মৈত্রী ট্রেনে চোরাচালান ঠেকাতে টহলে থাকতে চায় শুল্ক বিভাগ

Nuruzzaman Khan
সেবা ডেস্ক:  বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে চলাচলকারী মৈত্রী ট্রেনের মাধ্যমে ভারতীয় পণ্য শুল্ক ফাঁকি দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশের অভিযোগ উঠেছে। এর ফলে সরকার যেমন বড় অঙ্কের রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, অন্যদিকে তা উভয় দেশের নিরাপত্তার জন্যও হুমকি তৈরি করছে। এ পরিস্থিতিতে মৈত্রী ট্রেনের চোরাচালান ও শুল্ক ফাঁকি রোধে নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে চাচ্ছে শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগ। এর অংশ হিসেবে মৈত্রী ট্রেনের বগির নিরাপত্তা ব্যবস্থা দেখভালের লক্ষ্যে রেলওয়ে পুলিশের পাশাপাশি শুল্ক কর্মকর্তার উপস্থিতিও চায় শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগ। এছাড়া আরো তিন দফা ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর এনবিআর চেয়ারম্যান নজিবুর রহমানকে সম্প্রতি একটি চিঠি পাঠিয়েছে। ইস্যুটি নিয়ে প্রয়োজনে রেল মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর মধ্যে যৌথ সভা করে সিদ্ধান্ত নেয়া যেতে পারে বলেও মত দেওয়া হয়েছে ওই চিঠিতে। 
 
এনবিআরের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, মৈত্রী ট্রেনে লাগেজ পরিবহনের জন্য আলাদা বগিতে সিলগালা অবস্থায় নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করে ট্রেনটি বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করানোর পক্ষে মত দিয়েছে শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগ। সর্বশেষ যে স্টেশনে ট্রেনটি থামবে, সেখানে শুল্ক পরীক্ষা-নিরীক্ষা সম্পন্ন করা এবং সিলগালা করা বগির নিরাপত্তায় রেলওয়ে পুলিশের পাশাপাশি শুল্ক কর্মকর্তার উপস্থিতি নিশ্চিত করা ছাড়াও বাংলাদেশ অভ্যন্তরে ট্রেনের সর্বশেষ স্টেশনে শুল্ক সংক্রান্ত পরীক্ষা করা এবং বিমানবন্দরের ন্যায় ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে যাত্রী নির্বাচন করে তাদের ব্যাগেজ স্ক্যানিং করার প্রস্তাবও দিয়েছে। 
 
এনবিআর সূত্র জানিয়েছে, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে চলাচলকারী মৈত্রী ট্রেনটি গুরুত্বপূর্ণ যোগাযোগের মাধ্যম হয়ে উঠছে। ট্রেনটি সপ্তাহে তিন দিন উভয় দেশের মধ্যে চলাচল করে। কিন্তু এ ট্রেনে চোরচালানোর অভিযোগ উঠে। বিভিন্ন সময়ে এসব চোরাচালানের পণ্য আটকও করা হয়। 
 
শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগ সূত্র জানিয়েছে, চলতি মাসের শুরুর দিকেই শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগের একটি টহল দল ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট স্টেশনে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ (৭৬ ব্যাগেজ) চোরাচালানের পণ্য আটক করে। এর মধ্যে রয়েছে থ্রি-পিস, শাড়ি, পাঞ্জাবি, ইমিটেশন জুয়েলারি। এর আগে গত জানুয়ারিতে দর্শনা স্টেশনে যৌথ অভিযান চালিয়ে শাড়ি, থ্রি-পিস, লেহেঙ্গা, পাঞ্জাবি সেট, কাশ্মিরী শাল, শিসা টোবাকো, সিগারেটসহ প্রায় সোয়া এক কোটি টাকা পণ্য আটক করে। গত বছরের নভেম্বরেও ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট রেলওয়ে স্টেশনে ৩৩ লাখ টাকার চোরাচালানের পণ্য আটক করা হয়। 
 
এসব ঘটনার পর সংশ্লিষ্টদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মইনুল খান বলেন, বর্তমানে মৈত্রী ট্রেনে আসা যাত্রীদের শুল্ক সংক্রান্ত পরীক্ষা করা হয় দর্শনা রেল স্টেশনে। অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এ স্টেশনে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো ও দক্ষ জনবলের অভাব রয়েছে। ট্রেন স্টপেজের সময় তুলনামূলক কম হওয়ায় যথাযথ শুল্ক পরীক্ষা করা সম্ভব হয় না বলে গোয়েন্দা তথ্যে জানতে পেরেছি। এছাড়া দর্শনা থেকে ট্রেনটি ঢাকায় ছেড়ে আসার পথে বিভিন্ন স্থানে চালকের যোগসাজশে ট্রেনের গতি কমিয়ে শুল্ক-কর ফাঁকি দেওয়া পণ্য নামানোর সুযোগ করে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। 
 
তিনি বলেন, এর ফলে একদিকে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অন্যদিকে তা দেশের নিরাপত্তার বিবেচনায়ও হুমকি।-ইত্তেফাক
ট্যাগস

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top