সেবা ডেস্ক: সড়ক ব্যবস্থার অসঙ্গতির কারনে ফুঁসে উঠেছিল কোমলমতি ছাত্র সমাজ। সারাদেশে প্রতিনিয়ত ঘটছে কোনো না কোনো সড়ক দুর্ঘটনা। পরিবার হারাচ্ছে তাদের প্রিয়জন, বুক খালি হচ্ছে কত শত মায়ের। গত মাসের ২৯ জুলাই রবিবার রাজধানীর রমিজ উদ্দিন কলেজের দুইজন শিক্ষার্থী নিহত হওয়ায় দেশ জুড়ে শুরু হয় নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলন। আন্দোলনের মাধ্যমে সড়কে চলা গণ-পরিবহনের নানা রকম সমস্যা বের করে আমাদের ছাত্র সমাজ।
রাজধানীতে চলাচল করা অধিকাংশ পরিবহন ফিটনেস বিহীন। এর জন্য প্রায় সময় দেখা দেয় যান্ত্রিকত্রুটি এবং এর ফলে ঘটে দুর্ঘটনা। শুধু তাই নয় পরিবহন চালকদেরও রয়েছে নানা রকম অসঙ্গতি। তাদের ভিতর সব সময় প্রতিযোগিতাময় মনোভাব কাজ করে। এর জন্য গাড়ির গতিও থাকে বেশি। অনেক সময় তারা নেশাগ্রস্থ থাকে। তাদের অনেকের ড্রাইভিং লাইসেন্স থাকে না। এইভাবে বেহাল দশায় চলছে আমাদের গণপরিবহন। আর আহত ও নিহত হচ্ছে বহু মানুষ।
মূলত কলেজের দুই শিক্ষার্থীর নিহতের পর সড়কে নেমে আসে তাদের সহপাঠীসহ বিভিন্ন স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীরা বেশ শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করেছিল। সড়কের ট্রাফিকিংয়ের দায়িত্বে দেখা গেছে তাদের। এসময় তারা বিভিন্ন গাড়ির ফিটনেস ও লাইসেন্স চেক করে। তারা বিভিন্ন মন্ত্রীর গাড়িও বাদ দেয়নি তাদের এই লাইসেন্স পরীক্ষা করার জন্য। তারা যানজট নিরসনে বের করে অভিনব পদ্ধতি। তারা রিকশা চলাচলের জন্য আলাদা একটি লেন করে দেয় এবং সেই লেন দিয়ে সারিবদ্ধ ভাবে রিকশা চলাচল করার জন্য অনুরোধ করে। শুধু তাই নয় অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিস গাড়ির জন্য ব্যবস্থা করা হয় একটি জরুরি অর্থ্যাৎ ইমার্জেন্সি লেন। সমাজের বিশিষ্টজনেরা সাধুবাদ জানান তাদের এই আন্দোলনের।
কোমলমতি ছাত্রদের এই নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলন ধীরে ধীরে ঘোলাটে হওয়া শুরু করে। ছাত্রদের ভিতর প্রবেশ করে ছাত্ররূপী তৃতীয় পক্ষ। তারাও ছাত্রদের পোশাকে অবস্থান করে সড়কে। তারা সড়কে অবস্থান করেই ক্ষান্ত হননি তারা শুরু করেছিল নানা রকম তান্ডব। ছাত্রের বেশ ধরে সৃষ্টি করেছিল বিশৃঙ্খলা। তাদের পরিচয় শনাক্ত করে জানা যায় তারা কেউ শিক্ষার্থী নন। তারা শিবির, হিজবুত তাহরির ও ছাত্রদলের সদস্য। তাদের উদ্দেশ্য ছিল বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে নিরপরাধ ছাত্রদের দোষারোপ করা। দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করা। কিন্তু সরকার ছাত্রদের সকল দাবি মেনে নিয়েছে এবং তারা ধীরে ধীরে আবার ক্লাসে ফিরতে শুরু করেছে। সেই বিশৃঙ্খলাকারী, ছাত্ররূপী সন্ত্রাসীদের দ্রুতই আইনের আওতায় আনা হবে।