
রফিকুল আলম,ধুনট (বগুড়া): বিশ্বে যা-কিছু মহান সৃষ্টি চির-কল্যাণকর, অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর। সব ক্ষেত্রেই নারীদের অবদান রয়েছে। রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ আসন থেকে রান্না ঘর পর্যন্ত একজন নারীর বিচরণ। গ্রামীন জনপদের এমনই এক নারী আছিয়া খাতুন। তিনি নিজের উদ্যোগে গড়ে তুলেছেন ৩০০ ফুট দৈর্ঘ্য বাঁশের সাঁকো। তাকে সহযোগীতা করেছেন স্থানীয় গ্রামবাসি। এতে দূর্ভোগ লাঘব হয়েছে অবহেলীত জনপদের প্রায় লাখ মানুষের। এই সাঁকোটি বগুড়ার ধুনট উপজেলার মথুরাপুর ইউনিয়নের কুড়িগাতি গ্রামের কচুয়া বিলে।
স্থানীয় স‚ত্রে জানা যায়, উপজেলার কুড়িগাতী গ্রামের চহের চড়া থেকে কুড়িগাতী দক্ষিন পাড়া পর্যন্ত প্রায় ২ কিলোমিটার কাচা রাস্তা দিয়ে এলাকার ১৫টি গ্রামের মানুষ যাতায়াত করে। কাঁচা সড়কটি কুড়িগাতী গ্রামের মাঝ দিয়ে আশপাশের গ্রামের সাথে সংযুক্ত হয়েছে। গ্রামগুলো হলো কুড়িগাতী, গোবিন্দপুর, উজাল শিং, শিমুলকান্দি, জোলাগাতী, ছাতিয়ানী, হোসেনপুর, উলুরচাপড়, বগা, রান্ডিলা, মল্লিকচান, কয়ড়া, কল্লাবাড়ি, ঝাপড়া, বুলাকীপুর, গুনারগাতী, আবুদিয়া ও ধানগড়া। প্রতিদিন হাজারো মানুষ ওই রাস্তা দিয়ে কচুয়া বিলের জলমাড়িয়ে চলাচল করে। এতে গ্রামবাসীকে চরম দ‚র্ভোগ পোহাতে হয়েছে।
ওই সড়কটি দিয়ে গ্রামবাসী হাট বাজারে যাতায়াত করে। এছাড়াও স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা কমসময়ে তাদের বিদ্যালয়ে পৌছাতে পারে। গ্রামবাসী সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করেও কোন ব্রীজ, কালভার্ট কিংবা সাঁকোর বরাদ্দ পায়নি। অবশেষে মথুরাপুর ইউনিয়নের ৪,৫,৬নং ওয়ার্ডের মহিলা সদস্য আছিয়া খাতুন আর্থিক সহযোগিতা দিয়ে কচুয়া বিলের উপর সাঁকো নির্মানের উদ্যোগ নেন। তাকে আশপাশের গ্রামবাসী নানা ভাবে সহযোগিতা করেছেন। এতে এলাকার হাজারো মানুষ দ‚র্ভোগের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছেন।
বাঁশের সাঁকো নির্মান কাজের উদ্যোক্তা আছিয়া খাতুন বলেন, মানুষের সেবা করা জন্য মাঠে নেমেছি। বিভিন্ন দপ্তরে ঘুরে ঘুরে কোন কাজ হয়নি। ফলে নিজের সামান্য আয় থেকেই সাঁকো নির্মান কাজ শুরু করি। আমার এই কাজ দেখে আশপাশের গ্রামবাসী সহযোগীতার হাত বাড়িয়েছেন। এই সাঁকো নির্মানে ব্যয় হয়েছে প্রায় ৮ হাজার টাকা।
উপজেলার মথুরাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হারুন-অর-রশিদ সেলিম বলেন, এলাকার মানুষের জন্য কচুয়া বিলের উপর একটি সেতু খুবই প্রয়োজন। উপজেলা পরিষদের সমন্বয় সভায় সেতুর দাবী করেছি। কিন্ত সরকারি ভাবে কোন ব্যবস্থা করা হয়নি। এ কারনে ইউপি সদস্যর উদ্যেগে সেখানে একটি বাঁশের সাঁকো তৈরী করেছে।
ধুনট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাজিয়া সুলতানা বলেন, নিজস্ব কমিউনিটিকে সম্পৃক্ত করে সমস্যা সমাধানের একটি অনন্য উদাহরণ সাঁকো তৈরীর এই কাজটি। ভবিষ্যতে এভাবে গ্রামের ছোটখাট সমস্যা নিজেদের স্বেচ্ছাশ্রমে সমাধান করার পরামর্শও দেন তিনি।
-সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।