অমানবিক খালেদার অমানবিকতা: ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা

S M Ashraful Azom
0
অমানবিক খালেদার অমানবিকতা ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা



সেবা ডেস্ক: ২০০৪ সালে’র ২১ আগস্টে আওয়ামীলীগে’র জন সভায় ভয়াবহ গ্রেনেড হামলা সুস্পষ্টভাবে ছিল বিএনপি জামায়াতে’র এক মাস্টা’রপ্ল্যান। সময়ে প্রধান বিরোধি দল আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বশূন্য করা এবং বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে চি’রতরে নিঃশেষ করে দেওয়া’র জন্য এই ভয়াবহ গ্রেনেড হামলা’র ঘটনা হয়েছিল। যা আদালতে’র রায়ে প্রমাণিত। বেগম খালেদা জিয়া তখন প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। বেগম খালেদা জিয়া এই গ্রেনেড হামলা’র প’র ন্যূনতম দুঃখ প্রকাশ করেননি বরং তিনি তৎকালীন বিরোধী দলে’র নেতা শেখ হাসিনা ভ্যানিটি ব্যাগে করে গ্রেনেড নিয়ে গিয়েছিলেন এমন উদ্ভট, অমানবি্দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য করেছিলেন। বাংলাদেশে’র প্রেক্ষাপটে না, বিশ্বে’র যে কোন স’রকা’রপ্রধানে’র অমানবিকতা’র একটি বড় নিদর্শন বলেই মনে করা হয়।

উক্ত গ্রেনেড হামলায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগে’র সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন আহত হয়ে মৃত্যু’র সঙ্গে পাঞ্জা লড়েছেন। প’রবর্তী সময়ে উন্নত চিকিৎসায় তিনি সুস্থতা ফিরে পেলেও এখনো শরীরে স্প্লিন্টা’র বয়ে বেড়াচ্ছেন। এখনো অসহ্য ব্যথায় কুঁকড়িয়ে ওঠেন। 

২১ আগস্ট আওয়ামী লীগে’র শান্তি সমাবেশে’র কথা প্রেক্ষাপট তুলে ধরে এসএম কামাল হোসেন বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনা’র গাড়িবহরেই আমি ২৩-বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে যাই। আমরা সিঁড়ি’র কাছে দাঁড়িয়ে সমাবেশে বক্তব্য শুনছিলাম। সেখানে ছিলেন বর্তমান আওয়ামী লীগে’র সাধা’রণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদে’র, বাহাউদ্দিন নাছিমসহ ছাত্রলীগে’র অনেক সাবেক নেতৃবৃন্দ। জননেত্রী শেখ হাসিনা বক্তৃতা শেষে অস্থায়ী মঞ্চ থেকে নামা’র প্রস্তুতি নিচ্ছেন। মিছিল শুরু হবে। তখন ফটোগ্রাফা’র গোর্কি নেত্রীকে অনুরোধ ক’রলেন, আপা আমি ছবি তুলতে পারি নাই। আপা দাঁড়িয়ে পড়লেন। হঠাৎ করে একটি আওয়াজ হল। সেই আওয়াজে চা’রদিক দৌড়াদৌড়ি শুরু হল এবং প’রপ’র বেশ কয়েকটি আওয়াজ হওয়া’র মধ্য দিয়ে দেখলাম আমি পড়ে গেছি। আমাকে তখন নেত্রী’র ড্রাইভা’র আলী হোসেন এবং শাজাহান ঢাকা মেডিকেল নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসক ছিল না, ওষুধ ছিল না। কা’রণ সব আহত রোগীরা সেখানে যাচ্ছিল। আমাকে দলীয় কিছু শুভাকাঙ্ক্ষীরা ধানমন্ডি’র ডেল্টা ক্লিনিকে নিয়ে আসেন। আমা’র সাথে এসেছিলেন ছাত্রলীগে’র সাবেক নেতা সেন্টু। কিন্তু হাসপাতালে আসা’র প’র আমাকে ভর্তি ক’রলেও সেন্টুকে ভর্তি ক’রলেন না।

 

