‘নজরুল ও রবীন্দ্রশিল্পীরা উত্সব থেকে বঞ্চিত থাকে’-লিনা তাপসী

S M Ashraful Azom
নজরুল সঙ্গীতশিল্পী লিনা তাপসী। সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গীত বিভাগের চেয়ারম্যান হিসেবে নিযুক্ত হয়েছেন তিনি। বিশ্ববিদ্যালয়ে সঙ্গীত বিভাগের অবস্থা ও শিক্ষার্থীদের পরবর্তী অবস্থান বিষয়ে জানালেন তিনি। এছাড়াও আমাদের দেশের সঙ্গীতের অবস্থা ও উত্সবে নজরুল ও রবীন্দ্রসঙ্গীতের অবহেলা প্রসঙ্গে কথা বললেন ইত্তেফাকের সঙ্গে।
 
বর্তমান ব্যস্ততা নিয়ে বলুন?
 
তিনটি অ্যালবামের কাজ নিয়ে ধীরে ধীরে এগুচ্ছি। ক্লাসিক্যাল, আধুনিক ও নজরুলসঙ্গীতের অ্যালবাম নিয়ে কাজ করছি। এছাড়া এখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গীত বিভাগের চেয়ারম্যান পদে দায়িত্বরত আছি। শিক্ষকতা নিয়ে ব্যস্ততা কাটছে।
 
ঈদের মতো এত বড় উত্সবে নজরুলসঙ্গীত বা রবীন্দ্রসঙ্গীত নিয়ে কোনো উদ্যোগ দেখা যায় না। এ বিষয়ে কী বলবেন?
 
এখানে মিডিয়া যদি কিছু না করে তাহলে আমরা শুধু বলতেই পারবো কিন্তু কোনো লাভ হবে না। নজরুল ও রবীন্দ্র উত্সব ছাড়া সারাবছর এ ধারা নিয়ে কোনো আলোচনা বা কথা বলতে কাউকে দেখা যায় না। মিডিয়া হয়তো বাণিজ্যিক চিন্তা থেকে এ চিন্তা করে না। নজরুল ও রবীন্দ্রশিল্পীরা উত্সব থেকে বঞ্চিত থাকে। এ অবহেলা ঘোচানো প্রয়োজন। না হলে তো আমরা মূল ধারা থেকে বাইরে চলে যাবো।
 
দেশের সঙ্গীত বিভাগগুলো থেকে যারা বের হচ্ছেন গণমাধ্যমে তাদের তেমন সরব দেখা যায় না। এর কারণ কী মনে করেন?
 
আসলে আমাদের সঙ্গীত শিক্ষাটা প্রাতিষ্ঠানিকভাবে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। এর আগে কয়েকটি স্কুল কলেজে সঙ্গীত বিভাগ থাকলেও সেগুলোর কার্যক্রম খুব একটা চোখে পড়ে না। চর্চাটা শুরু করতে হবে তৃণমূল থেকে। ছোটবেলা থেকে গানের সাথে সম্পৃক্ত না থাকলে সঙ্গীতের প্রতি সেই ভালোবাসাটা আসা সম্ভব না। যেমন ক্যাকটাসে অনেক কাঁটা থাকলেও শেকড় কিন্তু নরম। তেমন আমাদের শেকড়টা আগে শক্ত করতে হবে। তবে যারা বের হচ্ছে তারা কিন্তু বেকার কেউ বসে নেই। সঙ্গীত নিয়েই তারা কিছু না কিছু করছে। কিন্তু মিডিয়াতে সেভাবে কেউ আসছে না। তাই হতাশার কোনো জায়গা নেই।
 
শিক্ষার্থীদের উত্সাহী করে তুলতে আপনারা কতটুকু সচল?
 
আমরা চেষ্টা করছি যেন তারা শেকড়টা ছুঁতে পারে। সঙ্গীত মানে তো শুধুই গান গাওয়া নয়, যারা যে বিষয়ের প্রতি আগ্রহী আমরা তাকে সহযোগিতা করার চেষ্টা করি। ভালোবাসা সৃষ্টি গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের এখনও বাইরের বই পড়াতে হয়। কিন্তু যারা সঙ্গীত নিয়ে পড়ালেখা করে প্রাথমিক পর্যায়ে বই বের করতে পারে সেই বিষয়গুলোর প্রতি উত্সাহী করে তুলি।
 
শিক্ষার্থীদের জন্য অনুষদে কোনোকিছুর অভাব মনে করেন?
 
হ্যাঁ, বাদ্যযন্ত্রের অভাব খুব। কারণ সঙ্গীত মানে শুধু গান গাওয়া না। বাদ্যযন্ত্র ও সম্পৃক্ত সবকিছু মিলিয়ে সঙ্গীত। তাই সবকিছুর খানিকটা অভাব এখনও আছে। তবে শিগগিরই আমরা সেই জায়গাগুলো পূরণের চেষ্টা করছি। কর্তৃপক্ষ আমাদের সেই দিক থেকে অনেক সাহায্য করে। অন্যান্য বিভাগের চেয়ে আমাদের কোনো অংশে কম দেয়া হয় না।
 
এখনকার নতুন সঙ্গীতশিল্পী বিষয়ে কী বলবেন?
 
নতুনরা অনেক ভালো করছে। তাদের গলা অনেক ভালো। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে আমাদের ভালো গীতিকার, সুরকারের অভাব। একজন লতা মুঙ্গেশকর কিন্তু শুধু কণ্ঠ দিয়ে আজ এই অবস্থায় আসেননি। তার সাথে আছে ভালো কথা ও সুর। সার্বিক বিষয়ে আমরা হয়তো পিছিয়ে যাচ্ছি। ভালো কথা ও সুর হলে গায়ক-গায়িকা অনেক আছে।
ট্যাগস

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top