তীব্র মাত্রার ভূমিকম্পের আশঙ্কা

S M Ashraful Azom
0
সেবা ডেস্ক:  সোমবার আঘাত তেমন তীব্র না হলেও এই অঞ্চলে আরো তীব্র মাত্রার ভূমিকম্পের আশঙ্কা করছেন বিজ্ঞানীরা। তারা বলছেন, এই অঞ্চলের ভূ-গর্ভে যে বিপুল পরিমাণ শক্তি জমা হয়েছে এখনো সেই শক্তির সবটা ক্ষয় হয়নি। জমে থাকা শক্তি নিজেকে নিঃশেষ করার জন্য বেছে নিতে পারে ভূমিকম্পের মতো ভয়াল পথ। এটা হতে পারে নেপাল এবং আশপাশের ভারতীয় রাজ্যগুলোতে। সে হিসেবে বাংলাদেশও আশঙ্কার বাইরে নয়। যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও সিঙ্গাপুরের ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞদের একটি দল গত কয়েক মাস গবেষণা করে এ তথ্য প্রকাশ করেছেন। বিজ্ঞানীদের মতে, যে মাত্রায় ভূমিকম্পের আশঙ্কা করা হয়েছে তাতে তিন থেকে চার লাখ লোকের প্রাণহানি হতে পারে।
 
তবে বিজ্ঞানীরা এ বিষয়ে উদ্বিগ্ন বা বিচলিত না হয়ে আরো সাবধান হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। বিশেষ করে ভবন নির্মাণে ভূমিকম্প সহনশীলতার বিষয়টিতে কোনো রকম ছাড় না দেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তারা। সাথে সাথে সম্ভাব্য এলাকায় নজরদারি বাড়ানোর পরামর্শ তাদের। তবে ভূমিকম্প কবে আঘাত হানবে তা বলা মুশকিল বলে জানিয়েছেন তারা।
 
নেপাল এবং ভারতে শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানলে বাংলাদেশেও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করেছেন বিশেষজ্ঞরা। বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. মেহেদী হাসান আনসারি বলেন, অতীতে বাংলাদেশ এবং ভারতের সীমানায় যে ভূমিকম্পগুলো হয়েছে সেগুলোতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের আশপাশে শক্তিশালী ভূমিকম্প হলে তার প্রভাব বাংলাদেশেও পড়বে। এজন্য তিনি ভূমিকম্প-সহনীয় ভবন তৈরির পরামর্শ দেন। বাংলাদেশ সরকার এ ক্ষেত্রে তিনটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে বলেও জানান তিনি। 
 
উল্লেখিত তিন দেশের গবেষক দলের প্রধান অধ্যাপক জ্যাঁফিলিপ অভুয়াক বলেছেন, ‘এই অঞ্চলটি বিশেষভাবে দৃষ্টি আকর্ষণের দাবি রাখে। আজই যদি সেখানে একটা ভূমিকম্প হয়, তার ভয়াবহতা হবে ব্যাপক। কেননা গাঙ্গেয় সমভূমিতে শুধু পশ্চিম নেপাল নয়, উত্তর ভারতও অধিক জনঘনত্বের অঞ্চল।’ এ অঞ্চলের অনেকে বাড়িঘর তৈরিতে তেমন সাবধানতা অবলম্বন করে না। আমি তাদের পরামর্শ দেব ছোট ছোট বাড়ি তৈরি করতে, যাতে ক্ষয়ক্ষতি এবং প্রাণহানি এড়ানো যায়।
 
উল্লেখ্য, গত বছর ২৫ এপ্রিল ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হেনেছিল হিমালয় কন্যা নেপালে। এতে প্রায় নয় হাজার মানুষের প্রাণহানি ঘটে। আহত হয় হাজার হাজার মানুষ। হাজার হাজার মানুষ হয় গৃহহীন। ওই ভূমিকম্পটা হয়েছিল এমন এক ভূ-তাত্ত্বিকভাবে সংঘর্ষপ্রবণ এলাকায় যেখানে ইন্ডিয়ান টেকটোনিক প্লেট প্রতি বছর ২ সেন্টিমিটার করে উত্তরভাগকে ঠেলে দিচ্ছে ইউরেশিয়া প্লেটের দিকে। ওই একটি প্লেট আর একটি প্লেটের নিচে যত শক্তিতে ঢুকে যাবে ভূমিকম্পের মাত্রাও তত তীব্র হবে। ভারতের প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূ-বিদ্যা বিভাগের প্রাক্তন অধ্যাপক হরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য এ বিষয়ে বলেন, একটি প্লেট আরেকটি প্লেটের উপরে উঠে যাওয়া কিংবা পিছলে নিচে চলে যাওয়াটা একটি স্বাভাবিক প্রাকৃতিক ব্যাপার। বহু বছর পর পর এমনটি হয়ে থাকে। একটি বা দুইটি বড় ধরনের ভূমিকম্প ভূ-গর্ভের গভীরে চলমান ও ক্রমবর্ধমান অস্থিরতাকে বাড়িয়ে দেয়। এর ফলে একটি ভূমিকম্পের পর ওই অঞ্চলে পর পর অনেকগুলি ভূমিকম্পের আশঙ্কা থাকে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top