শহীদ লেফটেন্যান্ট জি এম মুশফিকুর রহমানের ৩৬তম শাহাদাত বার্ষিকী আজ

Seba Hot News : সেবা হট নিউজ
0

ঢাকা, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫: আজ সোমবার স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশের একমাত্র 'বীর উত্তম' খেতাবপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা শহীদ লেফটেন্যান্ট জি এম মুশফিকুর রহমানের ৩৬তম শাহাদাত বার্ষিকী।

Today-is-the-36th-martyrdom-anniversary-of-martyred-Lieutenant-GM-Mushfiqur-Rahman
শহীদ লেফটেন্যান্ট জি এম মুশফিকুর রহমানের ৩৬তম শাহাদাত বার্ষিকী আজ



দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় আত্মোৎসর্গের এই মহান দিনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীসহ দেশবাসী গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করছেন এই অকুতোভয় বীর সন্তানকে।



১৯৮৬ সালের ২৫ ডিসেম্বর বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমি (বিএমএ) থেকে ১৫তম বিএমএ দীর্ঘমেয়াদী কোর্সে কমিশন লাভ করেন মুশফিক। তিনি ১ ফিল্ড রেজিমেন্ট আর্টিলারিতে যোগ দেন এবং ১৯৮৯ সালে পার্বত্য চট্টগ্রামের খাগড়াছড়ি জেলার বাঘাইহাট জোনের অধীন লক্ষীছড়ি সেনা ক্যাম্পের কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।



১৯৮৯ সালের এই দিনে (৮ সেপ্টেম্বর) গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে কাসালং রিজার্ভ ফরেস্টের ঢেরাছড়া এলাকায় শান্তিবাহিনীর আস্তানায় অভিযান পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেন লেফটেন্যান্ট মুশফিক। রাত আনুমানিক ৩টায় তিনি তার আভিযানিক দল নিয়ে সেখানে পৌঁছান। সাহসিকতার সাথে তিনি শান্তিবাহিনীর তিন সশস্ত্র সদস্যকে আহত করেন এবং দুটি অস্ত্র, গোলাবারুদ, ইউনিফর্ম ও গোপনীয় দলিলপত্র উদ্ধার করেন।



অভিযানের একপর্যায়ে তিনি গুলিবিদ্ধ হন। কিন্তু গুরুতর আহত অবস্থাতেও তিনি তার অধীনস্থ সৈনিকদের দক্ষতার সাথে নির্দেশনা দিতে থাকেন। এতটাই ঠান্ডা মাথায় কাজ করেন যে, তার সৈনিকেরা প্রথমে বুঝতেই পারেননি তাদের প্রিয় অফিসার গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। 


অভিযান শেষে তার রানার সৈনিক মোস্তফা তা লক্ষ্য করে কান্নায় ভেঙে পড়েন এবং প্রশ্ন করেন, "স্যার, গুলি লেগেছে বলেননি কেন?" লেফটেন্যান্ট মুশফিক হাসিমুখে উত্তর দেন, "আমার গুলি লেগেছে তা দেখলে তোমরা ভয় পেতে, দেশের চেয়ে আমার জীবন বড় নয়।" অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে সকাল আনুমানিক ৮টায় তিনি শাহাদাতবরণ করেন।



তার অসামান্য বীরত্ব ও আত্মত্যাগের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৯০ সালের ২৫ জানুয়ারি তৎকালীন রাষ্ট্রপতি তাকে মরণোত্তর সর্বোচ্চ বীরত্ব খেতাব 'বীর উত্তম' এ ভূষিত করেন। 


তার স্মৃতি ধরে রাখতে লক্ষীছড়ি সেনা ক্যাম্পের নামকরণ করা হয় 'শহীদ লেফটেন্যান্ট জি এম মুশফিকুর রহমান আর্মি ক্যাম্প'।



আজ সারা দেশে বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে শ্রদ্ধা জানানো হচ্ছে এই মহান শহীদকে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে তার সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ, বিশেষ মোনাজাত ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। 


শহীদ মুশফিকের আত্মত্যাগ ও দেশপ্রেম নতুন প্রজন্মের জন্য অনুপ্রেরণার অদ্বিতীয় উদাহরণ। তার রক্তে রাঙানো ইতিহাস বাংলাদেশের মাটি ও মানুষের হৃদয়ে চিরদিন অম্লান থাকবে। তার স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে দেশবাসী পুনর্বার প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়েছে দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় যেকোনো ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত থাকার।



সূত্র: /সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশ্যে আপোষহীন

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top