শেরপুরে কালচারাল একাডেমী স্থাপনের দাবী

S M Ashraful Azom
0
শেরপুরে কালচারাল একাডেমী স্থাপনের দাবী

রেজাউল করিম বকুল শেরপুর প্রতিনিধি : শেরপুর জেলায় ৭টি নৃ-তাত্তি¡ক জনগোষ্ঠির বসবাস। এগুলো হলো-গারো, কোচ, হাজং, বর্মন, বানাই, ডালু ও হদি। এ ৭টি আদিবাসী জনগোষ্ঠির মধ্যে গারো, কোচ, হাজং এবং ডালু জনগোষ্ঠির নিজস্ব ভাষা রয়েছে। কিন্তু কালের বিবর্তনে কোন ধরনের বর্ণমালা সংরক্ষিত না হওয়ায় মুখে মুখে প্রচলিত ভাষা আজ বিলুপ্তির পথে। ভাষার সাথে সাথে হারিয়ে যাচ্ছে নৃ-জনগোষ্ঠির নিজস্ব কৃষ্টি-সংস্কৃতি। স্থানীয় নৃ-তাত্তি¡ক জনগোষ্ঠির ভাষা, কৃষ্টি-সংস্কৃতি সংরক্ষণ ও সম্প্রসারণে শেরপুর জেলার পাহাড়ি জনপদে ‘আদিবাসী কালচারাল একাডেমী’ স্থাপন করার দাবী জানিয়েছেন নৃ-জাতিগোষ্ঠির নেতারা। আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস উদযাপন উপলক্ষে ১৮ আগস্ট মঙ্গলবার দুপুরে ঝিনাইগাতীর গাজনী শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এমন দাবী জানানো হয়। নাগরিক প্ল্যাটফরম জনউদ্যোগ শেরপুর কমিটি ও ট্রাইবাল ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশন (টিডাবিওএ) এবং গারো, কোচ, হাজং, বর্মন, হদি সহ বিভিন্ন সংগঠনের যৌথ আয়োজনে ‘কভিড-১৯ : আদিবাসীদের জীবন-জীবিকা ও বেঁচে থাকার সংগ্রাম’ শীর্ষক এ আলোচনা সভাটি অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় স্থানীয় আদিবাসীদের ভুমির ঐতিহ্যগত মালিকানার স্বীকৃতি প্রদান ও বাপ-দাদার ভুমি থেকে উচ্ছেদ বন্ধ করা এবং সমতলের আদিবাসীদের জন্য সাংবিধানিক স্বীকৃতির দাবীও জানানো হয়। 
ট্রাইবাল ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশন নেতা মুক্তিযোদ্ধা হরলাল বর্মনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভাটি সঞ্চালনা করেন সুমন্ত বর্মন। । এতে অন্যান্যের মাঝে বক্তব্য রাখেন শ্রীবরদী টিডাবিওএ সভাপতি প্রাঞ্জল এম. সাংমা, ঝিনাইগাতীর সহ-সভাপতি চিন্তাহরণ হাজং,  জনউদ্যোগ আহবায়ক আবুল কালাম আজাদ, সাংবাদিক দেবাশীষ ভট্টাচার্য, বার্ড কনজারভেশন কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. শহীদুজ্জামান, আদিবাসী নেতা বিহার জাম্বিল, মনিন্দ্র বিশ^াস, যুগল কিশোর কোচ, বন্দনা চাম্বুগং, সুকুমার হাজং, ছাত্রনেতা মিঠুন কোচ, জীবন ¤্রং প্রমুখ। অনুষ্ঠানের শুরুতেই জাতীয় শোক দিবস ১৫ আগস্ট ট্রাজেডির স্মরণে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এক মিনিট দাঁড়িয়ে নিরবতা পালন করা হয়। আলোচনা সভা শেষে কবি ব্রিজেট বেবী স্বরচিত কবিতা আবৃত্তি করেন এবং প্রিয়াংকা রানী বর্মন সংগীত পরিবেশন করেন।

উপজাতি নেতা প্রাঞ্জল এম সাংমা বলেন, আদিবাসীরা সবসময় বিভিন্নভাবে বৈষম্য ও শোষণের শিকার হয়ে আসছে। শেরপুরে পাহাড়ি জনপদে বসবাসকারি অনেক আদিবাসীর জমি জবরদখল করে নেয়া হচ্ছে। তাদেরকে বাপ-দাদার ভিটা থেকে উচ্ছেদ করা হচ্ছে। মিথ্যা মামলা-মোকদ্দমা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, আদিবাসীদের সন্তানদের মেধা ও যোগ্যতা থাকা সত্তে¡ও বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে সরকারি চাকুরি থেকে তাদের বঞ্চিত করা হয়। অবিলম্বে আদিবাসীদের ঐতিহ্যগত উত্তরাধিকের জমি থেকে উচ্ছেদ বন্ধ এবং সরকারি চাকুরিতে কোটা পুনর্বহাল করতে হবে।

জনউদ্যোগ আহবায়ক আবুল কালাম আজাদ বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অসাম্প্রদায়িক, ধর্মনিরপেক্ষ, জাতিবৈচিত্রে বহুত্ববাদী রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশকে গড়ে তুলতে দেশের সকল নাগরিকের মাঝে উপজাতিদের প্রতি ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি তৈরী করতে হবে। দেশের উন্নয়ন ধারায় সামগ্রিক জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে উপজাতিদের প্রতি বিশেষ নজর দিতে হবে। অনুষ্ঠানের শেষে শেরপুরের পুলিশ সুপার ও তার পরিবার এবং করোনা আক্রান্তদের আরোগ্য কামনায় সর্বধর্মীয় প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হয়। প্রার্থনা পরিচালনা করেন পাস্টার জনাথন বনোয়ারি।


-সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন
ট্যাগস

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top