সেবা ডেস্ক: অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, ফ্যাসিবাদী শাসনের পতনের পর গত এক বছরে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ সংখ্যক আইন কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
![]() |
দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ সংখ্যক আইন কর্মকর্তা নিয়োগ: বিচার ব্যবস্থায় নতুন দিগন্ত |
এই তথ্য রোববার (৩১ আগস্ট ২০২৫) প্রধান উপদেষ্টার অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।
এই নিয়োগ প্রক্রিয়া দেশের বিচার ব্যবস্থায় স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে এবং জনগণের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর ফ্যাসিবাদী আমলে নিয়োগপ্রাপ্ত বহু আইন কর্মকর্তা দেশ ত্যাগ করেন বা পালিয়ে যান। এর ফলে দেশের আদালতগুলোতে বিচার কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়।
বিশেষ করে গুরুত্বপূর্ণ মামলাগুলোতে প্রসিকিউটর এবং বিচারকের ঘাটতির কারণে বিচারপ্রার্থীদের ভোগান্তি বৃদ্ধি পায়।
এই সংকটের ফলে ন্যায়বিচার প্রাপ্তি কঠিন হয়ে পড়ে, যা জনগণের মধ্যে বিচার ব্যবস্থার প্রতি আস্থার ঘাটতি সৃষ্টি করে।
এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় অন্তর্বর্তী সরকার দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
(ads1)
বিগত এক বছরে সরকার দেশের বিভিন্ন আদালত ও ট্রাইব্যুনালে ৪,৮৮৯ জন সরকারি আইন কর্মকর্তা নিয়োগ দিয়েছে।
এছাড়া, অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসে ২৭৪ জন অ্যাটর্নি নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে নতুন বিচারক এবং প্রসিকিউটর নিয়োগের মাধ্যমে এই খাতে সক্ষমতা বৃদ্ধি করা হয়েছে।
এর পাশাপাশি, প্রধান বিচারপতিসহ আপিল বিভাগে ৫ জন এবং হাইকোর্ট বিভাগে ২৩ জন নতুন বিচারপতি নিয়োগে সচিবালয় সহায়তা প্রদান করেছে।
এই নিয়োগগুলো স্বচ্ছ এবং যোগ্যতার ভিত্তিতে সম্পন্ন হয়েছে, যা বিচার বিভাগের দক্ষতা ও নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
আরও পড়ুন:
এই ব্যাপক নিয়োগ প্রক্রিয়ার ফলে বিচার বিভাগে কর্মকর্তা ও বিচারকের পর্যাপ্ত সংখ্যা নিশ্চিত হয়েছে। ফলস্বরূপ, মামলা নিষ্পত্তির গতি উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে এবং মামলার জট কমানো সম্ভব হচ্ছে।
এই উন্নতি বিচারপ্রার্থীদের জন্য ন্যায়বিচার প্রাপ্তির পথকে আরও সহজ করেছে। সরকারের দাবি, এই পদক্ষেপগুলো দেশের বিচার ব্যবস্থার উপর জনগণের আস্থা পুনরুদ্ধার করবে এবং একটি কার্যকর, সক্রিয় এবং নিরপেক্ষ আইনি পরিবেশ গড়ে তুলবে।
অন্তর্বর্তী সরকার জানিয়েছে, বিচার ব্যবস্থার সংস্কার ও উন্নয়নের জন্য তাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। ভবিষ্যতে আরও দক্ষ ও যোগ্য আইন কর্মকর্তা নিয়োগের পরিকল্পনা রয়েছে।
এছাড়া, বিচারক ও প্রসিকিউটরদের প্রশিক্ষণ এবং আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানোর মাধ্যমে বিচার প্রক্রিয়াকে আরও স্বচ্ছ ও দ্রুত করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।
এই পদক্ষেপগুলো দেশের বিচার ব্যবস্থাকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করতে সহায়তা করবে।
(ads2)
এই নিয়োগ প্রক্রিয়া এবং বিচার ব্যবস্থার উন্নতির খবরে জনগণের মধ্যে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা গেছে।
অনেকেই মনে করছেন, এই পদক্ষেপগুলো দীর্ঘদিনের মামলার জট কমাতে এবং ন্যায়বিচার প্রাপ্তির পথ সুগম করতে সহায়ক হবে।
তবে, কিছু নাগরিক এই নিয়োগ প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা এবং দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। সরকার এই বিষয়ে জনগণের মতামতকে গুরুত্ব দিয়ে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ সংখ্যক আইন কর্মকর্তা ও বিচারক নিয়োগের এই উদ্যোগ বিচার ব্যবস্থায় একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে।
এটি শুধুমাত্র মামলার জট কমানোর মাধ্যমে বিচারপ্রার্থীদের ভোগান্তি লাঘব করেনি, বরং জনগণের মধ্যে বিচার ব্যবস্থার প্রতি আস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের এই পদক্ষেপ ভবিষ্যতে দেশের আইনের শাসনকে আরও শক্তিশালী করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।