শিব্বির আহমদ রানা, বাঁশখালী: মায়ানমারে মুসলমানদের উপর বর্বরোচিত হত্যার প্রতিবাদে গত শুক্রবার বাদ জুম্মা বাঁশখালী উপজেলার শীলকূপ ইউনিয়ন মুসলিম ঐক্য পরিষদের উদ্যোগে বিশাল বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সহস্রাধিক মুসল্লিদের নিয়ে বিশাল বিক্ষোভ মিছিলটি প্রথমে চাম্বল সিকদার মার্কেট থেকে মনছুরিয়া বাজার এবং শেষে টাইমবাজার চৌমহনীতে সমাবেশ করে।
সমাবেশে মোঃ রিয়াজুল হোসাইনের সঞ্চালনায় এতে বক্তব্য রাখেন শিলকূপ ইউনিয়ন মুসলিম ঐক্য পরিষদের অাহ্বায়ক জনাব হাফেজ মৌলানা আব্দুল করিম মনসুর, সদস্য মৌলানা এরশাদুল্লাহ, হাফেজ মোঃ দিদার সহ স্থানীয় ব্যক্তিবর্গ। প্রতিবাদ সভায় বক্তারা বলেন, যুগ যুগ ধরে মিয়ানমারের আরাকান অঞ্চলে সংখ্যাগরিষ্ঠ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী সীমাহীন লাঞ্চনা, বঞ্চনা, অত্যাচার, নির্যাতন আর নিপীড়নের শিকার হচ্ছে, কখনো বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী মগদের দ্বারা, কখনো প্রতিবেশী রাখাইনদের দ্বারা, আবার কখনো স্বয়ং রাষ্ট্রযন্ত্রের দ্বারা। মিয়ানমার সরকার ও সংখ্যাগরিষ্ঠ বৌদ্ধ ভিক্ষুদের জাতিগত বিদ্বেষ আর চরম বর্ণবাদী বৈষম্যের শিকার হয়ে রোহিঙ্গা মুসলমানরা আজ নিজ দেশে পরবাসী। মায়ানমারে তারা অবাঞ্ছিত, বাংলাদেশে অপাংক্তেয়, আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে অপরিচিত। ‘অহিংসা পরম ধর্মের’ অনুসারী হিংস্র রাখাইন বৌদ্ধ ভিক্ষুরা তাদের রক্তের হোলি খেলায় মেতেছে। এমতাবস্থায় বিশ্ব মোড়লরা, মুসলিম বিশ্বের তথাকথিত মুখপাত্র ওআইসি নেতৃবৃন্দ, সর্বোপরি জাতিসংঘ নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে।
বক্তারা আরো বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে আমাদের প্রতিবাদে সোচ্চার হওয়া উচিত। আমাদের পাশ্ববর্তী রাষ্ট্রে আমাদেরই মত বাংলাভাষী মুসলমানদের নির্বিচারে হত্যা করা হচ্ছে, অবৈধভাবে তাদের সম্পদ লুন্ঠন করা হচ্ছে, শিশু সহ বয়োবৃদ্ধাদেরকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হচ্ছে, প্রকাশ্য দিবালোকে হত্যা করে নদীতে লাশ ফেলে দেওয়া হচ্ছে, তাদের ঘর বাড়ি জ্বালিয়ে পুড়িয়ে তাদের কে নিজভূমি ত্যাগে বাধ্য করা হচ্ছে, রাতের আঁধারেই নয় বরং প্রকাশ্য দিবালোকে প্রশাসনের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় একটি জাতিগোষ্ঠীকে চিরতরে নিশ্চিহ্ন করা হচ্ছে আর আমরা কানে ছিপি এঁটে, মুখে তালা লাগিয়ে নীরবে তা দেখে যাচ্ছি। তারা অবিলম্বে মায়ানমারে গণহত্যা বন্ধের আহবান জানিয়ে বাংলাদেশ সরকারকে এ ব্যাপারে জোরালো ভূমিকা রাখার আহবান জানান।
তারা শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অংসাং সূচিরও নীরব ভূমিকার তীব্র সমালোচনা করেন। তারা বলেন বর্তমান সুচী সরকার বরাবরই মুসলিম বিদ্বেষী। নির্বাচনেও কোনো মুসলমান তার দল থেকে প্রার্থী হতে পারেনি, বিপুল ভোটে জয় লাভ করে রোহিঙ্গাদের কি সমস্যা সমাধান করলেন তিনি? উল্টো চড়াও হলেন তাদের ওপর, তার দৃষ্টিতে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশি। ১৯৯১ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার দেয়া হয় অং সান সুচি ২১ বছর পর ২০১২ সালের জুনে সে পুরস্কার গ্রহণ করেন। মুসলমানদের ওপর চরম অশান্তির জন্য ২০১৬ সালে তার সে পুরস্কার ছিনিয়ে নেয়া উচিত ।

