
হাসান বাপ্পি, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি ॥ ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গীতে মাত্র ১৫ দিনের মধ্যে বাবা-মা ও দু’সন্তানসহ একই পরিবারের পাঁচজনের মৃত্যুতে শোক আর আতংক নিয়ে বসবাস করছে কয়েক হাজার মানুষ ।
উপজেলার ভান্ডারদহ নয়াবাড়ি গ্রামের এ ঘটনার পর আরো ৫ জন অসুস্থ হওয়ার কারনে স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। আক্রান্ত নতুন রোগীরা হলেন ‘কোহিনুর ও তার কন্যা সন্তান ও নিহত মেহেদীর মামা রবিউল, শহিদুল ইসলাম নামে স্থানীয় এক সাবেক ইউপি সদস্য ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এ্যাম্বুলেন্স ড্রাইভার মোতালেব । তাদেরকে রংপুর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
অজানা এ রোগে নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ার পর বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঘটনাস্থলের ১ কিলোমিটারের মধ্যে সাধারন মানুষের চলাচলের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি এবং ওই এলাকার সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষনা করে এলাকায় মাইকিং করা হয়েছে । এ ঘোষনার পর থেকে বাড়ী ছেড়ে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিচ্ছেন ওই গ্রামের লোকজন ।
ঠাকুরগাঁও ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা: সাহাজাহান নেওয়াজ জানান, এটি এক ধরনের ভাইরাস যা ব্রেইনে আক্রমণ করে এবং এই রোগে আক্রান্ত হলে মানুষ দ্রুত সময়ের মধ্যে মারা যায় বলে আমরা প্রাথমিক ভাবে ধারনা করছি।
তিনি আরোর জানান,ঢাকা থেকে রোগ তত্ব বিভাগের ডা: তানজিলা নওরিন, ডা: গাজী শাহ আলম, ডা: দেবাশীষ কুমার সাহা, শাহানাজ পারভিন ও ইসমাঈল হোসেনের ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত টিম ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গীর ওই এলাকায় এসে তদন্ত করে রোগ নির্ণয় করবেন । তবে এর আগে তারা রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়না তদন্ত করে মৃত মেহেদীর লাশের নমুনা সংগ্রহ করবে। সেখান থেকে নিহত ৫ জনের বাড়ী সহ নতুন করে অসুস্থ হওয়া রোগীদেরও পর্যবেক্ষণ করবেন।
ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মাসুদুর রহমান মাসুদ জানান, অবস্থা গুরুতর বিবেচনা করে ভান্ডারদহ নয়াবাড়ি গ্রামের অজ্ঞাত রোগে আক্রান্ত বাড়ির এক কিলোমিটার পর্যন্ত এলাকায় মানুষের চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে ও ঐ এলাকার একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও একটি উচ্চ বিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। তাছাড়া সকলকে মাস্ক পরিধান করে চলাচল করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মাইকযোগে নির্দেশনা প্রচার করা হচ্ছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে এলাকায় প্রাথমিকভাবে ১৫০টি মাস্ক সরবরাহ করা হয়েছে।
ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক ড. কে এম কামরুজ্জামান সেলিম বলেন, বিষয়টি প্রশাসন অতি গুরুত্বের সাথে দেখছে। আমরা আশার করছি ঢামেক থেকে মেডিকেল টিমটি এলাকায় আসলেই রোগটি সনাক্তসহ এর প্রতিকার জানা সম্ভব হবে।
উল্লেখ্য, গত ৯ ফেব্রুয়ারি নয়াবাড়ি গ্রামের ফজর আলীর ছেলে তাহের আলী (৫৫) রহস্যজনকভাবে মারা যায়। এ ঘটনার ১১ দিন পর ২০ ফেব্রুয়ারি একইভাবে মারা যান জামাতা হাবিবুর রহমান (৩৫) এবং পরের দিন মারা যান তাহের আলীর স্ত্রী হোসনে আরা (৪৫)। এর দু’দিন পর ২৪ ফেব্রুয়ারি তার দুই ছেলে ইউসুফ আলী (৩০) ও মেহেদী হাসান (২৪) মারা যান।
⇘সংবাদদাতা: হাসান বাপ্পি

খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।