
সেবা ডেস্ক: টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলার ঝুনকাইল গ্রামে মাদকাসক্ত ছেলেকে ত্যাজ্যপুত্র ঘোষণা করেছেন শামসুল হক নামে এক বীরমুক্তিযোদ্ধা। বাবার নাম মৃত ফয়েজ উদ্দিন। গতকাল মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) দুপুরে নোটারি পাবলিক, টাঙ্গাইল আদালতে হাজির হয়ে নিজের ছোট ছেলে আজাহারুল হক জয়কে (২৩) এফিডেভিটের মাধ্যমে ত্যাজ্যপুত্র ঘোষণা করেন তিনি। পরে স্থানীয় একটি পত্রিকায় এ বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি দেন।
শামসুল হক জানান, ৮ম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় তার ছোট ছেলে আজাহারুল বন্ধুদের পাল্লায় পড়ে ইয়াবা সেবন করা শুরু করে। মাদকাসক্ত অবস্থায় ২০১৪ সালে এসএসসি সে পাস করে বগুড়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে ভর্তি হয়। কিন্তু সেখানে কোর্স শেষ করতে পারেনি।
তিনি জানান, মাদক সেবনের টাকার জন্য প্রতিনিয়ত সে বাসায় চাপ দিতো। না দিলে ফার্নিচার ভাঙচুরসহ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করতো। এছাড়া মাঝে মধ্যেই ৪/৫ দিন নিরুদ্দেশ থাকতো। এখনও সে নিরুদ্দেশ আছে। একাধিকবার নিরাময় কেন্দ্রে দিয়েও তাকে মাদকমুক্ত করা যায়নি।
তিনি আরও বলেন, আজাহারুল হক আমার অবাধ্য ছেলে। সে সমাজে এমন সব অপকর্ম করে বেড়ায় যার জন্য আমাকে চরম হেয় প্রতিপন্ন হতে হয়। আমার কোনো কথা শোনে না। তাকে বুঝাতে গেলে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করে। তার কার্যকলাপের জন্য পরিবারের সদস্য, আত্মীয়-স্বজন ও শুভাকাঙ্খিদের পরামর্শক্রমে তাকে ত্যাজ্যপুত্র ঘোষণা করলাম। এখন থেকে আজাহারুল হক জয় আমার ছেলে না। আমার জীবদ্ধশায় সে কোনো প্রকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি দাবি করতে পারবে না। তার সকল প্রকার অপকর্মের জন্য আমি ও আমার পরিবার দায়ি নই বলে নোটারি পাবলিকে উল্লেখ করেন এই বীর মুক্তিযোদ্ধা।
আজ বুধবার বিষয়টি নিশ্চিত করে টাঙ্গাইল জজ কোর্টের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিসি) অ্যাডভোকেট এস আকবর খান জানান, ত্যাজ্যপুত্র ঘোষণার বিষয়টি আইনগতভাবে ভিত্তিহীন।
তিনি বলেন, শুধুমাত্র সমাজকে অবগত করার জন্য এ ধরনের অবাধ্য সন্তানের সঙ্গে সবধরনের সর্ম্পক ছিন্ন করার ঘোষণা এফিডেভিটের মাধ্যমে দেয়া হয়ে থাকে। এমন ঘোষণার ফলে কেউ আইনগতভাবে ত্যাজ্যপুত্র হয় না। এছাড়া যাকে ত্যাজ্য করা হয়েছে সে সম্পত্তি এবং ওয়ারিস থেকেও বঞ্চিত হবে না।
-সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন

খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।