শফিকুল ইসলাম: কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারী উপজেলায় তীব্র শীত ও প্রচন্ড ঠান্ডায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়েছে পড়েছে। শীতের দাপটে গ্রামাঞ্চলের অনেকেই আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন।
![]() |
| রৌমারীতে তীব্র ঠান্ডায় জনজীবন বিপর্যস্ত, দূর্ভোগে খেটে খাওয়া মানুষ |
দিনের বেলা সূর্য্যরে তাপ না থাকায় হিমেল বাতাসে কমতে থাকে তাপমাত্রা। সূর্য্যরে আলো দেখা না দেওয়ায় দূর্ভোগে পড়েছে খেটে খাওয়া মানুষগুলো। ভোর থেকে ঘন কুয়াশা আর হিমেল বাতাসে মানুষ কাজে বের হতে পারছেন না। দিনমজুর, নৌকার মাঝি, কৃষি- পাথর ভাঙ্গা শ্রমিক ও বিভিন্ন যানবাহন চালকদের আয় প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। ঠান্ডায় কাজ করতে না পারায় অনেক পরিবার অনাহারে দিন কাটছে। অন্য দিকে রৌমারী ও রাজিবপুর চরাঞ্চলে ঘনকুয়াশা ও প্রচন্ড শীত নিবারণের মতো কাপড় না থাকায় শিশু ও বয়স্করা সবচেয়ে বেশি কষ্টে রয়েছে। ঘন কুয়াশার কারণে দিনের বেলায় হেডলাইট জ্বালিয়ে যানবাহনগুলোকে চলাচল করতে দেখা গেছে। শীতের তীব্রতায় কাহিল হয়ে পুরাতন কাপড়ের দোকানে ভিড় করছে নিম্ন আয়ের মানুষ। শীতের এই প্রকোপে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন রৌমারী ও রাজিবপুর চরাঞ্চলের খেটে খাওয়া মানুষ। যাদের জীবনে প্রতিটি দিনই সংগ্রামের, আর এই শীতে সেই সংগ্রাম আরও কঠিন হয়ে উঠেছে।
মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) সকাল ৭ টায় জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১১.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে বলে জানিয়েছে কুড়িগ্রাম রাজারহাট আবহাওয়া অফিস।
রৌমারী সদর ইউনিয়নের পাথর ভাঙ্গা শ্রমিক দিনমজুর আকাশ মিয়া বলেন, ভোরে কাজে বের হলে হাত-পা শক্ত হয়ে যায়। ঠান্ডায় কাজ করতে পারি না। আমার বাড়তি কোন আয় না থাকায় পরিবার অনাহারে কষ্টে দিন কাটছে।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, শীত বাড়লেও চরাঞ্চলে এখনো পর্যাপ্ত শীতবস্ত্র পৌঁছেনি। অনেক এলাকায় সরকারি ও বেসরকারি সহায়তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম।
অপর দিকে প্রচন্ড ঠান্ডায় শিশু ও বয়স্কদের নিউমোনিয়া, সর্দি-কাশি ও শ্বাসকষ্টের ঝুকি বেড়েছে। প্রতিদিনেই ৫/৭ করে শিশু ও বয়স্করা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভতি হচ্ছে। এসব রোগীদের চিকিৎসাসেবা দিতেও হিমশিম খাচ্ছে চিকিৎসকরা। শীত জনিত রোগ প্রতিরোধে গরম কাপড় ব্যবহার ও প্রয়োজনীয় সতর্কতা জরুরি।
রৌমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্তব্যরত চিকিৎসক (আরএমও) ডা. নবিউর রহমান জানান, প্রতিদিনেই শিশু ও বয়স্করা শ^াসকষ্ট সহ নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে পরিস্থিতি আরো খারাপের দিকে যাবে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, গত কয়েক দিনের ঘনকুয়াশায় প্রায় ১৫ হেক্টর জমির বিভিন্ন ফসলের ক্ষতির সম্ভনা দেখা দিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে বোর ধানের বীজতলা ৩, সরিষা ৮, গম ৩ ও গোল আলু ১ হেক্টও জমি। বোর ধানের বীজতলা নষ্ট হলে কৃষকরা মারাত্মক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হবে। আমরা বিভিন্ন ভাবে কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে আসছি।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. শামজউদ্দিন জানান, এ পর্যন্ত আমরা ১ হাজার ৩’শ কম্বল পেয়েছি। যা প্রতিটি ইউনিয়নে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সাথে নিয়ে শীতার্থ মানুষের সাঝে বিতরণ করা হয়েছে। সামনে আরো বরাদ্দ পেলে পর্যায়ক্রমে বিতরণ করা হবে। তবে এ উপজেলায় কত মানুষের গরম কাপড়ের প্রয়োজন তার কোন তথ্য দিতে পারেনি এই কর্মকর্তা।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার আলাউদ্দিন বলেন, এ পর্যন্ত যে কম্বল বরাদ্দ পেয়েছি তা প্রতিটি ইউনিয়নের দরিদ্র শীতার্থ মানুষের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে।
সূত্র: /সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশ্যে আপোষহীন
রৌমারী- নিয়ে আরও পড়ুন

২৮, কুড়িগ্রাম-৪ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিলেন যারা

রৌমারীতে শীতার্ত মানুষের মাঝে কম্বল বিতরণ

রৌমারীতে বিষপানে বোনের মৃত্যু-ভাই অসুস্থ

রৌমারীতে বার্ষিক পরীক্ষার ফলাফল ও অভিভাবক সমাবেশ অনুষ্ঠিত


খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।