সেবা নিউজ ডেস্ক: আগামী ৩০ ডিসেম্বরের জাতীয় নির্বাচনই বিএনপির জন্য 'ইয়াওমুল বরাত' (ভাগ্য নির্ধারণী দিবস)! বিএনপি দল হিসেবে বাংলাদেশের অস্তিত্বে থাকবে কিনা, কিংবা বিএনপি টিকে থাকলেও খালেদা-তারেকের নেতৃত্ব থাকবে কিনা- তা এখন মাঠের রাজনীতিতে তৃণমুল বিএনপির সংশয়, সর্বোপরি সর্বোচ্চ ঝুকি অপেক্ষা করছে দলটির জন্য৷ যেখানে দলের চেয়ারপার্সন বেগম জিয়ার জেলে অবস্থান, সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান ফেরারী হয়ে লন্ডনে, মাঠের রাজনীতিতে পদে পদে ব্যর্থতা, আন্দোলনের প্রতিটি ইস্যুই হাতছাড়া আর গোলক ধাঁধায় সারাদেশের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা- সেখানে দিনটিকে আমি বিএনপির ভবিষ্যৎ ভাগ্য নির্ধারণের দিন হিসেবেই দেখছি৷ আর এ ভাগ্য নির্ধারণে পরিকল্পনা ও দিক নির্দেশনার জন্য বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ‘লাইভ’
বিবৃতি কতোটা কাজে দেবে- তা এখন দেখার অপেক্ষা মাত্র।
আওয়ামী লীগ বারবার বলে আসছে- ‘বিএনপি এখন প্রেসব্রিফিং কিংবা ভিডিওবার্তা নির্ভর দল।’ এর যুক্তিও আছে। কিছুদিন আগে তারেক রহমানের একটি ভিডিও বার্তা দেশব্যাপি ভাইরাল হয়েছিল। দলের নেতাকর্মীদের চাঙা রাখতে ভিডিওবার্তার যে উদ্দেশ্য ছিলো- তা কোনো প্রভাবই ফেলতে পারেনি। যদিও বিএনপি বারবার বলে আসছে যে, পুলিশী রাষ্ট্র ব্যবস্থা আর স্বৈরাচারী মানসিকতার মাধ্যমে সরকার বিরোধী পক্ষের স্বাভাবিক রাজনৈতিক অধিকার খর্ব করেছে- তবে বিএনপির রাজনৈতিক অদূরদর্শীতা আর আন্দোলনের অক্ষমতাই ছিলো বড়ো প্রশ্ন, তা রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অস্বীকার করার উপায় নেই। যেখানে বিএনপির রাজনীতি এখন ’লাইফসাপোর্ট’-এ, খালেদা-তারেকের ‘পলিটিক্যাল লাইফ’ অস্তিত্বের মুখে. সেখানে শুধুমাত্র ‘লাইভ’ বিবৃতি কতোটা আলোর মুখ দেখাবে, তা স্বয়ং বিএনপি বোদ্ধারাই সন্দিহান।
২০১৪-এর ৫ জানুয়ারির নির্বাচন বর্জন ছিলো বিএনপির জন্য সবচেয়ে বড়ো ভুল। আর সেই নির্বাচন প্রতিরোধ করার পরিকল্পনা ছিলো আরো বড়ো রাজনৈতিক ব্যর্থতা। আর সেই ব্যর্থতা উত্তরণে গতো ৫টি বছর বিভিন্ন আন্দোলন কর্মসূচি, দেশি-বিদেশী লবিং, কুটনৈতিক প্রচেষ্টা, আইনগত লড়াইসহ সার্বিক পরিকল্পনার কোনোটাই কাজে দেয়নি। সর্বশেষ দল ও দলের নীতি নির্ধারক-নেতাকর্মীদের ৫ বছরের হিসাব-নিকাশ চুকিয়ে নিতে এবারের আসন্ন সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সর্বশেষ ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত দলটি নির্বাচনের মাঠে থাকবে, নাকি কিছু দাবি-দাওয়ার হিসাব নিয়ে
সরকারের সাথে বোঝাপড়ার অযুহাতে সরে দাঁড়াবে- তা বড়ো প্রশ্ন।
একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় দেশের প্রচলিত অাইনের রায়ে তারেক রহমান সাজাপ্রাপ্ত। পুলিশের ভাষায় তিনি পলাতক। কোনো পলাতক তথা ফেরারী আসামি অজ্ঞাত স্থান থেকে ‘ভিডিও’ বার্তা বা অনলাইন ‘লাইভ’-এ তাঁর সমর্থকদের দিক নির্দেশনা দেবে, রাষ্ট্র বা আইন নিশ্চয়ই তা ভালো চোখে নেবে না। বিষয়টি কতোটুকু আইনগত বৈধতা রয়েছে- তা দেশবাসির সামনে রাষ্ট্র খোলাসা জানিয়ে দিতেও সময় নেবে না। নির্বাচন সামনে রেখে তারেক রহমানের এ ‘লাইভ’ই দলকে
সামগ্রিক ভবিষ্যৎ পুরোপুরি অন্ধকারে ঠেঁলে না দেয়!
ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ‘লিজ’ নিয়েছে বিএনপিকে। আর নেতৃত্বশূন্য বিএনপি ড. কামালকে দিয়েছে দলের ‘পাওয়ার অফ এটর্ণি! ‘ভোটবিহীন’ কিছু ‘জোট নেতা’ শুধুমাত্র বিএনপির ভোটে এমপি-মন্ত্রী এমনকি ভবিষ্যৎ প্রধানমন্ত্রী-রাষ্ট্রপতি হওয়ার স্বপ্নে বিভোর। ক্ষমতার ভাগাভাগি
তাদের কোথায় নিয়ে দাঁড় করাবে কিংবা সত্যিকারেই তাঁরা নির্বাচনে থাকবে কিনা- তা এখনো জনগনের সামনে বিশ্বাসযোগ্য করে দেখাতে পারেনি।
আলোচনা-সমালোচনা যাই হোক আসন্ন নির্বাচন হোক অংশগ্রহণমূলক, গণতন্ত্র-স্বাধীনতার সুরক্ষা ও উন্নয়নের গ্যারান্টি দাতারাই আসুক ক্ষমতার মসনদে; এটাই দেশবাসির প্রত্যাশা।
⇘সংবাদদাতা: সেবা ডেস্ক
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।