
শফিকুল ইসলাম, রৌমারী প্রতিনিধি: আ’লীগের মনোনীত প্রার্থী শেখ আব্দুল্লাহ বলেছেন ‘নির্বাচিত হলে রৌমারীকে মডেল উপজেলা করব। একাত্তরের মুক্তাঞ্চল এই মাটি থেকেই ধ্বনিত হবে উন্নয়নের জয়গান।’ এবার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আ’লীগ মনোনীত হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন তিনি।
‘শেখ আব্দুল্লাহ কেমন মানুষ’ এমন এক প্রশ্নের জবাবে ফুলুয়ার চরের সত্তর বছরের এক ভোটার যা বললেন তার অর্থ দাড়ায়- ‘ভালো মানুষের সংজ্ঞা দেয়া মুশকিল। কাকে ভালো মানুষ বলা যাবে? এ প্রশ্নের জবাব দেয়াও দূরহ কাজ। একই মানুষের মধ্যে ভালো-মন্দ দু’টো দিকই আছে। অর্থাৎ, ভালো-মন্দ মিলেই মানুষ। তাহলে কে ভালো, আর কে মন্দ কিভাবে নির্ধারণ করব-এ বিষয়টিও বড্ড জটিল। তারপরও এমন কিছু মানুষ আছেন যাদেরকে ভালো মানুষ বলা যায়, আবার কাউকে বলা যায় মন্দ।
আবার যে মানুষটি ভালো মানুষ হিসেবে বিবেচ্য সেই মানুষটিই কখনোবা মন্দ হয়ে যাচ্ছে। কেউ কেউ হয়ত বলবেন, মানুষের ভালোর পাল্লা ভারী হলে ভালো মানুষ আর মন্দের পাল্লা ভারী হলেই মন্দ মানুষ। ভালো মানুষ মন্দ হয়ে যেতে পারে আবার মন্দ মানুষ ভালো হয়ে যেতে পারে। একজন মানুষ অন্য মানুষকে ঠকায় না, ক্ষতি করে না-এর চেয়ে মানুষের বড় গুণ আর হয় না। আমার মতে, শেখ আব্দুল্লাহ কাউকে ঠকান নি। তিনি শুধু নিজেই ঠকে গেছেন। এবার তাকে যখন আ’লীগ থেকে মনোনীত করার খবর শুনে ভাল লাগছে। আমার মনে হয় রৌমারী আ’লীগ একটি সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
১৯৬১ সালের ২৬ জানুয়ারি রৌমারী উপজেলার ভিটাবাড়ি গ্রামে এক মুসলিম সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্ম গ্রহন করেন। তার পিতার নাম মরহুম রিয়াজুল হক ও মাতার নাম মোছা. আবিয়া খাতুন। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে রৌমারী সিজি জামান উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে মুক্তিযোদ্ধাদের ক্যাম্পে খাদ্য সরবরাহের নেতৃত্বে ছিলেন। সেই সাথে শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণ প্রদান করেন। সে সময়ে প্রখ্যাত সাংবাদিক মার্কটালি, এম মুনছুর আলী, এইচ এম কামরুজ্জামান ও এমএজি ওসমানীর সাথে সাক্ষাত করে শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণ সম্পর্কিত আলোচনা করেন। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ করতে গিয়ে ৪ বার জেলে যেতে হয়েছে তাকে। সে সময় তুখোর ছাত্র নেতা হিসেবে তার পরিচয় ঘটে। এ কারণে আ’লীগ মনোনীত প্রেসিডেন্ট পদ প্রার্থী ড. কামাল হোসেনের নির্বাচনের ৩ দিন আগে তাকে কারা অভ্যন্তরীণ করা হয়।
তার রাজনীতি শুরু হয় ছাত্র জীবন থেকেই। ১৯৭৬ সালে রৌমারী সিজি জামান উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ নির্বাচনে ছাত্রলীগে মনোনীত সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। এরশাদের স্বৈর শাসনের প্রথম দিকে এক বছরেরও অধিক সময় ধরে তাকে আত্মগোপনে থাকতে হয়। পরে ৯০ সালের আন্দোলনে সফল নেতৃত্ব দেন। ১৯৯২ থেকে ৯৫ সাল পর্যন্ত বিএনপি হটাও আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন। ওই বছর উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচন করেন। কিন্তু মাত্র এক ভোটের ব্যবধানে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেন। এছাড়াও ১৯৯১ থেকে এ পর্যন্ত আ’লীগ মনোনীত প্রার্থীর পক্ষে নিরলস কাজ করে গেছেন। রাজনীতির পাশাপাশি সামাজিক সাংস্কৃতিক, ক্রিড়া ও শ্রমিক অধিকার আন্দোলনেও রয়েছে তার স্বতঃস্ফুর্ত উপস্থিতি। ১৯৯০ সালে বণিক সমিতির সভাপতি, ২০১৬ সালে শহীদ স্মৃতি ক্লাব ও পাঠাগারের সভাপতি, রৌমারী ইমারত শ্রমিক ইউনিয় ও রৌমারী শ্রমিক ঐক্যজোটের সভাপতি, রৌমারী উপজেলা ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি, স্থানীয় ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি, তরুণ নাট্যগোষ্ঠীর উপদেষ্টা, রৌমারী ট্রাক ও মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের উপদেষ্টাসহ স্থানীয় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দীর্ঘ মেয়াদে সহ সভাপতি ও সদস্য পদে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। বর্তমানে বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি হিসেবে আছেন। উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নের প্রতিটি ওয়ার্ডে গিয়ে দলীয় নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের সাথে মতবিনিময়সহ গণসংযোগ করে চলেছেন তিনি। উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী শেখ আব্দুল্লাহ্ বলেন, রাজনৈতিক জীবনে মানুষের ভালবাসা অর্জন করতে পেরেছি। বাকি জীবনটুকু মানুষের পাশে থেকে নিঃস্বার্থ ভাবে কাজ করে যেতে চাই। মাননীয় প্রতিমন্ত্রী জননেতা জাকির হোসেন এমপি মহোদয়ের মাধ্যমে, জননেত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নের অগ্রযাত্রাকে তরান্বিত করতে কাজ করে যাব। এ জন্য সকলের দোয়া ও সহযোগীতা চাই।
⇘সংবাদদাতা: শফিকুল ইসলাম
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।