সেবা ডেস্ক: আর কয়েকদিন পরেই বড় ‘পরীক্ষা’য় বসতে চলেছেন আইনস্টাইন। তার মেপে দেওয়া দৃশ্যমান আলোর (ভিজিব্ল লাইট) গতিবেগ সত্যি-সত্যিই একটি নির্দিষ্ট মানের নাকি তার হ্রাস-বৃদ্ধি ঘটে, এবার তা হাতে-কলমে পরীক্ষা করে দেখা হবে। তাতে কি শেষ পর্যন্ত আইনস্টাইন পাস করবেন, তা নিয়েই এখন বিশ্ব জুড়ে চলছে জল্পনা-কল্পনা।
১০০ বছর আগে সাধারণ আপেক্ষিকতাবাদেই একেবারে অঙ্ক কষে আইনস্টাইন বলে দিয়েছিলেন, দৃশ্যমান আলোর গতিবেগ সেকেন্ডে ১ লক্ষ ৮৬ হাজার মাইল। আর এটা কোনও ভাবেই বদলায় না। এই ব্রহ্মাণ্ডে আলোর চেয়ে বেশি গতিবেগে আর কোনও কিছুই ছুটতে পারে না।
লন্ডনের ইম্পিরিয়াল কলেজের পদার্থবিদ অধ্যাপক জোও মাগুএইজো ও কানাডার পেরিমিটার ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক নিয়ায়েশ আফশোর্দির ধারণা, ‘ব্রহ্মাণ্ড সৃষ্টির পরপরই আলো আরও বেশি জোরে ছুটতো। কিন্তু ধীরে ধীরে তার পায়ে অদৃশ্য কেউ বেড়ি পরিয়ে দেয়। ফলে, নেমে আসে এখনকার চেনা-জানা গতিতে। অঙ্ক কষে? যে গতিবেগের মানটা আইনস্টাইনই প্রথম জানিয়েছিলেন।’ গত শতাব্দীর ’৯০-এর দশকের শেষদিকে এই দাবিটা করেছিলেন একদল পদার্থবিদ। তবে তা নিয়ে বেশ হাসাহাসি হয়েছিল।
পেরিমিটার ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক আফশোর্দি বলেছেন, ‘‘কেন এই ব্রহ্মাণ্ডে একের পর এক গ্যালাক্সি তৈরি হল বিগ ব্যাংয়ের পর, আর তা কী ভাবে হল, আমরা তার কারণ খুঁজে চলেছি। তাতে দেখেছি, বিগ ব্যাংয়ের পর যে বিপুল পরিমাণ কণা ছড়িয়ে পড়েছিল, তার ঘনত্বের হ্রাস-বৃদ্ধির জন্যই গ্যালাক্সিগুলি তৈরি হয়েছে। বিভিন্ন চেহারায়, বিভিন্ন প্রান্তে। এটাকেই আমরা বলছি ব্রহ্মাণ্ডের ‘ফ্লাকচ্যুয়েশন্স’। আমরা বুঝেছি, শুধুই আলো ওই সময় অনেক বেশি জোরে ছুটতো না, ব্রহ্মাণ্ডের নানা প্রান্তে আলো তখন ছুটতো বিভিন্ন গতিবেগে। তার মানে— আইনস্টাইন যা বলেছিলেন, জন্মাবধি আলোর গতিবেগে কোনও নড়চড় হয়নি, তা মেনে নেওয়াটা আমাদের পক্ষে অসুবিধা হচ্ছে। তাই আগামী ডিসেম্বরে এই তত্ত্বের একটা হাতকলমে পরীক্ষা হবে।’’-আনন্দবাজার