সাকিবের ৫ উইকেট সত্ত্বেও ব্যাকফুটে বাংলাদেশ

Nuruzzaman Khan
সেবা ডেস্ক: প্রথম বাংলাদেশি বোলার হিসেবে সাকিবের ১৫০ উইকেট শিকারের দিনে চট্টগ্রাম টেস্টে তৃতীয় দিন শেষে দ্বিতীয় ইনিংসে ২৭৩ রানের লিড নিয়েছে ইংল্যান্ড। আট উইকেট হারিয়ে ২২৮ রান করেছে সফরকারীরা।
 
এর আগে শনিবার সকালে ৫ উইকেট ও ৭২ রানে পিছিয়ে থেকে নিজেদের প্রথম ইনিংসে খেলতে নেমে ২৪৮ রানেই গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ। দ্বিতীয় দিনের শেষভাগে মুশফিকুর রহিমের আউট অনেকখানি আক্ষেপ বাড়িয়ে দেয় বাংলাদেশের। তারপরও সাকিব আল হাসান ও পরবর্তীতে সাব্বির রহমান ও মেহেদি হাসান মিরাজের নাম থাকায় ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথমবারের মত লিড নেয়ার স্বপ্নে বিভোর ছিলো বাংলাদেশ। তৃতীয় দিনের শুরুতেই হতাশ করেন সাকিব। দিনের শুরুতেই উইকেট ছেড়ে বোলার মঈন আলীর উপর চড়াও হতে গিয়ে উইকেটটাই বিসর্জন দেন সাকিব। আগের দিনের ৩১ রানেই শেষ হয় তার ইনিংস। 
 
সাকিব ফিরে যাওয়ার পরে ইংলিশ অলরাউন্ডার বেন স্টোকসের মিডিয়াম পেসের সামনে নুয়ে পড়ে বাংলাদেশের টেল-এন্ডার। মিরাজ ১, সাব্বির ১৯ ও রাব্বি শূন্য রান করে স্টোকসের শিকার হন। আগের দিন মুশফিকুরকে ফেরানোয়, এই ইনিংসে তার শিকার সংখ্যা ২৬ রানে ৪ উইকেট। ফলে বাংলাদেশ অলআউট হয় ২৪৮ রানে। আগের দিন নাইটওয়াচম্যান হিসেবে নামা শফিউল ২ রান করে স্পিনার আদিল রশিদের শিকার হন। রশিদ ২ ও মঈন ৩ উইকেট নেন। 
 
প্রথম ইনিংস থেকে পাওয়া ৪৫ রানের লিডকে সাথে নিয়ে লাঞ্চের এক ঘণ্টা আগে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে খেলতে নেমে সতর্ক শুরু করেছিলেন ভাবেই করেছিলেন সফরকারী দুই ওপেনার অধিনায়ক অ্যালিস্টার কুক ও বেন ডাকেট। উদ্বোধনী জুটি নিয়ে অধিনায়ক মুশফিকুরের কপালের ভাজ দূর করেন প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের সেরা বোলার মিরাজ। কুককে ১২ রানেই থামিয়ে দেন তিনি। পরের ওভারে বাংলাদেশকে দ্বিতীয় সাফল্য এনে দেন সাকিব। জো রুটকে ১ রানের বেশি করতে দেননি তিনি। আর লাঞ্চ বিরতির ঠিক আগে আগে বেন ডাকেটকে তুলে নিয়ে বাংলাদেশকে দারুণভাবে খেলায় রাখেন সাকিব। ১৫ রান করেন ডাকেট। এসময় ইংল্যান্ডের রান ছিলো ৩ উইকেটে ২৮ রান। লাঞ্চের আগের সাফল্যটা পরেও ধরে রাখাতে আপ্রাণ চেষ্টা করে বাংলাদেশের বোলাররা। কিছুটা দেরিতে হলেও, সাফল্য মিলে বাংলাদেশের ভাগ্যে। দলীয় ৪৬ ও ৬২ রানে মিডল-অর্ডারের দুই ব্যাটসম্যান গ্যারি ব্যালেন্স ও মঈন আলীকে বিদায় দিয়ে চালকের আসনে বসে যায় বাংলাদেশ। ব্যালেন্সকে ৯ রানে তাইজুল ও মঈনকে ১৪ রানে থামিয়ে দেন সাকিব। 
 
৬২ রানের মধ্যে ৫ উইকেট হারিয়ে দারুণ চাপে পড়ে যাওয়া ইংল্যান্ডকে এরপর খেলায় ফেরানোর চেষ্টা করেন স্টোকস ও জনি বেয়ারস্টো। দ্রুতই উইকেটের সাথে মানিয়ে নিয়ে ষষ্ঠ উইকেটে দারুণ এক জুটি গড়েন তারা। ফলে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিজের আয়ত্তে নিয়ে নেন স্টোকস ও বেয়ারস্টো। তাই এই জুটি ভাঙ্গার চেষ্টাতে ব্যর্থ হয় বাংলাদেশের বোলাররা। অবশেষে ৬২তম ওভারের চতুর্থ বলে এই জুটি ভেঙ্গে বাংলাদেশ শিবিরে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলার সুযোগ করেন দেন পেসার রাব্বি। বেয়ারস্টোকে ৪৭ রানে বোল্ড করেন তিনি। ফলে স্টোকস ও বেয়ারস্টোর ১২৭ রানের মূল্যবান জুটি ভাঙ্গে। তবে অন্যপ্রান্তে টেস্ট ক্যারিয়ারের চতুর্থ সেঞ্চুরির পথেই এগিয়ে যাচ্ছিলেন স্টোকস। কিন্তু ৮৫ রানেই স্টোকসের ইনিংসের ইতি টেনে দেন সাকিব। টেস্ট ক্যারিয়ারের সপ্তম হাফ-সেঞ্চুরির ১৫১ বলের ইনিংসে ৬টি চার ও ৩টি ছক্কা মারেন স্টোকস। ষষ্ঠ ব্যাটসম্যান হিসেবে স্টোকস যখন বিদায় নেন, তখন দলের স্কোর ১৯৭। লিড ২৪২ রান। এই অবস্থা থেকে লিড বাড়ানোর দায়িত্ব পড়ে ইংল্যান্ডের টেল-এন্ডারদের। সেখানে রশিদকে ফিরিয়ে তৃতীয় দিনেই ইংল্যান্ডকে অলআউট করে দেয়ার পথ তৈরি করেন সাকিব। সেই সাথে টেস্ট ক্যারিয়ারে ১৫তম বারের মত পাঁচ উইকেট শিকারের কীর্তি দেখান সাকিব। রশিদ ৯ রান করেন। 
 
ইংল্যান্ডকে অলআউট করে দেয়ার সম্ভাবনা সাকিব জাগালে সেটি হতে দেননি দলের দুই পেসার ক্রিস ওকস ও স্টুয়ার্ট ব্রড। দিনের শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন দু’জনই। ওকস ১১ ও ব্রড ১০ রানে অপরাজিত আছেন। বাংলাদেশের পক্ষে সাকিব ৭৯ রানে ৫ উইকেট নেন। এছাড়া মিরাজ, রাব্বি ও তাইজুল ১টি করে উইকেট নেন। 
ইত্তেফাক.
 

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top