
সেবা ডেস্ক: ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ থেকে বদলে যাওয়া এক বাংলাদেশের চিত্র তুলে ধরেছে ভারতীয় জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যম টেলিগ্রাফ ইন্ডিয়া। সংবাদ মাধ্যমটিতে কলামিস্ট দেবাদ্বীপ পুরোহিত এ নিয়ে একটি মন্তব্য প্রতিবেদন লিখেছেন। সেখানে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের গরীব শ্রেণির মানুষ এক সময় সুদিনের খোঁজে ভারতে অনুপ্রবেশ করতো। তবে সত্যি বলতে, সেই দিন আর এখন নেই।
প্রসঙ্গত, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করার পর মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানী হেনরি কিসিঞ্জার এই দেশকে একটি ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ হিসেবে অ্যাখ্যা দিয়েছিলেন। কেননা যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ তখন অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল ছিল।
তবে টেলিগ্রাফ ইন্ডিয়ায় প্রকাশিত ওই মতামতধর্মী প্রতিবেদনে দেবাদ্বীপ পুরোহিত বলেছেন, ভারতের সংসদে দেশটির স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিত্যনন্দ রাই মজার একটি তথ্য তুলে ধরেছেন। বলেছেন- ২০১৯ সালের প্রথম ছয় মাসে অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে ৪৯৭ বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে ৩৭৯ জনকেই গ্রেপ্তার করা হয় বাংলা সীমান্ত থেকে। তার মতে, পশ্চিম বাংলা, আসাম, মেঘালয়, মিজোরাম এবং ত্রিপুরা সীমান্তে ২০১৪ সালে গ্রেপ্তার অবৈধ অনুপ্রবেশকারী বাংলাদেশির সংখ্যা ছিল ২ হাজার ৪৫৫ জন।
তিনি আরও বলেন, যদিও অবৈধ অনুপ্রবেশকারী সঠিক সংখ্যা নিরূপণ অসম্ভব। তারপরও বাংলাদেশ থেকে অবৈধ অনুপ্রবেশের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে কমে গেছে। এর কারণ হচ্ছে, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অবস্থা।
দেবাদ্বীপ আরও বলেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অবস্থা আগের থেকে অনেক ভাল। এশিয়া উন্নয়ন ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, বর্তমানে দেশটির জিডিপি ৮ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। আর ২০২০ সাল নাগাদ এই দেশের মাথা পিছু আয় ৬ দশমিক ৬ শতাংশে উন্নীত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। সুতরাং হেনরি কিসিঞ্জারের সেই ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ উক্তিটি এখন বাংলাদেশের ক্ষেত্রে অসার।
এক্ষেত্রে দুজন ব্যক্তির সাক্ষাৎকার তুলে ধরেন এই লেখক। তাদের মধ্যে প্রথম ব্যক্তি বাংলাদেশের অভিজাত এলাকা গুলশানে রিকশা চালাতেন।
এক দশক আগে তিনি ভারতের পশ্চিমবঙ্গে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ করেছিলেন। সেখানে দমদম এলাকায় তিনি বসবাস করতেন। কিন্তু এক দশকেও তিনি তার ভাগ্যের চাকা ঘুরাতে পারেননি। নিরাশ হয়ে স্বদেশে ফিরেন। বর্তমানে তার বয়স ৪০-এর কোটায়। তিনি বলেছেন, ‘যদিও তিনি কলকাতা পছন্দ করেন। কিন্তু জীবিকার জন্য তিনি আর কোনদিনও ভারতে যাবেন না।’
ওই রিকশা চালকের ভাষায়, ‘এখানে কামাই (আয়) বেশি। প্রতিদিন আট ঘণ্টা কাজ করলে এখানে ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা আয় করা সম্ভব।’ দ্বিতীয় ব্যক্তি ঢাকার একজন উবার চালক। বর্তমানে তার বয়স ৩০। তিনি শোনালেন আরও মজার গল্প।
উবার চালক বলেন, ‘তিনি বেশ কয়েকবার কলকাতা ভ্রমণ করেছেন। সেখানে তিনি গরীব অনেকের সঙ্গেই কথা বলেছেন। তারা জানিয়েছেন- পশ্চিমবঙ্গে সারাদিন পরিশ্রম করে ১০০ রুপি আয় করাই কষ্ট। অথচ বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল দিনাজপুরেও দৈনিক হাজিরায় ৭০০ টাকা দিয়েও একজন শ্রমিক পাওয়া কষ্টসাধ্য ব্যাপার।’
-সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।