
আজ ১৪ ফেব্রুয়ারী। বিশ্ব ভালোবাসা দিবস। এই দিবসে সবার মধ্যে ভালোবাসা লেনদেন হলেও যারা বিবাহিত আর এই ভালোবাসা দিবস যাদের বিয়ের পর প্রথম ভালোবাসা দিবস, তারা অনেকেই হইতো চিন্তা করছেন, বিয়ের পরে নাকি ভালোবাসা ম্লান হয়ে যায়। এই কথা কি সত্যি? অনেকেই এর পক্ষে থাকলেও বেশির ভাগ মানুষই আমৃত্যু ভালোবাসায় বিশ্বাসী। বিয়ের পরে পড়াশুনা, চাকরি, সংসার, নতুন মানুষদের সাথে খাপ খাইয়ে নেয়া সব কিছু মিলিয়েই একে অন্যের জন্য সময় বের করা কঠিন হয়ে পড়ে। ভালোবাসার মানুষটির সাথে দূরত্ব সৃষ্টি হয়ে যায় এবং মন কষাকষি শুরু হয়। চিন্তা করে লাভ কি? আজকের ভালোবাসা দিবসে আপনার ভালোবাসার মানুষটিকে নতুন করে মনে করিয়ে দিতে পারেন সেই সুন্দর সময়গুলো।
আপনাদের দুজনের ভালোবাসা যে এখনও আগের মতোই অটুট আছে এটা দেখানোর সুযোগ আজই। আর তাই বিবাহিত জুটির জন্য ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে বিশেষ আয়োজন।
বিয়ের পর এখন আর আগের মতো হয়তো বিভিন্ন পার্কে, পর্যটন কেন্দ্রে বা কোথাও ঘুরতে যাওয়া হয় না, বাইরে তেমন দেখা করার সুযোগও নেই, ঘরেও খুব একটা মিষ্টি কোন কথাবার্তা হয় না। দুজনের কথা যেন কাচাঁ-মরিচ, লবন আর তেলের মধ্যেই সীমাবদ্ধ হয়ে আছে। এই অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে আজকের ভালোবাসা দিবসে সুন্দর করে আপনাদের ঘর সাজিয়ে ফেলুন। বাহির থেকে ক্লান্ত শরীরে ফিরে ঘরে ঢুকতেই যেন মানুষটি আপনার ভালোবাসা অনুভব করতে পারে সেভাবে সাজিয়ে তুলুন ঘরের প্রতিটি কোণা। চলুন তবে দেখে নেয়া যাক স্বল্প সময়ে এবং কম বাজেটে যেভাবে আপনি আপনার ঘর সাজিয়ে তুলতে পারেন আপনার ভালোবাসায়।
১. প্রথমেই গুছিয়ে ফেলুন আপনার ঘর
নানান কাজের ব্যস্ততায় হয়তো আপনার নিজের ঘরটি ঠিকমতো গোছানোর সময় করতে পারেননি। তাই আজকের এই ভালোবাসার দিনে শুরু করে দিন ঘর গুছানোর এই কাজটি। আপনার টেবিলে হয়তো অনেকদিনের পুরোনো কাগজপত্র পড়ে আছে। কলমদানিতে কলমও সাজিয়ে রাখা হয়নি। টেবিল জুড়ে এলোমেলো কাগজ, ল্যাপটপের উপর ধূলার স্তর, ড্রেসিং টেবিল উল্টেপাল্টে থাকা কসমেটিক্স সবই গুছিয়ে ফেলুন। প্রথমত অনেক বেশি কাজ মনে হলেও একটি একটি করে আসবাব ধরে গোছাতে শুরু করলে খুব তারাতারিই আপনার ঘর গোছানো হয়ে যাবে। ফুলদানির পানি বদলে দেয়া, পর্দা বদলে দেয়া, কাপড়গুলো একটু গুছিয়ে রাখা এভাবেই এগোতে থাকুন। কাজ কমে এলে গোছানো ঘর দেখে আপনি নিজেও তৃপ্তি পাবেন।
২. বদলে ফেলুন আপনার বিছানার চাদর-বালিশ
বাজার থেকে ভালোবাসা দিবসের রঙে কিনে আনতে পারেন বালিশের কভার এবং চাদর। পুরোনো চাদর বদলে লাল-সাদা চাদরে খাটটি সাজিয়ে নিন। সাথে রঙ মিলিয়ে বালিশের কভার অথবা একরঙা লাল বালিশের কভারও ব্যবহার করতে পারেন। চাদর-বালিশের কভার কেনার বিষয়টি যদি বাজেটে না থাকে তাহলে ছোটো দুটি কুশন কিনে আনতে পাররেন। কুশনের কভার হিসাবে নজরকাড়া কোনো রঙ বেছে নিতে পারেন। তবে বিছানার চাদর এবং বালিশের কভার আজকের এই ভালোবাসা দিবসের জন্যে হলেও বদলে নিন।
৩. আপনার ভিতরে থাকা শিল্পকে আপনি বিকশিত করুন
আপনি হয়তোবা কাগজ বা কাপড় দিয়ে সুন্দর ফুল তৈরি করতে পারেন অথবা আঁকতে পারেন নজর কারানো সুন্দর ছবি, তবে আজকের এই ভালোবাসা দিবসে এই শিল্পকে কাজে লাগান। বাজার থেকে লাল অথবা রঙ্গিন কাগজ কিনে বানিয়ে ফেলুন বিভিন্ন রকম ফুল। অথবা একটি ক্যানভাসে এঁকে ফেলুন প্রিয় মানুষটির মুখাবয়ব। আপনার এই সৃষ্টি দেখে ভালোবাসার মানুষটির মুগ্ধ না হয়ে উপায় কী!
