সেবা ডেস্ক: আজ ২৮ অক্টোবর বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহি হামিদুর রহমানের ৪৫ তম শাহাদাতবার্ষিকী। ১৯৭১ সালের এই দিনে মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার ধলাই সীমান্তে পাক হানাদার বাহিনীর সঙ্গে সম্মুখ যুদ্ধে শহীদ হন তিনি। আজও অবহেলিত তার গ্রাম ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার খর্দ্দখালিশপুর। সরকারের সিদ্ধান্ত ছিল গ্রামের নাম পরিবর্তন করে হামিদনগর রাখার। তা আজও বাস্তবায়িত করা হয়নি।
ঝিনাইদহ জেলা শহর থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে হামিদুর রহমানের গ্রাম মহেশপুর উপজেলার খর্দ্দখালিশপুর। মহান মুক্তি যুদ্ধ শুরু হলে হামিদুর রহমান মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন।
মৌলভীবাজার জেলার ধলাইতে ছিল পাক বাহিনীর শক্ত ঘাঁটি। কৌশলগত দিক দিয়ে এ ঘাঁটি দখল জরুরি হয়ে পড়ে মুক্তি বাহিনীর জন্য। ২৮ অক্টোবর ধলাই পাকসেনা ঘাঁটি আক্রমণ করে মুক্তি বাহিনী। দুটি মেশিন গান পোস্ট থেকে তুমুল গুলি বর্ষণ করতে থাকে পাকসেনারা। মেশিনগান পোস্ট ধ্বংসের দায়িত্ব পড়ে হামিদুর রহমানের উপর। এ বীর এগিয়ে যান। ধ্বংস করেন মেশিনগান পোস্ট। মুক্তি বাহিনীর দখলে আসে পাকসেনা ঘাঁটি। শত্রুর গুলিতে তিনি শাহাদাত বরণ করেন। তার সহযোদ্ধাগণ মরদেহ ভারতে নিয়ে ত্রিপুরার আমবাশা এলাকায় সমাহিত করেন। দেশ স্বাধীনের পর বাংলাদেশ সরকার মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদানের জন্য বীরশ্রেষ্ঠ খেতাব দেয়। ২০০৭ সালে দেহাবশেষ ভারত থেকে দেশে ফিরিয়ে এনে ঢাকার মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে পুনরায় সমাহিত করা হয়েছে।
তার নামে খালিশপুরে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে সরকারি কলেজ, লাইব্রেরি ও জাদুঘর, প্রাথমিক বিদ্যালয় ও সড়ক। তবে অবহেলিত তার গ্রাম। গ্রামের রাস্তাঘাট ভেঙেচুরে গেছে, মেরামত করা হচ্ছে না।
১৯৮১ সালে তত্কালীন সরকার বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমানের বসতবাড়িটি তৈরি করে দেয়। অল্পদিনেই বাড়িটি বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। বাড়িটির ছাদ খসে পড়ছে। ভেঙে পড়ছে দেয়াল। বিভিন্ন সময় বাড়িটি সংস্কার করার জন্য উপরমহলে যোগাযোগ করা হলেও কোনো সুরাহা হয়নি।
গ্রামের রাস্তাঘাটের বেহাল অবস্থা। মহেশপুর উপজেলার খালিশপুর বাজার থেকে তার বাড়ি যেতে দর্শানার্থীদের পোহাতে হয় দুর্ভোগ। বছর কয়েক আগে রাস্তাটি পাকা করা হলেও উঠে গেছে পিচ। খানাখন্দে ভরা পুরো সড়কটি।