রফিকুল আলম,ধুনট (বগুড়া): মিটার চোর চক্রের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছেন বগুড়ার ধুনট উপজেলার পল্লী বিদ্যুতের শিল্প মিটারের গ্রাহক কৃষক ও ব্যবসায়ীরা। মিটার চুরি করে চাঁদা আদায় করছে সংঘবদ্ধ একটি চক্র। চাঁদা আদায়ের পর সেই মিটার আবার মালিকদের ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। চুরি করা মিটার ফেরত দিতে পাঁচ থেকে সাত হাজার টাকা করে আদায় করছে চক্রটি। অনেকে আবার নিয়মিত চাঁদা দিয়ে মিটার রক্ষা করছেন।
ধুনট পল্লী বিদ্যুৎ জোনাল অফিস ও গ্রাহক স‚ত্রে জানা যায়, এ উপজেলায় গ্রাহকের প্রায় সাড়ে ৩০০ শিল্প মিটার রয়েছে। চালকল, স-মিল, ইটভাটা কিংবা গভীর নলক‚প-যেখানে বিদ্যুৎ বেশি লাগে সেখানে ব্যবহার করা হয় থ্রি ফেজ এই মিটার। অভিনব কায়দায় এ সব মিটার চুরির হিড়িক পড়েছে। গত এক মাসে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে কমপক্ষে ৮টি শিল্প মিটার চুরি করেছে দূর্বৃত্তরা।
এরমধ্যে উপজেলা চালকল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সাইদুল ইসলামের ১টি, একই এলাকার আব্দুর রশিদ, তারেকুল ইসলাম, শহিদুল ইসলাম, কান্ডনগর গ্রামের এনামুল হক, বেড়েরবাড়ি গ্রামের রফিকুল ইসলাম ও আব্দুর বারিকের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে ১টি করে শিল্প মিটার চুরি করেছে দূর্বৃত্তরা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ‘মিটার পাবে’ উল্লেখ করে একটি কাগজের চিরকুটে মোবাইল নম্বর লিখে চুরি করা মিটারের স্থানে ফেলে রেখে যায় দূর্বৃত্তরা। মিটার চুরি যাওয়া স্থান থেকে প্রাপ্ত মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করা হলে ৫ থেকে ৭ হাজার টাকা বিকাশ করলে চুরির মিটার ফেরৎ দেয়া হবে বলে জানায় দুর্বৃত্তরা। তবে অনেকেই আবার তাদের কথা মতো বিকাশ নম্বরে টাকা দিয়ে মিটার ফেরতও পাচ্ছেন। এতে করে শিল্প মিটারের গ্রাহকদের মাঝে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে।
উপজেলা চালকল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সাইদুল ইসলাম বলেন, পল্লী বিদ্যুৎ অফিস থেকে থ্রি ফেজের একটি শিল্প মিটার পেতে খচর হয় ২৫-২৭ হাজার টাকা। আমার চালকল প্রতিষ্ঠান থেকে একটি শিল্প মিটার চুরি হয়। এ বিষয়টি থানা পুলিশকে জানানো হয়েছিল। কিন্ত পুলিশের সহযোগীতা না পেয়ে চোর চক্রের দেওয়া বিকাশ নম্বরে ৫ হাজার টাকা দিয়ে মিটারটি উদ্ধার করেছি।
ধুনট পল্লী বিদ্যুতের জোনাল অফিসের সহকারী জেনারেল ম্যানেজার (এজিএম) আব্দুর রশিদ বলেন, এটা খুবই দুঃখজনক ঘটনা। মিটার চুরি গেলে পল্লী বিদ্যুতের কোনো দায়ভার নেই। পল্লী বিদ্যুৎ চলে একটি নীতিমালার ওপর। তবে আমরা গ্রাহককে দ্রæত সার্ভিস দিতে প্রস্তুত আছি। আর চুরির ঘটনা দেখার দায়িত্ব আইন-শৃংখলা বাহিনীর কাজ।
ধুনট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ইসমাইল হোসেন বলেন, একই বিকাশ নম্বর ব্যবহার করে ধুনট, নন্দিগ্রাম ও সিংড়া উপজেলা এলাকায় মিটার চুরি করেছে দূর্বত্তরা। ইতিমধ্যেই এই চক্রের ৩ সদস্যকে নন্দিগ্রাম ও সিংড়া থানার পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। ফলে এক সপ্তাহ ধরে এ এলাকায় নতুন করে আর মিটার চুরির ঘটনা ঘটেনি।
-সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।