বাঁশখালী উপকূলে বড় মাওলানা শাহ তমিজ উদ্দীন (রহঃ) মাজার শতবৎসরের নিদর্শন!

Unknown

এস এম খোরশেদ আলম, বাঁশখালী, চট্টগ্রাম: উপমহাদেশের সূফিসাধকদের পদচারনায় বাংলাদেশ ইসলামের উর্বর চারণভূমিতে পরিণত হয়। তাই বাংলাদেশ ৩৬০ আউলিয়ার দেশ বলে অাখ্যায়িত করা হয়। আর সবচেয়ে মাজারের জন্য বিখ্যাত চট্টগ্রাম অঞ্চল। ৩৬০ আউলিয়ার মধ্যে অধিক আউলিয়া, সূফি সাধক ও বুজুর্গের পদচারন ঘটে চট্টগ্রামে। চট্টগ্রামের ১২ আওলিয়ার মাজার বাঁশখালীর কালীপুরে অবস্থিত। ভাসা আওলিয়া, বদর শাহ পীর, শাহ আস্কর আলী সহ অসংখ্য পীর বুজুর্গের উর্বর ভূমি দক্ষিণ চট্টলার বাঁশখালী উপজেলা। তেমনি ৩৬০ আওলিয়ার অন্যতম একজন তিনি যার অবস্থান শুরু থেকে পর্যটন নগরী বাঁশখালী খানখানাবাদ সমুদ্র উপকূলে বেড়ীবাঁধের কিনারা ঘেষে অবস্থিত। মহান এই সাধকের নাম - মুশকিলে কোশা, হাজতে রাওয়া শাহ্ সুফি হযরত মাওলানা শাহ্ তমিজ উদ্দিন (রাহঃ) প্রকাশ বড় মাওলানা। তিনি সকলের কাছে বড় মাওলানা হিসেবে সমধিক পরিচিত।


হযরত বড় মাওলানা শাহ্ ( রাহঃ) যিনি আজ থেকে প্রায়  দীর্ঘ ২৫০ শত বছর আগে সুদূর আরব থেকে ইসলাম প্রচারের উদ্দেশ্য বাংলাদেশের স্বন্দীপ হয়ে চট্রগ্রামের বাঁশখালী থানার অন্তর্গত ৩নং খানখানাবাদ ইউনিয়নের কদম রসুল গ্রামে অবস্থান করেন স্বস্ত্রীক।  যিনি আল্লাহর একজন বিখ্যাত অলী ও জমিদার ছিলেন। তৎকালীন তার জমির পরিমাণ ছিল ৫১২০ কানি যা পরবর্তীতে কিছু সমুদ্র গর্ভে বিলিন হয়ে যায়। বাকি জমির কিছু তার বংশধররা বিক্রি করে ফেলে। হুজুর সবসময় একটা সাদা ঘোড়া নিয়ে চলাফেরা করতেন বলে লোক মুখে জানাযায়। পরবর্তীতে ঘোড়াটি যখন মৃত্যুবরণ করে তাকে যেখানে দাফন করা হয় সে জায়গাটি এখন ঘোড়ার ছড়ি নামে খ্যাত। তিনি যে মাদ্রাসায় পাঠদান করাতেন সেখানে অন্যান্য ছাত্রের পাশাপাশি তার দুজন জীনের ছাত্রও ছিল। তাদের একজনের নাম জানা যায় মাওলানা রশিদুর নুর।  তাঁর বংশ পরাক্রমায় আর একজন তার সুযোগ্য নাতি যিনি আল্লাহর ইবাদত বন্দেগী, ইলম এর কারণে  আল্লাহর অলী হয়ে উঠেন যার নাম - হযরত মাওলানা শাহ্ নরুল হক যিনি ছোট হুজুর নামে খ্যাত যার কবর ওনার (বড় মাওলানার) পাশে অবস্থিত। 

এলাকার মুরুব্বী এবং ভক্তদের কাছে বড় মাওলানার ও ছোট মাওলানার অনেক কেরামতের কথা শুনা যায়। তাঁর অসংখ্য কেরামতের মধ্য অন্যতম হল সামনে উপকূলীয় বঙ্গোপসাগরের সাথে যে বেড়িবাঁধটি আছে তার দু-পাশ বারবার প্রায় উভয় পার্শ্বে এক কিলোমিটার পর্যন্ত জোয়ারের পানিতে ভেঙ্গে গেলেও মহান এই সাধকের মাজারের সামনের জায়গা টা এখনো অক্ষত অবস্থায় আছে। প্রতিদিন এখানে দেশের দূরদুরান্ত থেকে অনেক লোকজন এই মহান আল্লার অলীর কবর জিয়ারতের উদ্দেশ্য আসে এবং প্রতিবছর একটা বড় মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়। যেখানে হাজার হাজার ভক্তকূলের সমাগমে মুখরিত হয় উপকূলের এই অঞ্চল।

চট্টগ্রাম শহর বহদ্দারহাট টার্মিনাল হতে সোজা আনোয়ারা বাঁশখালী সড়কে গুনাগরি খাসমহলে নেমে সিএনজি, অটোরিক্সা, মিনি হাইচে করে যাওয়া যায় খানখানাবাদ সমুদ্রাঞ্চলের নিকটে বড় মাওলানার মাজারে। বাঁশখালী উপকূলীয় ডীগ্রি কলেজের পাশ দিয়ে যে সড়কটি ওনার বাড়ি পর্যন্ত গেছে ঐ সড়কের নাম করণ করা হয় ঐ মহান আল্লার অলীর নামে 'বড় মাওলানা সড়ক'। মাজারের পাশে বিশাল সমুদ্র সৈকত, যেখানে দর্শনার্থীদের মনকাড়া সমুদ্রের দৃশ্য। তবে গুনাগরি প্রধান সড়ক থেকে খানখানাবাদ সড়কটি সরু এবং সংকীর্ণ হওয়ায় বড় বোন গাড়ী প্রবেশ করতে পারেনা। তাই যথাযত কতৃপক্ষের সু-দৃষ্টি কামনা করছি।

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top