সেবা ডেস্ক: এই ইনিংসটার জন্য পুরো বাংলাদেশের অপেক্ষা ছিল। সাব্বির রহমান রুম্মনকে বলা হয় বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের একমাত্র বিজ্ঞাপন। সামনে যখন টি-টোয়েন্টি এশিয়া কাপ ও বিশ্বকাপ। এই মারকুটে ব্যাটসম্যানের দিকে সবার চেয়ে থাকাই স্বাভাবিক।
কিন্তু সাব্বির কিছুতেই নিজেকে খুঁজে পাচ্ছিলেন না। গ্রুপ পর্বের ধারাবাহিক ব্যর্থতার পর এলিমিনেটর ম্যাচে কিছুটা নিজেকে খুঁজে পেয়েছিলেন। তারপরও ‘সেই রুম্মন’কে পাওয়া যাচ্ছিলো না।
অবশেষে রুম্মন ফিরলেন। ক্রিস গেইলের নাম ভুলিয়ে দেয়া একটা ইনিংস খেললেন। ৪৯ বলে ৭৯ রানের চমত্কার এক ইনিংস খেলেন সাব্বির। ৭টি চার ও ৩টি ছক্কায় গড়া এই ইনিংস তাকে এনে দেয় ম্যাচ সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার। কিন্তু চার-ছয় দিয়ে সাব্বিরের এই ইনিংস বোঝা যাবে না।
যে ত্রাস, যে শক্তি ও যে প্রভাব তিনি দেখিয়েছেন, তা এক কথায় অতুলনীয়। সাব্বির নিজেও বলছিলেন, এমন একটা ইনিংসের জন্য অপেক্ষায় ছিলেন তিনি। তারপরও সাব্বিরের একটু আক্ষেপ আছে। সেই আক্ষেপটা ম্যাচ শেষ করে আসতে না পারার, আক্ষেপ তো আছেই। শেষ করে আসতে চেয়েছিলাম। একই সঙ্গে চেষ্টা করছিলাম, শেষ ওভার পর্যন্ত ম্যাচটি না নিতে। এজন্যই চেষ্টা করছিলাম শট খেলতে।
১৮তম ওভারে থিসারা পেরেরার বলে একবার জীবন পেলেও কাজে লাগাতে পারেননি সাব্বির। সেই ওভারে আবার লং অন দিয়ে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ড্যারেন স্যামির দুর্দান্ত এক ক্যাচে পরিণত হন তিনি। সাব্বির আউট হলে গেলেও এই দানবীয় ব্যাটিংই আসলে গত পরশুর কোয়ালিফায়ারে পার্থক্য গড়ে দিয়েছে বলে বলছিলেন প্রতিপক্ষ অধিনায়ক সাকিব আল হাসানও, ‘আমরা সাধ্যমত চেষ্টা করেছি। সবাই শতভাগ উজার করে দিয়েছি। কিন্তু দিনটি আমাদের ছিল না। সাব্বিরকে কৃতিত্ব দিতেই হবে। আমাদের কাছ থেকে ম্যাচটি কেড়ে নিয়েছে বরিশাল।’
সাব্বিরের ৪৯ বলে খেলা সাব্বিরের ইনিংসটি গড়া ৭টি চার ও ৩টি ছক্কায়। ষোড়শ ওভারে আরাফাত সানির অফ স্টাম্পের বাইরের বল টেনে ডিপ মিডউইকেট দিয়ে গ্যালারিতে নিয়ে ফেলেন তিনি। এই সময়ে নিজেদের সেই গ্যালারির দিকে কিছু একটার ইঙ্গিত করেন তিনি, ম্যাচ শেষে যার ব্যাখ্যা দিয়েছেন এই তরুণ, একজন ব্যাটসম্যানের ফর্ম খারাপ যেতেই পারে। সবার সেটা বোঝা উচিত। সবাই কামব্যাক করতে চায়। আমি কামব্যাক করেছি। এজন্য দর্শকদের দেখাচ্ছিলাম যে আমিও টি-টোয়েন্টি খেলতে পারি। ভুলে যাইনি।
কয়েক ম্যাচ খুব একটা রান না পাওয়াতেই ‘সাব্বির টি-টোয়েন্টিতে চলে না’, ‘সাব্বির টি-টোয়েন্টির ক্রিকেটার না’ এমন মন্তব্য শুনে হতাশ জাতীয় দলের এই ব্যাটসম্যান, আমি কিছু লোকজনকে দেখিয়েছি যে আমিও পারি; এটাই আর কী। আমি জানি, এটাই (টি-টোয়েন্টি) আমার খেলা। টি-টোয়েন্টি দিয়েই আমি জাতীয় দলে ঢুকেছি, এখান থেকেই অনেক কিছু গড়েছি। এটাই আমার খেলা।