সেদিনে’র স্মৃতিচা’রণ করে তিনি বলেন, তখন আমা’র জ্ঞান আছে। আমি জিজ্ঞাসা ক’রলাম সেন্টুকে ভর্তি করা হল না কেন? চিকিৎসক আমাকে বলল মারা গেছে। এ’রপ’র আমি ডেল্টা ক্লিনিকেই ভর্তি ছিলাম। নেত্রীও গ্রেনেড হামলায় আহত হয়েছেন তা’রপ’রও তা’র ব্যক্তিগত সিকিউরিটি পাঠিয়ে দিয়ে আমা’র খোঁজ নিয়েছেন। আমা’র চিকিৎসা শুরু হল এবং সবাই মনে করেছিল যে আমাকে বাঁচানো কঠিন। পরে’র দিন অপারেশন করা হয়। এখানে অপারেশন করে কোনো ‘রকম সুস্থে’র দিকে এগিয়ে গেলে পরিপূর্ণভাবে চিকিৎসা’র জন্য নেত্রীই আমাকে দেশে’র বাইরে পাঠান।

 

তৎকালীন ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী যে উদ্দেশ্য লক্ষ্য নিয়ে গ্রেনেড হামলা সংঘটিত করেছিল, সে প্রসঙ্গেও কথা বলেন এসএম কামাল হোসেন। তিনি বলেন, মূলত ২০০৪ সালে’র ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা’র মূল লক্ষ্য ছিল আজকে’র প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যা করা। এই মূল পরিকল্পনা নিয়েই সেদিন গ্রেনেড হামলা হয়েছিল। প’রবর্তী সময়ে আমরা যেটা জেনেছি যে পঁচাত্তরে’র খুনিরা এবং একাত্তরে খুনি; এদে’রকে নিয়ে তারেক জিয়া হাওয়া ভবনে বসে বৈঠক করে এই হত্যা’র পরিকল্পনা করেন। দায়িত্ব দেওয়া হয় বিএনপি’র তৎকালীন উপমন্ত্রী পিন্টু’র ভাই মাওলানা তাজউদ্দিনকে। যে হ’রকাতুল জিহাদে’র সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তা’র নেতৃত্বে জঙ্গিদে’র সংগঠিত করে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা করা হয়।

 

এই হামলা’র পেছনে’র প্রেক্ষাপট তুলে ধরে এসএম কামাল বলেন, ২০০১ সালে বিএনপি ষড়যন্ত্র করে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসা’র প’র বাংলাদেশকে আবা’র পাকিস্তানে’র ধারায় ফিরিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন। বাংলাদেশকে আবা’র এক অন্ধকা’র যুগে পরিণত হয়েছিল। খালেদা-নিজামী’র বছরে’র শাসনামলে জঙ্গিদে’র পৃষ্ঠপোষক ছিল বিএনপি’র আটজন মন্ত্রী। তাদে’র পৃষ্ঠপোষক ছিলেন তারেক জিয়া। তারা বাংলাদেশকে একটি খুনে’র বাংলাদেশে পরিণত করেছিল। সন্ত্রাসে’র বাংলাদেশে পরিণত করেছিল। কিন্তু এই দুঃশাসন-অপশাসনে’র বিরুদ্ধে দেশে’র মানুষ জননেত্রী শেখ হাসিনা’র নেতৃত্বে যখন আবা’র সেই দুঃসময়ে ঘুরে দাঁড়াল তখন এই পঁচাত্ত’র এবং একাত্তরে’র খুনিরা মনে ক’রল শেখ হাসিনা যদি আবা’র রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসে তাহলে যুদ্ধাপরাধীদে’র বিচা’র হবে। বঙ্গবন্ধু’র হত্যাকারীদে’র বিচারে’র রায় বাস্তবায়িত হবে। এই কা’রণে সেদিন জননেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যা করা’র পরিকল্পনা করা হয়।

এস এম কামাল বলেন, পার্লামেন্ট যখন বিরোধী দলীয় নেত্রী শেখ হাসিনা ২১ আগস্ট নিয়ে কথা বলতে দাঁড়ালেন, তখন তা’র মাইক বন্ধ করে দেওয়া হল। আ’র খালেদা জিয়া দাঁড়িয়ে বললেন, ওনাকে আবা’র মা’রবে কে? ভানিটি ভ্যাগ করে উনি গ্রেনেড নিয়ে গিয়েছিলেন। এই সমস্ত বক্তব্যে’র মধ্য দিয়ে প্রমাণ হয়েছে খালেদা জিয়াও বিষয়টি জানতেন।  

 


শেয়ার করুন

-সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন
ট্যাগস

Post a Comment

0Comments

খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।

Post a Comment (0)

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top