
শাহজাদপুর প্রতিনিধি: সরিষা আবাদে কৃষক আগ্রহী হওয়ায় শাহজাদপুরে ক্রমেই সরষের আবাদ বৃদ্ধি পাচ্ছে । সিরাজগঞ্জ জেলার মধ্যে শাহজাদপুর উপজেলা সরষে চাষে অন্যতম স্থান করে নিয়েছে। ফলে এখানে মৌচাষিদের ব্যস্ততা অনেক বেড়েছে । এ ফসলটির ভাল ফলন হওয়ায় স্থানীয় কৃষকরা যেমন আগ্রহী হচ্ছে , পাশাপাশি সরষের ফুলের মধু আহরণেও ধুম পরে গেছে । এবার উপজেলার ১৩টি ইউনিয়ন ও একটি পৌর এলাকায় ১৩ হাজার হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের সরিষার আবাদ হয়েছে । যা এখানকার আবাদী জমির অর্ধেক এর বেশী ।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের একাধিক সূত্রে জানা গেছে এবার আবহাওয়া সরিষা চাষে অনুকুল হওয়ায় ভাল ফলন হবে বলে আশা করা হচ্ছে । উপ - সহকারি কৃষি কর্মকর্তা আব্দুস সোবাহান জানান এখানকার জমি দো-আঁশ মাটি । এ মাটি সরিষা চাষের জন্য খুবই উপযোগী । কৃষি বিভাগ জানায় দুই পদ্ধতি স্থানীয় কৃষক সরিষার আবদ করে থাকেন । কাদা মাটিতে বীজ ছিটিয়ে অন্যটি জমি হালকা চাষ করে । যাদের জমি থেকে দ্রুত বন্যার পানি নেমে গেছে সে সকল জমিতে বীজ ছিটিয়ে সষিার চাষ করা হয়েছে। অনেক জমি থেকে বন্যার পানি নেমে যেতে বিলম্ব হওয়ায় সে সকল জমি হালকা চাষ করে বীজ ছিটিয়ে সরিষার চাষ করা হয়েছে। ওই কৃষি কর্মকর্তা আরো জানান অক্টেবর মধ্যে ভাগ থেকে শুরু হয়ে নবেম্বর মাসের ১৫ হেকে ২০ তারিখ পর্যন্ত চলে সরিষার চাষ । জানা গেছে বারি - ১৪ জাতের সরিষার আবাদ হয়েছে ৭ হাজার ৭২০ হেক্টর , বারি Ñ ১৫ সরিষার আবাদ হয়েছে ২শত ৫০ হেক্টর ও বারি - ৯ জাতের সরিষার আবাদ হয়েছে ১শত হেক্টর । এসএস – ৭৫ জাতের সরিষার আবাদ হয়েছে ২ হাজার ৪৬০ হেক্টর । টরি - ৭ জাতের সরিষার আবাদ হয়েছে ২ হাজার ৪৬৫ হেক্টর জমিতে । এ ছাড়াও বিনা - ৩ জাতের সরিষার আবাদ হয়েছে ৫ হেক্টর ।সূত্র জানায় কৃষকদের সরিষা চাষে আরো বেশী আগ্রহী করতে কৃষি বিভাগ প্রায় শতাধিক প্রর্দশনী প্লট হাইব্রিড সরিষার চাষ করা হয় ।
কৃষকরা জানান বাজারে টরি জাতের সরিষার চাহিদা বেশী থাকলেও বারি জাতের সরিষার ফলন ও সরিষার দানা থেকে তেল বেশী পাওয়া যায় বলে কৃষকেরা এই জাতটি বেশী আবাদ করে থাকেন। এছাড়াও জমিতে হালকা চাষ ও সামান্য সার প্রয়োগ করে বারি জাতের সরিষা থেকে অধিক ফলন পাওয়ায় কৃষকদের মাঝে এ জাতের সরিষা চাষের আগ্রহ বাড়ছে । উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ মনজু আলম সরকার জানান , বর্ষার পানি নেমে যাওয়ার পর কৃষকদের মাঝে সরষে চাষের ধুম পরে যায় ।
এজন্য কৃিষ বিভাগ কৃষকদের প্রণোদনা দিয়ে থাকে । এবার জন প্রান্তিক কৃষকের মাঝে ২ হাজার প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র চাষিদের প্রণোদনার মাধ্যদে সরিষা বীজ ও সার প্রদান করা হয়েছে । এতে কৃষকরা যথা সময় যেমন জমিতে সরষে চাষের জন্য জমিতে বীজ বপন করতে পেরেছে । কৃষি বিভাগ জানায় এবার আসা করা হচ্ছে প্রায় ১৬ হাজার মেট্রিক টন সরিষা পাওয়া যাবে । যার বর্তমান বাজার মল্যে প্রায় ৩২ কোটি টাকা ।
অপর দিকে শাহজাদপুরে দিগন্ত জুড়ে সরষে খেতের হলদে ফুলের মৌ মৌ গন্ধে যখন ভবপুর তখন এই ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করতে মৌ চাষিরা ব্যস্ত সময় পার করছেন । এবারও বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা মৌ চাষিরা জমির পাশে তাঁবু টানিয়ে বাক্্ের বিশেষ পদ্ধতিতে মধূ আহরণ করছেন ।
মৌচাষিদের একাধি সূত্রে জানা গেছে , গত ১০ জানুয়ারী পযন্ত তারা প্রায় ৭ হজার কেজি মধু সংগ্রহের রিপোট উপজেলা কৃষি বিভাগে জমা দিয়েছে ।
উপজেলা কৃষি বিভাগ জানান সংগৃত মধুর পাইকারি বাজার মূল্য প্রায় ১৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা । এদিকে কৃষকদের সুত্রে আবো জানা গেছে , গত কয়েক বছর ধরেই বন্যার পানি জমি থেকে দ্রুত নেমে যাওয়ায় এসব এলাকার মাঠজুড়ে সরিষার আবাদ বৃদ্ধি পাওয়ায় এখানে মৌচাষীদের সমাগম অনেক বেড়ে গেছে। এখন সরিষা গাছে হলুদ ফুলের সমারোহ ।
মৌমাছি এসব সরিষার ফল থেকে মধু আহরণ করছে । সেই মধূ বাক্্ের বিশেষ পদ্ধতি আহরণ করছে । মৌ চাষী সাইদুর রহমান জানান , প্রায় শতাধিক বাক্্র নিয়ে তার মধু সংগ্রহের কর্মযগ চলছে । তিনি জানান সপ্তাহের একটি নির্দ্দিষ্ট সময় বাক্্র থেকে মধু সংগ্রহ করা হয় ।
তিনি জানান দেশের অনেক নামীদামী কোম্পানী তাদের কাছ থেকে মধূ কিনে নিয়ে যাচ্ছে। মধুচাষি সাইদুর রহমান অভিযোগ করেন বড় বড় কোম্পানী একজোট হওয়ায় তারা সংগৃত মধুর ন্যায্য দাম পাচ্ছেন না ।
⇘সংবাদদাতা: শাহজাদপুর প্রতিনিধি
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।