রফিকুল আলম,ধুনট (বগুড়া): সামর্থ অনুযায়ী কেউ দান করেন নগদ টাকা। কেউ দিয়েছেন ইট, বালু, সিমেন্ট ও রড। অনেকেই দিয়েছেন ধান-চাল। কেউবা আবার স্বেচ্ছায় দিচ্ছেন শ্রম। এ ভাবেই তিলে তিলে জমানো অর্থে সংস্কার করছেন শত বছরের পুরনো শ্মশান। আর এসবই করছেন বগুড়ার ধুনট উপজেলার বানিয়াগাতি গ্রামবাসি। একতাই বল-এ প্রবাদ বচন কাজে লাগিয়ে দান-দক্ষিনার টাকায় দীর্ঘদিনের দুঃখ-দূর্দশা মোচন করছেন গ্রামের মানুষ।
বৃহস্পতিবার সরেজমিন দেখা গেছে, বানিয়াগাতি স্বাধীন পাড়ার সরকারবাড়ি দহের পাড়ে শ্মশানটি। সরকারি প্রায় ২০ শতক জমির উপর এটি নির্মিত হয়েছে। এখানে বানিয়াগাতি, মথুরাপুর, পিরহাটি সহ পার্শ্ববতি বিভিন্ন গ্রামের হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের মরাদেহ সৎকার করা হয়। দীর্ঘদিন ধরে সংষ্কার অভাবে শ্মশানটি জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। কিন্ত স্থানীয় জনপ্রতিনিধি কিংবা সরকারি ভাবে শ্মশানটি সংস্কারের ব্যবস্থা করা হয়নি।
ফলে গ্রামবাসি নিজেদের চাঁদার টাকা ও স্বেচ্ছাশ্রমে এক সপ্তাহ আগে থেকে শ্মশানের সংষ্কার কাজ শুরু করেছেন। সংস্কারের পাশাপাশি এখানে মন্দির, চিতা, সীমানা প্রাচীর ও সিঁড়িঘাট নির্মানের পরিকল্পনা রয়েছে। এই কাজ বাস্তবায়ন করতে তাদের প্রায় ১০ লাখ টাকার প্রয়োজন। তবে গ্রামের শতাধিক পরিবারের নিকট থেকে প্রায় দুই লাখ টাকা চাঁদা তুলে তারা কাজ শুরু করেছেন। প্রতিদিন সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত পালা করে চলে তাদের এই কাজ।
শ্মশান সংস্কারের উদ্যোক্তা গৌর চন্দ্র সরকার জানান, বিভিন্ন জনপ্রতিনিধিসহ সবার কাছে অনেকবার শ্মশানটি সংস্কারের দাবি জানানো হয়েছে। কিন্ত কেউ উদ্যোগ নেননি। তাই আমরাই উদ্যোগটা নিয়েছি। সবাই সাধ্যমতো চাঁদা দিয়ে প্রায় ২লাখ টাকা সংগ্রহ করে কাজ শুরু করা হয়েছে। টাকা দেওয়ার পর সবাই শারীরিক শ্রমও দিচ্ছেন। এছাড়া শ্মশানে যাতায়াতের রাস্তাটিও প্রয়োজন। কিন্ত রাস্তাসহ শ্মশানের পুরো কাজ বাস্তবায়নের আর্থিক সেই সামর্থ আমাদের নেই।
ধুনট উপজেলার গোপালনগর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান গোলাম হোসেন সরকার বলেন, গ্রামবাসি শ্মশানের সমস্যার বিষয় নিয়ে আমার সাথে যোগাযোগ করেনি। তারপরও খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।