এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অর্থনীতিতে মোবাইল ফোন শিল্প প্রতি বছর এক ট্রিলিয়ন ডলারেরও বেশি (৭৭ লাখ ৬৮ হাজার ৯৯৫ কোটি টাকা) অবদান রাখছে। এ অঞ্চলে মোবাইল ব্রডব্যান্ড ও স্মার্টফোনের ব্যবহার বৃদ্ধির কারণে অর্থনীতিতে বড় ধরনের অবদান আসছে এই খাত থেকে। জিএসএমএ এর সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। জিএসএমএ বা গ্রুপ স্পেশাল মোবাইল অ্যাসোসিয়েশন হচ্ছে মোবাইল অপারেটর ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর একটি সংগঠন। সংগঠনটি জিএসএম মোবাইল টেলিফোন সিস্টেমের প্রচার, নেটওয়ার্ক প্রতিষ্ঠা ও মানদণ্ড ঠিক করতে সাহায্য করে। জিএসএমএর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বছরে অর্থাৎ ২০১৪ সালে এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে মোবাইল শিল্প এক দশমিক এক ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার অবদান রেখেছে, যা এই অঞ্চলের জিডিপির চার দশমিক সাত শতাংশের সমান যা ২০১৩ সালের তুলনায় ২০০ বিলিয়ন ডলার বেশি।জিএসএমএ এর মহাপরিচালক অ্যানি বোভেরট বলেন, ‘এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলটিতে বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত মোবাইল বাজারের বেশ কিছু বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করা যায়। এ ছাড়াও দ্রুত বর্ধনশীল বাজার হিসেবে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও ব্যাংকিংয়ের ক্ষেত্রে মোবাইল প্ল্যাটফর্মের ব্যবহারও লক্ষণীয়।’ অ্যানি আরও বলেন, ‘জিএসএমএ এর প্রতিবেদনে এশিয়া অঞ্চলে মোবাইল কিভাবে ডিজিটাল সমাজ গড়ে উঠছে তা উঠে এসেছে। এর পাশাপাশি ডিজিটাল কমার্স, ইন্টারনেট অব থিংস, মোবাইল ভিত্তিক পরিচিতির মাধ্যমে ডিজিটাল উদ্ভাবনীর নতুন যুগের সূচনা হচ্ছে— তা উঠে এসেছে।’ প্রতিবেদনটিতে আরও বলা হয়েছে, এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলটিতে এখন বিশ্বের অর্ধেক ইউনিক মোবাইল সাবসক্রিপশন ও মোবাইল সংযোগ রয়েছে। বৈশ্বিক গড়ের চেয়ে আগামী পাঁচ বছরে এ অঞ্চলে কীভাবে দ্রুতগতিতে মোবাইল ব্যবহারের হার বাড়বে সে বিষয়টিও এতে তুলে ধরা হয়েছে। ২০২০ সালের মধ্যে এ অঞ্চলে আরও ৬০ কোটি মোবাইল সাবসক্রিপশন বাড়বে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, মোবাইল অপারেটররা গত বছরে এই অঞ্চলের অর্থনীতিতে সরাসরি ২৮৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অবদান রেখেছে যা আঞ্চলিক জিডিপির এক দশমিক দুই শতাংশ। ২০২০ সাল নাগাদ মোবাইল শিল্প থেকে এক দশমিক আট ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার এই অঞ্চলের অর্থনীতিতে অবদান রাখা সম্ভব হবে বলে প্রতিবেদনে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। ২০২০ সাল নাগাদ এই অঞ্চলের আঞ্চলিক প্রবৃদ্ধি বা জিডিপি হবে পাঁচ দশমিক নয় শতাংশ। গত বছরে এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে মোবাইল শিল্পে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে এক কোটি ২৫ লাখ লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে যা ২০২০ সাল নাগাদ দেড় কোটি ছাড়াবে বলে প্রতিবেদনটিতে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। বোভেরট জানান, এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলটির মোবাইলভিত্তিক ডিজিটাল সমাজব্যবস্থা, নতুন ডিজিটাল ইকোসিস্টেমের প্রাণকেন্দ্র হিসেবে মোবাইলকে ধরে রাখার ক্ষেত্রে অনন্য সুযোগ রয়েছে। বাজার ব্যবস্থার উন্নয়ন, বিনিয়োগ ও উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে অনুপ্রেরণা দিয়ে ইতিবাচক সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের এক দশক বা তার বেশি এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে। মোবাইল শিল্পটি ব্যক্তিকেন্দ্রিক ক্ষেত্রগুলোতেও মূলধন জোগানোর ক্ষেত্রে অবদান রাখছে। গত বছরে সাধারণ কর হিসেবে এই শিল্প থেকে ১৩০ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত এসেছে, যা ২০২০ সাল নাগাদ ১৫০ কোটি মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে। (আইএএনএস)