
গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি: গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জের এসিল্যান্ড অবিদিয় মার্ডির নিহতের ৫ বছর পর সাবেক এমপি,তৎকালীন ওসি ও এসপিসহ ১৩ জনকে আসামী করে হত্যা মামলা দায়ের করেছে নিহতের ভাই। আসামি করা হয়েছে সাবেক এমপি আবুল কালাম আজাদ, তৎকালীন পুলিশ সুপার ও ওসিসহ ১৩ জনকে। নিহতের ভাই স্যামসন মার্ডি আজ ৮ এপ্রিল দুপুরে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এজাহার দায়ের করেন।
সেখানে ৫ বছর আগের ওই ঘটনা, দুর্ঘটনা নয় পরিকল্পিত হত্যা বলা হয়েছে। আদালতের বিচারক পার্থ ভদ্র এজাহার আমলে নিয়ে আগামি ১২ জুন শুনানির দিন ধার্য্য করেন। ২০১৪ সালে জানুয়ারীতে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার অবিদিয় মার্ডি।
এর আগে নিহতের ৬ মাস ৩ দিন পর কথিত সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) অবিদিয় মার্ডী (৩৫) এর লাশ নওগাঁর ধামইরহাটে কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছিল। গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের আদেশে ২৩/০৭/২০১৪ ইং বুধবার বেলা ১১টায় অবিদিয় মার্ডীর লাশ ময়না তদন্তের জন্য কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছিল। লাশ উত্তোলন করে ময়না তদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগে পাঠানো হয়েছিল।
অবিদিয়ের মৃত্যুর ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে একই বছর ১৩ জানুয়ারী গোবিন্দগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করা হয়।
ঐসময়ে লাশ উত্তোলনের সময় উপস্থিত ছিলেন ধামইরহাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ হেমায়েত উদ্দিন,তৎকালীন গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মামুন উল হাসান, নওগাঁর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট একেএম হেদায়েতুল ইসলাম, গাইবান্ধা বি সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মাহবুবুর রহমান, গোবিন্দগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) মেহেদী রাসেল, ধামইরহাট থানার এসআই মেহেদী হাসান সুমনসহ স্থানীয় সাংবাদিক ও আদিবাসী নেতৃবৃন্দ।
এ ব্যাপারে অবিদিয় মার্ডীর বড় ভাই ফাদার স্যামসন মারার্ন্ডী ঐসময়ে অভিযোগ করেছিল তার ছোট ভাই অবিদিয় মার্ডী গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় সহকারী কমিশনার (ভূমি) হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে আদিবাসীদের জমি সংক্রান্ত পারমিশান বিষয়ে ওই এলাকার এক প্রভাবশালী ব্যক্তির সাথে দ্বন্দ বাধে। পরবর্তীতে ওই চক্র তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে সড়ক দুর্ঘটনা বলে চালিয়ে দেয়।
তিনি অভিযোগ করে বলেছিলেন, কোন প্রকার ময়না তদন্ত ছাড়া অবিদিয়কে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন লাশ দ্রæত দাফনের জন্য পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেন। পরবর্তীতে তারা বিষয়টি জানতে পারেন যে, তার ছোট ভাইকে একটি মহল সুপরিকল্পিতভাবে হত্যা করে। লাশ উত্তোলন পূর্বক সঠিকভাবে ময়না তদন্তের জন্য এলাকাবাসী ও বিভিন্ন আদিবাসী সংগঠন ঐসময়ের ২৭ এপ্রিল ধামইরহাট উপজেলা সদরে মানববন্ধন কর্মসূচী পালন শেষে প্রধানমন্ত্রী বরাবর একটি স্মারক লিপি প্রদান করে।ঐসময় থেকে পরিবারের পক্ষ থেকে দূর্ঘটনা নয় পরিকল্পিত ঘটনা অভিযোগ করা হলেও মামলা করেনি ঐ পরিবার অবশেষে পাঁচ বছর পর আজ ৮ এপ্রিল মামলা করল।
উলেখ্য এক সন্তানের জনক অবিদিয় মার্ডী ধামইরহাট উপজেলার বেনীদুয়ার মিশনপাড়া গ্রামের মৃত যোসেফ মার্ডীর ছেলে। গত ১১ জানুয়ারী’১৪ তারিখে নিজ কর্মস্থল গোবিন্দগঞ্জ থেকে মোটর সাইকেলে যোগে সকালে নিজ বাড়ী বেনীদুয়ার গ্রামে আসেন। বিকেলে কর্মস্থলে ফেরার পথে রংপুর-বগুড়া মহাসড়কের গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার ফাঁসিতলা নামকস্থানে অটোরিক্সার সাথে কথিত সংঘর্ষে তিনি মারা যান।
⇘সংবাদদাতা: গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।