২০২০ সালের মধ্যে ৬৭ ভাগ বন্যপ্রাণী হারিয়ে যাবে

Unknown
সেবা ডেস্ক:  গত চার দশকে বিশ্বে বন্যপ্রাণীর সংখ্যা ৫৮ শতাংশ কমেছে। বন্যপ্রাণী কমার বর্তমান প্রবণতা চলতে থাকলে ২০২০ সালের মধ্যে মেরুদণ্ডী প্রাণীর সংখ্যা দুই-তৃতীয়াংশ হারিয়ে যাবে। জুলজিক্যাল সোসাইটি অব লন্ডন (জেএসএল) ও ওয়ার্ল্ড ওয়াইল্ডলাইফ ফাউন্ডেশনের (ডব্লিউডব্লিউএফ) ‘লিভিং প্লানেট অ্যাসেসমেন্ট’ নামে এক প্রতিবেদনে এ দাবি করা হয়েছে। খবর: বিবিসি ও গার্ডিয়ানের।
 
প্রতিবেদন অনুযায়ী সংগঠন দুইটির হিসাবে বন্যপ্রাণীর তালিকায় জলাভূমি, মরুভূমি, স্থলে থাকা ৩ হাজার ৭০০ প্রজাতির মেরুদণ্ডী প্রাণীকে ধরা হয়েছে। ওই হিসাবে দেখা যায়, বিভিন্ন হ্রদ, নদী ও জলাভূমিতে থাকা প্রাণীরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন ধ্বংস, জনসংখ্যা বৃদ্ধি, মানুষের অতিরিক্ত শিকার বা মাছ ধরা, বেচাকেনা, দূষণ ও জলবায়ু পরিবর্তনকে বন্যপ্রাণী কমার জন্য দায়ী করেছেন গবেষকরা। ‘দ্য লিভিং প্লানেট রিপোর্ট’ নামে প্রতিবেদনটি প্রতি দুই বছরে একবার প্রকাশিত হয়। এসব প্রতিবেদনে বিশ্বে বন্যপ্রাণীর প্রকৃত অবস্থা পর্যালোচনা করা হয়। ২০১৪ সালে সবশেষ প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল- গত ৪০ বছরে বন্যপ্রাণী অর্ধেকে নেমে এসেছে।
 
এবারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কিছু কিছু প্রজাতির প্রাণীর অবস্থা অন্যদের চেয়ে তুলনামূলক বেশি খারাপ। এদের মধ্যে বে-আইনিভাবে পাচার ও কেনাবেচার জন্য আফ্রিকার হাতি ও মাত্রাতিরিক্ত মত্স্য শিকারের জন্য হাঙ্গরের সংখ্যা দিন দিন কমছে। দূষণের কারণে তিমি ও ডলফিনের সংখ্যাও কমছে অধিক হারে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্বাদু পানির প্রাণীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি কমেছে। বৈশ্বিক উষ্ণতা বাড়ার কারণে গত ৪০ বছরে প্রায় ৮১ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। প্রতি বছর ২ শতাংশ হারে বন্যপ্রাণী কমছে। এই অবস্থা চলতে থাকলে দশকের শেষে বন্যপ্রাণীর সংখ্যা ৬৭ শতাংশ কমে যাবে। কমে যাবে অর্থ একেবারে বিলুপ্ত হবে না; কিন্তু বর্তমান অবস্থা বলছে তাদের টিকিয়ে রাখার সুযোগ এখনো রয়েছে।
 
ডব্লিউডব্লিউএফের বিজ্ঞান ও নীতিবিষয়ক প্রধান ড. মাইক ব্যারেট বলেন, বর্তমান অবস্থা চলতে থাকলে বন্যপ্রাণীর সংখ্যা কমতেই থাকবে; কিন্তু এটাকে কোনো অবস্থাতেই চলতে দেওয়া যায় না। তিনি বলেন, বন্যপ্রাণী কমার কারণগুলি আমরা জানি। একইসঙ্গে এসব প্রাণীর হ্রাসের প্রভাবও জানি। আমাদের এখনই কাজ শুরু কতে হবে। তবে সংগঠন দুইটির গবেষণার জন্য যে পদ্ধতির কথা বলা হয়েছে, তা নিয়ে সমালোচনাও রয়েছে।
 
অন্যদিকে কিছু কিছু প্রজাতির প্রাণীর সংখ্যা বাড়ছেও। ইতিমধ্যে দীর্ঘকায়ী পাণ্ডাকে বিপজ্জনক প্রজাতির বাইরে রাখা হয়েছে। ধারণা করা হয় বিশ্বে বাঘের সংখ্যাও বাড়ছে। তবে বাংলাদেশের বিখ্যাত রয়েল বেঙ্গল টাইগার ঝুঁকিতে রয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়তে থাকায় রয়েল বেঙ্গল টাইগারের বাসভূমি সুন্দরবন এখন হুমকির মুখে পড়েছে। এছাড়া অবৈধভাবে ধরা ও কেনাবেচাও রয়েল বেঙ্গল টাইগারের সংখ্যা কমে যাওয়ার অন্যতম কারণ বলে সাম্প্রতিক কয়েকটি গবেষণায় বলা হয়েছে।
ট্যাগস

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top