রাজু আহমেদ সাহান-উল্লাপাড়া প্রতিনিধি: সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় আসন্ন কোরবানী ঈদকে সামনে রেখে প্রস্তুত করা ষাঁড় গরু বিক্রয় করা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন ছোট-বড় খামারিরা। এদিকে কোরবানি ক্রয় করা নিয়েও বিপাকে পড়েছেন পাইকার ও সাধারন ক্রেতারা। ঈদ যতই ঘনিয়ে আসছে সমস্যা ততোই ঘনীভূত হচ্ছে। সব মিলে ক্রেতা-বিক্রেতার মধ্যে এক অসম দেওয়াল সৃষ্টি হয়েছে। করোনার কারণে চলমান লকডাউন বেড়ে যাওয়ায় দেশের সর্বত্র এই সংকট দেখা দিয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, উল্লাপাড়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্য মতে ঈদুল আযহা উপলক্ষে উপজেলার ১৪টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভার ছোট বড় খামারী ও ব্যক্তি উদ্যোগে প্রায় ৩২ হাজার ষাঁড় গরু বিক্রয়ের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। করোনা পরিস্থিতিতে প্রস্তুত করা গরুগুলো সঠিক সময়ে ন্যায্য মূল্যে বিক্রয় করতে পারবে কি না এ নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন গরু মালিকেরা।
উপজেলার একাধিক গরু খামারী ও মালিক গণমাধ্যম কর্মীদেরকে জানান, প্রতি বছর কোরবানী ঈদের ১ মাস আগে থেকে ঢাকার ব্যাপারীরা খামারে ও বাড়ি বাড়ি গিয়ে পালন করা গরু ভালো দামে ক্রয় করে থাকেন। অর্ধেকের বেশি গরু ঈদ হাটের আগেই বিক্রয় হয়ে যায়। এবার লকডাউনের কারনে সে ধরনের কোন বেচা - কেনা হয়নি। ঈদের আর ক'দিন মাত্র বাকী। ঢাকার কোন ব্যাপারি গরু কেনার জন্য এখন পর্যন্ত এলাকায় আসেননি। কাজিপাড়া গ্রামের খামারি নূরে আলম জানান, তার প্রায় ৩ মণ ওজনের একটি ষাড় গরু কোরবানিতে বিক্রির জন্য প্রস্তুত করেছেন তিনি। গরুটি প্রস্তুত করতে তার ব্যয় হয়েছে প্রায় ৫৫ হাজার টাকা । কিন্তু এখন পর্যন্ত কেউ তার গরু কেনার জন্য আসেন নাই। গ্রামের দু’একজন দেখলেও দাম বলছেন না। গরুর দাম ও বিক্রি নিয়ে তিনি এখন চিন্তিত।
উপজেলার পঞ্চক্রোশির ফেন্সি ডেইরি এ্যাগ্রো ফার্ম লিমিটেড এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইমুল আলম হৃদয় জানান, তার খামারে কোরবানি ঈদ উপলক্ষে বিভিন্ন জাতের ৪২ টি ষাঁড় গরু বিক্রির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। এর মধ্যে সিন্ধি, বার্মা, শাহীয়াল ও দেশী জাতের গরুও রয়েছে। অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর গরু বেশি পরিমানে বৃদ্ধি পেয়েছে। ইতিমধ্যে গরু বিক্রির জন্য অনলাইনে ওজনসহ ছবি ও ভিডিও পোষ্ট করেছেন তিনি। দু’এক জায়গা থেকে গ্রাহকের বেশ সাড়া পাচ্ছেন বলে জানান খামার মালিক। শনিবার সকাল পর্যন্ত ছোট বড় মিলে মোট ৮টি গরু অনলাইনে বেশ ভালো দামে বিক্রি করতে পেরেছেন। এভাবে বিক্রি হলে ৪২ টি গরু ৫০-৬০ লাখ টাকা বিক্রি করতে পারবেন বলে তিনি জানান।
উপজেলার বড় পাঙ্গাসী গ্রামের খামারি আলমগীর হোসেন জানান, তার খামারে ৭টি শাহীয়াল ও সিন্ধি জাতের বড় গরু রয়েছে। লকডাউনের মধ্যে এলাকার কয়েকজন দাম করলেও তিনি এখন পর্যন্ত গরু বিক্রি করতে পারেননি। গরুর সঠিক দাম না পেলে তার বড় ধরনের লোকসান গুনতে হবে বলে তিনি গণমাধ্যম কর্মীদের জানান।
এ ব্যাপরে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাক্তার মোঃ মোর্শেদ উদ্দীন আহম্মদ জানান, উপজেলায় ছোট বড় ৫ হাজার খামারীর ২৬ হাজার ষাড় গরু কোরবানিতে বিক্রির জন্য প্রস্তুত করেছে। ব্যক্তিগতভাবে আরোও ৬ হাজার গরু প্রস্তুত করেছেন বিভিন্ন গ্রামের কৃষক। দেশের মহামারি করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে পশুর হাট না থাকায় আমাদের সিরাজগঞ্জ জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা সার্বিক জেলার জন্য অনলাইনে গরু বিক্রির জন্য িি.িঢ়ড়ংযড়ৎযঁঃ.মড়া.নফ নামে একটি ওয়েবসাইট খুলেছেন। কোন খামারী ইচ্ছা করলে আমাদের সাথে যোগাযোগ করে এই ওয়েবসাইটে গরু বিক্রির জন্য নাম, ঠিকানা ও কন্ট্রাক নাম্বারসহ গরুর ওজনসহ ছবি ও ভিডিও আপলোড করতে পারবেন। তাছাড়া আমরা উপজেলার খামারীদের সার্বিক সুবিধার জন্যঁষড় ঁষষধঢ়ধৎধ নামে একটি ফেসবুক পেজ খুলে গরু বেচা-কেনার সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছি খামারিদের।খামারীরা ইচ্ছা করলে আমাদের সাথে যোগাযোগ করে গরু বিক্রির জন্য ছবি ও ভিডিও আপলোড করতে পারেন।
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।