সদরঘাট লঞ্চ মালিকরা জানিয়েছেন, বাধা দেওয়ার পরেও অনেক যাত্রী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অতিরিক্ত যাত্রী হয়ে বাড়ি যাচ্ছেন। ঈদপূর্ব সময়ে যাত্রীদের নিরাপত্তার জন্য প্রত্যেকটি টার্মিনালে নিয়োজিত করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ ও র‌্যাব সদস্য। কিন্তু তারপরেও কর্তৃপক্ষের নজর এড়িয়ে বাসের বহরে যুক্ত হয়েছে ফিটনেসবিহীন বাস। এদিকে সরকারি পরিবহন সংস্থা বিআরটিসি’র উদ্যোগে দেশের বিভিন্ন রুটে ঈদ স্পেশাল সার্ভিস শুরু হয়েছে। রাজধানীর মগবাজার, মৌচাক, পল্টন, গুলিস্তান দৈনিক বাংলাসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে রাস্তায় সাধারণ মানুষের জীবিকার ব্যস্ততা নেই। তবে রিকশা, সিএনজিচালিত অটোরিকশাসহ যাত্রী পরিবহনগুলোর চলাচল উল্লেখ করা মতো। 

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top