সেবা ডেস্ক: এ মাসের ৩০ জুলাই সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপি’র কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আরিফুল হক চৌধুরী ও নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান সেলিম মেয়র পদ পাওয়ার আশায় মেয়র পদের প্রার্থী হয়েছেন।
বিএনপির হাইকমান্ডের সিদ্ধান্ত মোতাবেক সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বিএনপি মনোনীত একমাত্র প্রার্থী। তবে এ পদে প্রার্থী হতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির আরো এক হালি নেতা দৌঁড়ে ছিলেন। দলীয় পদ হারানোর ভয়ে তিনজন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি নেতা প্রার্থীতা প্রত্যাহার করলেও হাল ছাড়েননি নগর বিএনপির সাধারন সম্পাদক বদরুজ্জামান সেলিম।
এখন সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগকে নিয়ে চিন্তার চাইতেও বিএনপির মাথা ব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে নিজেদের দলীয় কোন্দল মীমাংসার বিষয়। দেখা যাচ্ছে, সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির শত্রু অন্য দল নয়, বিএনপির শত্রু এখন বিএনপি!
বিশেষ সূত্রে জানা যায়, এ পদে নগর বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির সভাপতি নাসিম হোসাইন, সেক্রেটারি বদরুজ্জামান সেলিম, সাবেক সেক্রেটারি আব্দুল কাইয়ুম জালালী পংকী ও সিসিকের ৩ বারের নির্বাচিত কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র-১ রেজাউল হাসান কয়েস লোদী প্রার্থী ছিলেন।
সূত্র বলছে, গাজীপুর সিটি নির্বাচনের পরের দিন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির হাইকমান্ড বিএনপির সিসিক নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বী সকল মেয়র প্রার্থীকে নিয়ে ঢাকায় রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন।
কিন্তু সবাই আরিফুল হক চৌধুরীকে সিসিকের ৪র্থ তম নির্বাচনে মেয়র পদে রাখলে সকল প্রচার-প্রচারণায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করবেন না বলে প্রকাশ্যে জানিয়ে দেন।
অর্থনৈতিক সংকটের কারণে তিনজন মেয়র প্রার্থী সরে যাবেন বলে বৈঠক সূত্রে জানা গেছে। তবে প্রার্থী হিসেবে সরে গেলেও মনোনয়ন না দিলে তারা আরিফুল হক চৌধুরীর পক্ষে প্রচারণা থেকেও বিরত থাকবেন বলে বৈঠকে জানিয়ে দেন।
এছাড়াও সিলেট নগর বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির সেক্রেটারি বদরুজ্জামান সেলিম দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরূলকে আঙুল উঁচিয়ে তারেক রহমানের নির্দেশ অমান্য করার পরিণতি ভালো হবে না বলে হুমকি দেন।
সম্প্রতি বদরুজ্জামান সেলিম বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার নেক নজর কাড়ার জন্য যুক্তরাজ্যে ঘুরে আসেন।
প্রবাসী সূত্রে জানা যায়, ১৭ কোটি টাকা দিয়ে তারেক রহমানকে খুশি করে মনোনয়নের নিশ্চয়তা নিয়ে আসেন বদরুজ্জামান সেলিম। কিন্তু তারেক রহমানের নির্দেশ অমান্য করে মির্জা ফখরুল শীর্ষ বিএনপির নেতাদের সাথে নিয়ে আলাদা সিন্ডিকেট তৈরি করেছেন।
যে সিন্ডিকেটের ইশারাতেই তারেক রহমানের নির্দেশ অমান্য করে তাকে মনোনয়ন থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। তারেক রহমান সিলেটের সাবেক বিতর্কিত মেয়র আরিফকে দলীয় প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন না দিতে নির্দেশ প্রদান করেছিলেন। কিন্তু মির্জা ফখরুল দলীয় প্রভাব বিস্তারের জন্য তারেকের নির্দেশ অমান্য করে বিতর্কিত মেয়র আরিফকে মনোনয়ন দেন।
এ প্রসঙ্গে সিলেট আন্তর্জাতিক ওসমানী বিমান বন্দরে নেমে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে সেলিম জানান, তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির একমাত্র মেয়র পদপ্রার্থী। এখন অনেক নাটক মঞ্চায়ন করা হচ্ছে। তারেক রহমানের নির্দেশেই সিলেট নাগরিক কমিটির প্রার্থী হিসেবে বদরুজ্জামান সেলিম টেলিভিশন মার্কা নিয়ে মনোনয়ন পত্র রিটার্নিং অফিসারের কাছে জমা দিয়েছেন বলেও জানান তিনি।
আরিফ আর সেলিমের এই কাদা ছোড়াছুড়ি দেখে ক্ষুব্ধ নগরবাসীরা বলছেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির লজ্জা-শরম বলতে কিছু নেই। তাদের নেত্রী ৩ বারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া জেলখানায় কষ্টে জীবন অতিবাহিত করছেন। অথচ তারা কে মেয়র প্রার্থী হবেন এই নিয়ে কাদা ছোড়াছুড়ি করছেন। অঙ্গসংগঠন ছাত্রদল পদ-পদবী নিয়ে মারামারি-হানাহানিতে ব্যস্ত।