
সেবা ডেস্ক: বর্ষাকালের মুষলধারে বৃষ্টি, তুষারঝড় কিংবা প্রচন্ড বাতাস কোনো কিছুতেই নিভছে না আগুন। সেটি জ্বলছে লাগাতার ৪ বছর ধরে। এশিয়া মহাদেশের একটি প্রজাতন্ত্রী রাষ্ট্র আজারবাইজান। কৃষ্ণসাগর ও কাস্পিয়ান সাগরের মধ্যবর্তী স্থলযোটক দক্ষিণ ককেশাস অঞ্চলের সবচেয়ে পূর্বের রাষ্ট্র এই আজারবাইজান। আয়তন ও জনসংখ্যার দিক থেকে ককেশীয় অঞ্চলের রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে বৃহত্তম দেশ।
কাস্পিয়ান সাগর এলাকার অন্যতম প্রধান জ্বালানি উৎপাদনকারী দেশ আজারবাইজান। এসব কিছুর বাইরে আজারবাইজনের একটি স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য হলো আজারবাইজানে চার হাজার বছর ধরে নিরবচ্ছিন্নভাবে চলছে আগুন। আজারবাইজনের অ্যাবশেরন উপদ্বীপের একটি জায়গায় দশ মিটার জায়গাজুড়ে অবিরামভাবে চলছে এই আগুন।
অ্যাবশেরন উপদ্বীপে পর্যটক গাইডের কাজ করা এক নারী আলিয়েভা রাহিলা সিএনএনকে জানায়, চার হাজার বছর ধরে জ্বলছে সেখানকার আগুন। কোনো কিছুতেই নেভে না আগুন। সারাদিন ধরে আগুন জ্বলার কারণে আশেপাশের এলাকা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশ উত্তপ্ত থাকে। এই জায়াগা ছাড়াও দেশটির অনেক জায়গায় এভাবে আগুন জ্বলছে। মূলত প্রাকৃতিক গ্যাস এবং তেল সমৃদ্ধ দেশটির অনেক স্থানেই এই ধরনের আগুনের দেখা মেলে।
এই জ্বলন্ত আগুনের অভিজ্ঞতা লাভের জন্য হাজার বছর ধরে দু:সাহসিক পর্যটকরা ভ্রমণের জন্য বেছে নিচ্ছে আজারবাইজানকে। ভেনীস দেশীয় এক পর্যটক সতের শতকে বেড়াতে গিয়ে লিখেছিলেন আজারবাইজানের জ্বলন্ত আগুন নিয়ে। তিনি ছাড়াও বিভিন্ন সময়ে অন্যান্য অনেক পর্যটকের লেখায়ও আজারবাইজানের এই আগুনের কথা উঠে এসেছে। এসব কারণেই দেশটি ‘আগুনের ভূমি’ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে।
একটা সময়ে দেশটিতে এই ধরনের জ্বলন্ত আগুনের ঘটনা অনেক বেড়ে গিয়েছিল। কিন্তু বাণিজ্যিকভাবে ভূগর্ভস্থ গ্যাস উত্তোলনের মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ায় ধীরে ধীরে আগুনের ঘটনা কমে এসেছে। এখনো টিকে থাকা এই ধরনের আগুনগুলোর একটি ‘ইয়ানার ড্যাগ’। চিত্তাকর্ষক এই অগ্নিকুন্ডটি তাই অনেক পর্যটকের কাছেই বিশেষভাবে আকৃষ্ট করে।
জ্বলন্ত আগুনের এই স্থানে ১৯৭৫ সালে এখানে গড়ে তোলা হয়েছে একটি ভবন। ১৯৯৮ সালে যেটি বিশ্ব ঐতিহ্যময় স্থানের স্বীকৃতি লাভ করেছে। প্রতি বছর এখানে গড়ে ১৫ হাজার পর্যটক ভ্রমণে আসে। এই আগুন দেখতে হলে আপনাকে আজারবাইজানের রাজধানী বাকু থেকে ৩০ মিনিটের পথ পাড়ি দিয়ে যেতে হবে দেশটির উত্তর প্রান্তে।
-সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন

খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।