৪. সন্ধ্যায় জ্বালানা মোম বা ক্যান্ডেল লাইট
মোম বা ক্যান্ডেল লাইট এমন একটি সজ্জা যেটি আপনি ব্যবহার না করা পর্যন্ত বুঝতে পারবেন না এটার সাজ। আপনার ঘরের বিশেষ কামরার বাজার থেকে জন্য বিভিন্ন রঙের মোম কিনে আনতে পারেন। মোমগুলো হতে পারে সুগন্ধিযুক্ত মোম। বিভিন্ন সুপার মার্কেটে বা অনলাইন শপগুলোতে মন মাতানো সুবাসের বাহারী রঙ্গের কিনতে মোম পাওয়া যায়। সাইড টেবিল, টি-টেবিল, উইন্ডো-ফোল্ড এসব জায়গায় মোম জ্বালিয়ে রাখতে পারেন। আজকের দিনে না হয় বৈদ্যুতিক বাতিকে ছুটি দিয়ে দিন।
৫. এই দিনে ঘরটি সাজিয়ে নিতে পারেন আলোকসজ্জায়
আপনার রুমের জানালা ও বিছানা ঘেষে ছোট ছোট ফেয়ারি লাইট জ্বালিয়ে দিতে পারেন। রঙবেরঙের এবং বিভিন্ন আকারের ফেয়ারি লাইট যে কোনো ইলেকট্রনিক্সের দোকানে পাওয়া যাবে। দেয়ালের রঙ, পর্দা এবং বিছানার রঙ মাথায় রেখে ঘর সাজিয়ে ফেলতে পারেন নানান ফেয়ারি লাইটে।
৬. বাথরুম সাজিয়ে নিন ঘরের মতো
ভালোবাসার এই দিনে আপনি এত কষ্ট করে সাজালেন আপনার ঘর। সুন্দর সাজানো ঘর দেখার পর বাথরুমের অবস্থা দেখে কারও মন খারাপ করে দেয়ার ঝুঁকি নেবার প্রয়োজন আছে কি? বাথরুমের তোয়ালে বেছেন নিতে পারেন লাল রঙের। হ্যান্ডওয়াশ এবং এয়ার ফ্রেশনার হিসাবে গোলাপের ফ্লেভার বিবেচনায় রাখতে পারেন। সামনের পাপোসটিও না হয় বদলে দিন। আর বাথরুমের ফ্লোর এবং বিভিন্ন টাইলসও মুছে দিতে পারেন সুগন্ধি ক্লিনার দিয়ে।
৭.সাজিয়ে নিন আপনার খাবার ঘর
আজকের দিনে যদি বাইরে খেতে যাবার পরিকল্পনা না থাকে তাহলে সুন্দর করে ডাইনিং টেবিল সাজিয়ে ফেলুন। টেবিল ম্যাট বদলে দিতে পারেন। প্লেট, ডিশ এবং সাজানোর স্টাইলে থাকতে পারে ভালোবাসা দিবসের ছোঁয়া। খাবারের তালিকায় দুজনের পছন্দের খাবার রাখতে পারেন। ডাইনিং রুমের কাছে ছোট সাউন্ড সিস্টেম বসিয়ে মৃদু ছন্দের গান বাজাতে পারেন।
৮. বাদ কেন থাকবে অন্যান্য আসবাব
অন্যান্য আসবাবপত্রেও ভিন্নতা আনতে পারেন। চেয়ারের উপর লাল তোয়ালে বা টেবিলে ভারি লাল টেবিল ক্লথ বিছিয়ে দিতে পারেন। বসাত টেবিলের ফুলদানিতে ফুল সাজিয়ে দিতে পারেন। আপনার ঘরের আসবাবপত্র অনুযায়ী উপরে কভার বদলানো বা ছোট শোপিস সাজিয়ে রেখেও সেখানে দিতে পারেন ভালোবাসার ছোঁয়া।
সব শেষে নিজে সাজুন। আপনাদের ভালোবাসা যে এখনও আগের মতোই আছে এবং এখনও যে আপনাদের জীবন কতটা সুন্দর হতে পারে তার একটুখানি ঝলক থেকে যাক আজকের সমস্ত গোছগাছে। ভালোবাসার মানুষটিকে আরও ভালোবাসুন এবং ভালোবাসায় ভরে যাক আপনাদের এই শান্তির নীড়।
⇘সংবাদদাতা: সেবা ডেস্ক

খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।