সেবা ডেস্ক: গত রবিবার ভোররাতে পুত্তিঙ্গাল দেবীর ওই মন্দিরে এক ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ১১০ জন নিহত ও ৩৮৩ জন আহত হন। আগামী বৃহস্পতিবার মালায়ালাম পঞ্জিকা অনুযায়ী কেরালায় শুরু হবে নতুন বছর। নতুন বছরের প্রথম মাস মেদাম-র প্রথম সপ্তাহজুড়ে কেরালায় বিশু উৎসব পালন করা হয়। বিশু উৎসবে অন্যতম অনুষঙ্গ হলো আলোকসজ্জা ও আতশবাজির প্রদর্শনী। বর্ষবরণ উৎসবের প্রস্তুতির মধ্যে পুত্তিঙ্গাল মন্দিরে আতশবাজির স্তূপে বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। রাত সাড়ে ৩টার দিকে বিস্ফোরণ ঘটলে বিস্ফোরণের ধাক্কায় মন্দিরের একটি ভবন ধসে পড়ে এবং আগুন ধরে যায়। স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, পার্বণে যোগ দিতে হাজার হাজার হিন্দু ভক্ত রাতে ওই মন্দিরে জড়ো হয়েছিলেন। বিস্ফোরণে ভবন ধসের কারণেই বেশিরভাগ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনা স্বত্বেও রাজ্যটির অন্যতম প্রভাবশালী মন্দির কর্তৃপক্ষ ট্রাভানকোর দেভাস্বোম বোর্ড, যাদের নিয়ন্ত্রণে এক হাজার দুইশরও বেশি মন্দির আছে, আতশবাজির প্রদর্শনী নিষিদ্ধ করবে না বলে জানিয়েছে। বোর্ডের সভাপতি এনডিটিভিকে জানিয়েছেন, কোনো পরিস্থিতিতেই আতশবাজির প্রদর্শনী বন্ধ করা হবে না, নিরাপত্তা নিশ্চিত করা কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব। শোচনীয় ঘটনাটির পরপরই মন্দিরের কর্মকর্তারা পালিয়ে যান। তাদের বিরুদ্ধে পুলিশ বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছে। পুলিশের অপরাধ তদন্ত শাখার একটি দলকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। পুত্তিঙ্গাল মন্দিরে আতশবাজির দায়িত্ব পাওয়া ঠিকাদারের বিরুদ্ধেও মামলা দায়ের করা হয়েছে। কেরালার মুখ্যমন্ত্রী ওম্মেন চান্দি জানিয়েছেন, ‘প্রতিযোগিতামূলক আতশবাজি’ প্রদর্শনীর অনুমতি ছিল না মন্দিরটির। মন্দিরের কাছে বাস করা এক নারীর অভিযোগের ভিত্তিতে জেলা প্রশাসন ওই মন্দিরের আতশবাজি প্রদর্শনী নিষিদ্ধ করেছিল। নিষিদ্ধ থাকার পরও পুলিশ কেন আতশবাজি প্রদর্শনী বন্ধ করে দিলো না এমন প্রশ্নের উত্তরে কেরালার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বিষয়টি পুলিশের ব্যর্থতা নয় বলে দাবি করেছেন। তিনি বলেন, যখন লাখ লাখ মানুষ জড়ো হয়, তখন পুলিশ কোনো পদক্ষেপ নিতে গেলে অন্য সমস্যা তৈরি হতে পারে। আহতদের কোল্লামের আশপাশের ১০টি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সংকটাপন্নদের হেলিকপ্টারে করে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। নৌবাহিনীর তিনটি জাহাজ এবং বিমান ও নৌ বাহিনীর ১০টি আকাশযান উদ্ধার অভিযানে অংশ নিয়েছে। নিহতদের প্রত্যেকের পরিবারকে ১০ লাখ রুপি ক্ষতিপূরণ দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী চান্দি। ক্ষতিগ্রস্ত প্রত্যেককে দুই লাখ রুপি করে ক্ষতিপূরণ দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। রোববার ১৫ জন বার্ন স্পেশালিস্ট সঙ্গে নিয়ে তিনি কোল্লামের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ভারতীয় কংগ্রেসের সহসভাপতি রাহুল গান্ধিও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এনডিটিভি।


খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।